এটা টুকুন এর গল্প। কয়দিন পরই টুকুন আট বছরে পা দিবে। টুকুনের বাবা রশিদ সাহেব ব্যাঙ্কে চাকরী করেন। তার ফাঁকে তিনি লেখালেখিও করেন। অনেকদিন থেকে তিনি একটা উপন্যাস শেষ করতে চাচ্ছেন। উপন্যাসের নাম "একি কান্ড"। টুকুনের মা 'মুনা' গৃহিণী। টুকুনের একটা ছোট বোন আছে, নাম মৃদুলা। অসম্ভব শান্তশিষ্ট মেয়ে। কিছুদিন যাবত টুকুন একটা কাকের সাথে কথা বলে। নানান রকম কথা। এবং এ কথা ও সবাইকে বলে বেড়ায়। যে কারনে ওর বাবা মা ওর উপর কিছুটা বিরক্ত। এই বয়সে যদি এরকম বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলতে থাকে তাহলে বড় হয়ে কি করবে? টুকুন অবশ্য কখনও স্বীকার করেনা যে সে বানিয়ে বলছে। টুকুনের বাবা ওকে বলে দিয়েছেন কাক নিয়ে যেনো আর কখনও কোনও কথা না বলে। টুকুনের সবচেয়ে পছন্দের মানুষ ওর ছোটফুপি। সে এবার এম.এস.সি পরীক্ষা দিবে।
হুমায়ূন আহমেদ বিংশ শতাব্দীর বাঙালি জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক গণ্য করা হয়। হুমায়ূন আহমেদ একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার। বলা হয় আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের তিনি পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও হুমায়ূন আহমেদ সমাদৃত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতাধিক। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। সত্তর দশকের শেষভাগে থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি তিনি ছিলেন বাংলা গল্প-উপন্যাসের অপ্রতিদ্বন্দ্বী কারিগর। এই কালপর্বে তাঁর গল্প-উপন্যাসের জনপ্রিয়তা ছিল তুলনারহিত। হুমায়ূন আহমেদ এর সৃষ্ট হিমু ও মিসির আলি চরিত্রগুলি বাংলাদেশের যুবকশ্রেণীকে গভীরভাবে উদ্বেলিত করেছে। হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত চলচ্চিত্রসমূহ পেয়েছে অসামান্য দর্শকপ্রিয়তা। তবে তাঁর টেলিভিশন নাটকগুলি ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়। সংখ্যায় বেশী না হলেও তাঁর রচিত গানগুলোও সবিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাঁর অন্যতম উপন্যাস হলো নন্দিত নরকে, মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, মাতাল হাওয়া ইত্যাদি। তাঁর নির্মিত কয়েকটি চলচ্চিত্র হলো দুই দুয়ারী, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেঁটুপুত্র কমলা ইত্যাদি।