বাংলা ভাষায় ভেষজ উদ্ভিদ সম্পর্কিত বই আছে কিস্তু উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশের, বিশেষ করে কাঠের রাসায়নিক ণ্ডণাবলী ও উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশের রাসায়নিক বৈশ্যিষ্ট্যর উপর বাংলা ভাষায় তেমন কোনো বই নেই । এই বইটিতে উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য ও রাসায়নিক উপাদানের ফলিত বিষয়গুলো উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে । উদ্ভিদের ভেষজ গুণাবলী সম্পর্কে কিছুটা বর্ণনা করা হয়েছে ।
উদ্ভিদবিজ্ঞান, কাঠবিজ্ঞান, বনবিজ্ঞান, প্রযুক্তিবিদ্যা, ফলিত রসায়ন, প্রাণরসায়ন, ভেষজবিজ্ঞান, বৈব রসায়ন, ফার্মাসিউটিক্যাল রসায়ন, উদ্ভিদ প্রজননবিদ্যা, উদ্ভিদ শ্রেণীবিন্যাসতত্ত্ব, অর্থনৈতিক উদ্ভিদবিজ্ঞান এমনকি কৃষিবিজ্ঞানে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদেরও এই বইটির বিষয়বস্তু সর্ম্পকে সম্যক জ্ঞান আহরিত না হলে তাদের শিক্ষা অসম্পূর্ণ থেকে যেতে পারে।
নেবুলা তার প্রম্যাণে এই লুকােচুরির কাজটি করেছে ভাষার মারপ্যাচঁ ( !) দিয়ে, যদিও সেটা যে খুব ভালোভাবে করা যায়নি তা খুবই স্পষ্ট । যদি আপনার মনে হয়ে থাকে গণিতে ভাষা ব্যাকরণের জায়গা নেই, তবে আপনি একটা বড় ভুল করবেন, গণিতে ভাষার ব্যবহারের একটা বড় প্রয়োগ আছে, যদিও সেটা এই বইয়ের আলােচ্যের বাইরে ৷ নেবুলার তত্ত্ব ভ্রান্তির একটা দুর্বল উদাহরণ ৷ কিন্তু এমন এমন সব গাণিতিক ভ্রান্তি গঠন করা সম্ভব যাতে ভুল খুঁজে বেড়াতে গলদঘর্ম হয়ে যেতে হতে পারে । তবে এ কথা সত্যি, গণিতের বিষয়ে মৌলিক ধারণাগুলো জানা থাকলে এসব ভ্রান্তি থেকে পার পাওয়াটাও বেশ সহজ । কারণ ভ্রান্তি গুলাে তৈরি করা হয় আমাদের এই জানার ঘাটতিটাকে ব্যবহার করেই । তাই এটাও বলা যায়, গণিত শিক্ষার্থীদের গণিতের মৌলিক ধারণাগুলো সম্পর্কে জানানোর খুব সুজনশীল পদ্ধতিগুলোর একটা হল “ভ্রান্তি”।
বিজ্ঞান বললেই আমাদের কারও কারও মনে হয়তো একটা ভয়ের জায়গা তৈরি হয়ে যায় যে, "বিজ্ঞানের বই মানেই প্রচুর সমীকরণ আর গাণিতিক বিশ্লেষণের সংমিশ্রণ থাকবে ।আমি এগুলো গণিত-টণিত একটু কম বুঝি ।এ বিজ্ঞান আমার জন্য নয় ।" তাদেরকে বলছি মূলত আপনার জন্যই মনে হয় প্রখ্যাত লেখক জাফর ইকবাল তার এই বইটিতে কোন গণিত ব্যবহার করেন নি ।বরং তিনি অত্যন্ত সহজ ভাষায় অথচ বিজ্ঞানের প্রকৃত বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ।তবে বইটি পড়ে আপনি বিজ্ঞানের অনেক বিষয়েরই মৌলিক ধারণাটুকু পাবেন ।যা বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে নয় ,বরং প্রতিটি মানুষেরই জানা একান্ত জরুরি বলে মনে করি । আপনি কি খেয়াল করেছেন আমি আগে একটা মিথ্যা কথা বলেছি ?আমি বলেছিলাম যে, এ বইয়ে কোন গণিত নেই ।কিন্তু একটি পরিচ্ছেদে কিন্তু আপনার সাথে গণিতের দেখা মিলবে ,বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানের ভাষা-গণিত নামক পরিচ্ছদে ।তবে আপনার হতাস হওয়ার কারণ নেই এটা কোন আহামরি গণিত নয় ।
সূচিপত্র
* রসায়নের সাধারণ জ্ঞান
* রসায়নের প্রাথমিক জ্ঞান
* পরমাণুর গঠন
* পর্যায় সারণী
* রাসায়নিক গণনা
* গ্যাসীয় অবস্থা
* রাসায়নিক ক্রিয়া ও সমীকরণ
* রাসায়নিক বন্ধন
* দ্রবণ ও মোলারিটি
* জারণ-বিজারণ
* অম্ল-ক্ষারক সাম্যাবস্থা
* তড়িৎ রসায়ন
* রাসায়নিক গতিবিদ্যা
* নিষ্ক্রিয় গ্যাস
* গ্রুপ-IA ও গ্রুপ-IIA মৌলসমূহের রসায়ন
* গ্রুপ-IIIA ও গ্রুপ-IVA মৌলসমূহের রসায়ন
* গ্রুপ-V ও গ্রুপ-VI মৌলসমূহ
* গ্রুপ-VII মৌলসমূহ
* ধাতু ও d-ব্লক মৌলসমূহ
* জৈব রসায়নের সূচনা
* হাইড্রোকার্বন
* অ্যালকোহল, ফেলন ও ইথারসমূহ
* অ্যালডিহাইট ও কিটোন
* জৈব এসিড ও এদের জাতকসমূহ
* অ্যামিনসমূহ
* বায়োঅনুসমূহ
* 40th International Chemistry Olympiad, Theoretical
বিজ্ঞান বললেই আমাদের কারও কারও মনে হয়তো একটা ভয়ের জায়গা তৈরি হয়ে যায় যে, "বিজ্ঞানের বই মানেই প্রচুর সমীকরণ আর গাণিতিক বিশ্লেষণের সংমিশ্রণ থাকবে ।আমি এগুলো গণিত-টণিত একটু কম বুঝি ।এ বিজ্ঞান আমার জন্য নয় ।" তাদেরকে বলছি মূলত আপনার জন্যই মনে হয় প্রখ্যাত লেখক জাফর ইকবাল তার এই বইটিতে কোন গণিত ব্যবহার করেন নি ।বরং তিনি অত্যন্ত সহজ ভাষায় অথচ বিজ্ঞানের প্রকৃত বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ।তবে বইটি পড়ে আপনি বিজ্ঞানের অনেক বিষয়েরই মৌলিক ধারণাটুকু পাবেন ।যা বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে নয় ,বরং প্রতিটি মানুষেরই জানা একান্ত জরুরি বলে মনে করি । আপনি কি খেয়াল করেছেন আমি আগে একটা মিথ্যা কথা বলেছি ?আমি বলেছিলাম যে, এ বইয়ে কোন গণিত নেই ।কিন্তু একটি পরিচ্ছেদে কিন্তু আপনার সাথে গণিতের দেখা মিলবে ,বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানের ভাষা-গণিত নামক পরিচ্ছদে ।তবে আপনার হতাস হওয়ার কারণ নেই এটা কোন আহামরি গণিত নয় ।আর এ পরিচ্ছদেই জাফর স্যার গণিতটা বিজ্ঞানে কিভাবে কাজে লাগে সেটা নিয়ে আলোচনা করেছেন ।
বিশ্ব সম্পর্কে প্রায় কিছুমাত্রই না বুঝে আমরা দৈনন্দিন জীবন যাপন করি। যে যন্ত্র থেকে সূর্যালোক উৎপন্ন হচ্ছে এবং জীবন সম্ভব হচ্ছে, যে মহাকর্ষ আমাদের পৃথিবীর সঙ্গে আটকে রাখে কিম্বা যে পরমাণু দিয়ে আমরা তৈরি এবং যার স্থিরত্বের উপরে আমরা মূলতভাবে নির্ভরশীল, সে সম্পর্কে আমরা কিছুই ভাবি না।
India has 92418 MW of coal-based and 17 706 MW of natural gas-based thermal power generation capacity as on February 2011. The unit size of these plants ranges from 10 MW to 660 MW.
আমি যখন তোমাদের মত ছোট ছিলাম তখন আমার খুব বিজ্ঞানের পরীক্ষা করার সখ ছিল। লাইব্রেরী থেকে মোটা মোটা বই এনে দিন রাত লেগে থাকতাম। দুদিন পরে পরে ঘরের কোনায় টেবিলের নীচে ল্যবরেটরী দাড়া হত, ভয়ংকর সব এক্সপেরিমেন্ট হত সেখানে। অনেক এক্সপেরিমেন্ট আবার করা যেতো না কারণ বেশীরভাগ বই হত বিদেশী আর সেখানে এমন সব জিনিষের কথা লেখা থাকত যেগুলি আমার মত একজ ছোট ছেলের পক্ষে জোগাড় করা ছিল অসম্ভব। একটা নোট বইয়ে আমি সবগুলি টুকে রাখতাম যে বড় হয়ে সেসবগুলি করব। মনে মনে একটু ভয় ছিল যে বড় হওয়ার পর বুঝি গম্ভীর হয়ে শুধু বড় বড় জিনিষপত্র করতে হবে, এই সব ছোট খাট ছেলেমানুষী এক্সপেরিমেন্ট করার আর সব বা সময় থাকবে না। তারপর কতদিন কেটে গেছে, সেই নোটবুক কোথায় হারিয়ে গেছে, কিন্তু সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার হল যে বড় হয়েও আমার সেই সখ কমে নি, সময়েরও অভাব হয় না, এখনো আমি ঘন্টার পর ঘন্টা এসব ব্যাপারে কাটিয়ে দিই! এই সেদিন নিউ জাসীর বাচ্চাদের একটা স্কুল আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিল এরকম কিছু এক্সপেরিমেন্ট করে দেখাতে। এক্সপেরিমেন্ট গুলি দেখে স্কুলে সাত আট বছরের বাচ্চাদের সে কি আনন্দ না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না! একটি বাচ্চা আমাকে চিঠি লিখে জিজ্ঞেস করল, আমি কি কোন এক ছুটির দিনে এসে ভয়ংকর একটা বিস্ফোরণ ঘুটয়ে পুরো স্কুলটা উড়িয়ে দিতে পারব কি না, স্কুল তার একেবারে ভাল লাগে না!
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বইটির ভূমিকায় লিখেছেন, “রাগিব হাসান আমাদের বিভাগে থেকে প্রথম স্থান অধিকার করে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে। তার সমাজ ভাবনা সবাইকে নিয়ে চলার আকাঙ্কা অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয়। কোন এক সময়ে আমার সুযোগ হয়েছিল তার গবেষণা কর্মের সাক্ষী থাকার। তখনই দেখেছি তার গবেষণা করার প্রতিভাই শুধু আছে তা নয় তার আগ্রহ সীমাহীন। চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে রাগিব হাসান পিছপা হয় না। আইনস্টাইন বলেছেন তিনি খুব তীক্ষ্ণধী নন তবে একটি সমস্যা নিয়ে তিনি দীর্ঘক্ষণ লেগে থাকতে পারেন গবেষণায় সফলতা অর্জন করতে যদি কোন গোপন মূলমন্ত্র থাকে তাহলো লেগে থাকে। রাগিব অত্যন্ত কর্মঠ এবং সক্রিয়।” রাগিব হাসান নিজেই একজন আন্তর্জাতিক মানেব গবেষক। গোল্ড মেডেল পাওয়া কম্পিউটার বিজ্ঞানের সেরা ছাত্রটি এই বইতে গবেষণার বিষয়, পর্যন্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করেছেন। ফলে দেশে গবেষণা করতে ইচ্ছুক তো বটেই- যারা বিদেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গবেষণা করতে চান তাদের জন্যও বইটি অত্যন্ত উপকারি। গবেষণাকর্মের নানামাত্রিক দিক নিয়ে এমন গ্রন্থ সম্ভবত বাংলা ভাষায় এটাই প্রথম।
পদার্থবিজ্ঞানের রহস্যময় জগৎ হচ্ছে কোয়ান্টাম মেকানিক্স। আমাদের পরিচিত জগতে আমরা যা দেখে অভ্যস্থ, কোয়ান্টাম মেকানিক্স এ তার কিছুই মেলে না!অণূ-পরমাণূ সেই ক্ষুদ্র জগৎকে ব্যাখ্যা করার জন্য এক সময় কোয়ান্টাম মেকানিক্স নাম দিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা বিজ্ঞান গড়ে উঠেছিল। যারা স্কুল কলেজে পড়ে তাদেরকে সত্যি সত্যি কোয়ান্টাম মেকানিক্স শেখানো সম্ভব কি না সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েরা কোয়ান্টাম মেকাসিক্সের জগতে সদর্পে পদচারণা শুরু না করুক অন্তত যেন সেউ জগতে উঁকি দিতে পারে সেটি মাথায় রেখে এই বইটি লেখা হয়েছে। এটি পড়ে একজন ছেলে বা মেয়েও যদি পদার্থবিজ্ঞানে আগ্রহী হয়,আমি মনে করবে আমার পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।
বাড়িতে এসে বুড়ার আর তর সইছিল না। মন তার উড়ু উড়ু কখন রাত আসবে, সবাই ঘুমিয়ে পড়বে, আর তারপর নিজের ঘরের দরােজা জানালা বন্ধ ক'রে দিয়ে কল্পনার পাখা মেলে সে উড়াল দিবে জ্ঞানপুরীর উদ্দেশে, যেখানে সে সাক্ষাৎ পাবে গুরুজীর। তারপর গুরুজী তাকে পছন্দ করলে তাকে সত্যি সত্যি তুলে নিয়ে যাবেন সেখানে। কিন্তু এই শেষােক্ত কথাটা ভাবতে তার গা ছম ছম করছিল। কী হবে যদি সে কোনাে ভুলের কারণে আর ফিরে না আসতে পারে? যদি তাকে সেই নির্জন ভূবনে চিরকালের মতাে থেকে যেতে হয়? যাবার সময়ে তাে গুরুজী তাকে সাহায্য করবেন, কিন্তু যদি আসার সময়ে মাঝপথে মহাশূন্যে কোথাও তার ঘুম ভেঙে যায়?
তাহলে কি তার বিপদ হবে? বিপদের কথা জেনে ফেলে বলেই তাে মানুষ বিপদে পড়ে। সুতরাং মাঝপথে ঘুম ভেঙে গেলে আর যদি পথচলা সম্ভব না হয়? কিন্তু তবুও তাে ভয় পেলে চলবে না। জ্ঞানের অভিযানের ক্ষেত্রে ভয়কে সত্যিকার অর্থে ভয় পাবার ছেলে বুড়া নয়। তাছাড়া বাসুদেব স্যারের ওপর তার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আর এমনও তাে হতে পারে যে সেই জগৎটা নির্জন নয়।
‘গল্পে-জল্পে জেনেটিক্স’ বইটির সম্পর্কে লেখার আগে বইয়ের পটভূমিটাও একটু জানানো দরকার। বইটি লিখবার ক্ষেত্রে বিদেশী ভাষার লেখা ‘এ কার্টুন গাইড টু জেনেটিক্স’ বইটি থেকে সমুদয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। কাটুন গাইড টু জেনেটিভ এর মূল বইটি আমার হাতে আসে যখন, তখন আমি মেডিকেলের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র। সুব্রত ভাই প্রথম বইটির কথা আমাকে বলেছিলেন। আর চমকের (ইনিই হলেন আমাদের লেখক সাহেব) কাছ থেকে বইটির সফট কপি পাই। সুব্রত ভাই আর চমক দুজনই ইঞ্জিনিয়ার মানুষ আর আমি হলাম গোবেচারা ডাক্তার। গণিত অলিম্পিয়াড নামক অসামান্য চমৎকার ব্যাপারটি বাংলাদেশে না ঘটলে আমরা হয়তো কেউ কাউকে কখনোই চিনতাম না। সে যাই হোক, বইটি হাতে পেয়ে এবং সেই সাথে তাঁদের কাছে বইটির উচ্চকিত প্রশংসা শুনে, পড়ার আগে আমি ধারণা করেছিলাম, না, বইটি বোধহয় একেবারে মন্দ নয়। আমাদের দেশের শিক্ষা্ব্যবস্থার কারণেই হোক কিংবা যে কারণেই হোক, অনেক ডাক্তারই ভাবেন যে ডাক্তারবিদ্যা এবং তৎসংশিষ্ট জ্ঞান (তার মধ্যে জেনেটিক্সও পড়ে) হজম করা ইঞ্জিনিয়ারদের কম্মো নয়। অনেক ইঞ্জিনিয়ারও ডাক্তারদের সম্পর্কে অনুরূপ ধারণা পোষণ করেন। তো, আমিও প্রথমটায় ভেবেছিলাম, সত্যটা বলেই ফেলি, এই বইটিতে জেনেটিভের নিছক প্রাথমিক কিছু ধারণা অত্যন্ত সরল ভাষায় বাচ্চাদের (এবং ইঞ্জিনিয়ারদের) বোঝার মতো করে তুলে দরা হয়েছে। বইটি পড়ে আমি নতুন কিছু শিখব তা আশা করে বইটি পড়া শুরু করিনি, বরং, যারা জেনেটিভের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যারয়ে পড়েনি, তাদেরকে কী ভাষায় বললে সহজে জেনেটিভ বোঝানো যাবে সেটা জানতেই বইটা পড়া শুরু করি। কেননা, ডাক্তার হিসেবে প্রায়ই অসুখ-বিসুখ নিয়ে রোগী বা রোগীর স্বজনকে বুঝিয়ে বলা লাগে এবং তখন জেনেটিক্স সংক্রান্ত অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু বইটা পড়া যতোই এগোতে থাকে ততোই আমি বিস্মিত হতে থাকি। একী! এতো দেখছি মেডিকেল প্রথম বর্ষের বায়োকেমিস্ট্রি বিষয়টির অন্তর্ভুক্ত জেনেটিক্স কার্ডটির (মেডিকেল কলেজে কোনো বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত কোর্সকে ‘কার্ড’ বলে) পুরোটাই ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে আরো অনেক কিছু পেলাম যা ঐ কার্ডে ছিলনা কিন্তু থাকলে ভালো হতো। ইতিহাস থেকে শুরু করে বায়োটেকনোলজি আর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, আবার, জৈববিবর্তনের আলোকে জেনেটিক্সের বিশ্লেষণ, মলিকুলার বায়োলোজি কী নেই! কিন্তু তাই বলে বইটি কিন্তু একগাদা তথ্যের স্তুপ নয়। যেকোনো মজার কমিঙের মতো এক নিঃশ্বাসে আগাগোড়া পড়ে ফেলা যায়। পড়ার সময় আমার মনে হচ্ছিল, ইশ, প্রথম বর্ষে থাকতে যদি বইটি পেতাম তাহলে জেনেটিক্স কার্ডটাকে ঐরকম বিভীষিকা মনে হতো না। জটিল সব বিষয়ের কী আশ্চর্য সরল উপস্থাপনা, অথচ সরল করতে গিয়ে ‘অতি-সরল’ ছেলেভুলানো গল্প হয়ে যায়নি। বইটি বোঝার জন্য স্কুল পর্যায়ের রসায়ন জ্ঞানই যথেষ্ট, অথচ বইটির বিষয়বস্তু স্নাতক পর্যায়ের।
এতো অসাধারণ সক দিকের সমন্বয় ঘটেছে যে বইতে, তার উপর বইটি হাতে লেখা ও আঁকা। এমন বইয়ের বৈজ্ঞানিক তথ্য, রসবোধ, শিল্পগুণ, নান্দনিকতা সবকিছু অবিকৃত রেখে পুরোপুরি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির উপযোগী করে লেখা চাট্টিখানি কথা নয়। চমক যখন প্রথম কুড়ি পৃষ্ঠা লিখে আমাকে দেখতে দিলো তখন তো আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। চমক একজন ইঞ্জিনিয়ার; ইঞ্জিনিয়ারদের সম্পর্কে আমার আগে যে ধারণাই থাকুক তা সম্পূর্ণ পাল্পে গেলো। আমার মনে হলো, চমকের রূপান্তরটি হয়তোবা মূল বইকেও অতিক্রম করে গেছে। তারপর অন্তর্জালে তার সাথে যখনই ভাব বিনিময় হতো তখনই বইটির কাজ কদ্দুর হলো তা বারবার জানতে চেয়ে তাকে যথেষ্ট বিরক্ত করেছি। সেজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। প্রবাসে থেকে পড়াশোনার চাপ ও এতো ব্যস্ততার মাঝেও এতো চমৎকার একটা কাজ হতো অল্প সময়ে সম্পন্ন করা বোধহয় চমকের ক্ষেত্রেই সম্ভব। বাংলাদেশের বইয়ের বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে এরকম ভিন্নধারার একটি বই প্রকাশ করার সময়োপযোগী সামাজিক দায়িত্ব সাহসের সঙ্গে পালন করায় প্রকাশক অন্যরকম প্রকাশনীর যত বড় ধন্যবাদ প্রাপ্য তা দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। শুধু ধন্যবাদ এজন্য যথেষ্টও নয়।
বইটি পড়ে জেনেটিক্স সম্পর্কে একটা সামগ্রিক ধারণা তো পাওয়া যাবেই, তার চেয়ে বড় কথা হলো, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে দেবে এ বইটি। খুব কম বইয়েরই এমন ক্ষমতা থাকে। তাও যদি সেটা জেনেটিক্সের মতো কাটখোট্টা বিষয় হয় তবে তো কথাই নেই। যাঁরা এই বইয়ের আগে জেনেটিভের আর কোনো বই পড়েননি তাঁরা নিশ্চয়ই আমাকে গাল পাড়বেন জেনেটিক্সকে ‘কাঠখোট্টা’ বলার জন্য। তা আমি হাসিমুখে মেনে নেবো।
কিন্তু তুমি শ্বাসের মাধ্যমে যে পরিমাণ অক্সিজেন দেহে গ্রহণ করাে, তার চার ভাগের এক ভাগই ব্যবহার করে তােমার মস্তিষ্ক। অথচ আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, কোনাে কাজ না করে খুলির মধ্যে শুধু শুধু বসে থাকে মস্তিষ্ক। কিন্তু এসব ঘটনায় নিশ্চিতভাবেই প্রমাণিত হয়, মস্তিষ্ক এমন বিশেষ কোনাে কাজ করে, যা আমাদের দেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আবার ধরাে, বিশেষ কোনাে কারণে মাঝে মাঝে অনেকের শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হতে দেখা যায়। এর ফলে তার দেহের ভেতর প্রয়ােজনীয় অক্সিজেন যেতে পারে না। দেহের বেশির ভাগ অংশই অক্সিজেন ছাড়া কিছুটা সময় টিকে থাকতে পারে। কিন্তু অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে, মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই অকেজো হয়ে যায় মস্তিষ্ক। এতে মস্তিষ্কের সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সব শেষে মানুষটি মারা যায়।
বানরটি তখন বড় রুটির খণ্ড থেকে একটি অংশ ছিঁড়ে ফেলে দিল । এরপর তা আবার দাঁড়িপাল্লায় রাখল ৷ এবার, আগের ছোট অংশটার ওজন বেশি হয়ে গেল । এভাবে বানরটি যতবারই অল্প অল্প টুকরো রুটির খণ্ড ছিড়ে রুটি দুইটি সমান করার চেষ্টা করে ততবারই একটিতে কিছু বেশি হয়ে যায়, রুটি আর সমান হয় না! যেহেতু বানরটি সৎ এবং সে রুটি সমান ভাগে ভাগ করার দায়িত্ব নিয়েছে কাজেই সে হাল ছাড়ল না! সে ভাগ করেই গেল, করেই গেল, করেই গেল। শেষমেষ রুটির টুকরো দুইটার যা পরিণতি হলো তা দেখে ইঁদুর দুইটি মনের দুঃখে বলল, “ওহে বানর ভইি, এ তুমি কী করলে? রুটিটাকে দেখি একদম বিন্দু বানিয়ে ফেললে, এখন আমরা কি খাব?” বেচারা বানর এতক্ষণ খেয়াল করেনি, এবার তার খেয়াল পড়ল।
মাইনাস মাইনাসে হয় প্লাস, শূন্য দিয়ে ভাগ দিলে হয় অসংজ্ঞায়িত, ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল ‘হাপিন্টুভুমিন্টুচ্চতা’ (1/2 * ভূমি * উচ্চতা), (a b)2= a2 2ab b2 গণিত করতে গিয়ে এমন আনেক কিছু আমরা শিখি, মুখস্থ করি। কিন্তু জানি কি- কেন হয়, কিভাবে হয়? বুঝি কি অন্তর থেকে? এগুলো কি Feel করা সম্ভব? এই বইটি যতটা জ্ঞানের তার খেকে বেশি আনন্দের, চিন্তার আনন্দের লেখক মনে করেন, গণিত পৃথিবীর সবচেয়ে মজার বিষয়। অনেক মানুষ এটাকে ভয় পায় কারণ মজার অংশগুলো তাদের জানানো হয় না কেমন অদ্ভুত ছিল গণিতবিদদের জীবন? আসলে কে আবিষ্কার করেছিল পিথাগোরাসের উপপাদ্য? কিভাবে মাথায় এল আইডিটা? তিন মেয়ের সমস্যাটা কী ছিল? মাথায় চুলের সংখ্যা কত? অনন্ত জলিল গণিত নিয়ে সিনেমা বানালে কী সংলাপ বলতেন? এমন মজার সব চিন্তা, সমস্যা আর গল্প নিয়েই গণিতের রঙ্গে: হাসিখুশি গণিত।
এই বইটির উদ্দেশ্য গণিত শেখানো নয়, বইটির উদ্দেশ্য গণিতে উৎসাহী করে তোলা। গণিতের যে বিষয়গুলো আমার কাছে চমকপ্রদ, রহস্যময় বা মজার বলে মনে হয়েছে তার কিছু এখানে তুলে ধরা হয়েছে। গণিতের সমস্যা না করা হলে গণিতের মজাটুকু পুরোপুরি বোঝা যায় না, তাই খুঁজে পেতে একশ সমস্যা এখানে জুড়ে দেয়া হয়েছে। বইয়ে এর সমাধানগুলোও আছে, কিন্তু আমি আশা করব একেবারে বাধ্য না হলে কেউ সমস্যাগুলো দেখবে না। সমস্যাগুলো এমনভাবে বেছে নেয়া হয়েছে যে গণিতের জ্ঞান খুব বেশি না হলেও কোনো ক্ষতি নেই, যে কেউ এখানে দাঁত বসাতে পারবে। সত্যি কথা বলতে কী, কিছু কিছু সমস্যা আমলে খাঁটি গণিতের সমস্যা নয়- যুক্তিতর্ক এবং লজিকের সমস্যা। আমি নিজে সেগুলোর পিছনে অনেক সময় কাটিয়ে দিতে পারি, আমার ধারণা অন্যেরাও পারবে। আবার বলছি, একজন পাঠক বা পাঠিকাও যদি এই বইটি পড়ে গণিতে উৎসাহী হয় আমি মনে করব আমার পরিশ্রমটুকু কাজে লেগেছে- সবাইকে বলে রাখি, এর চাইতে অনেক কম পরিশ্রমে একটা সায়েন্স ফিকশান বা একটা কিশোর অ্যাডভেঞ্চার লেখা যায়।
ভূমিকা ক্যালকুলাস বিষয়টা আমার কাছে সব সময়েই প্রায় ম্যাজিকের মতাে মনে হয়েছে! যারা বিজ্ঞান কিংবা প্রযুক্তি নিয়ে লেখাপড়া করে তাদের সবাইকেই আগে হােক কিংবা পরে হােক এটা শিখতে হয়। কিন্তু অনেক সময়েই দেখেছি ছেলেমেয়েরা ক্যালকুলাস ব্যবহার করার কিছু নিয়ম শিখেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তার ভেতরকার সৌন্দর্যটা নিয়ে আগ্রহী হচ্ছে না, তাই আমি এই ছােট বইটা লিখেছি ছেলেমেয়েদের ভেতর ক্যালকুলাসের জন্যে আগ্রহ জন্মানাের জন্যে! তবে সবাইকে আমি মনে করিয়ে দিই, গণিতের একটা বই লেখার জন্যে যে রকম নিয়ম মেনে চলতে হয়, এই বইয়ে সেটা কিন্তু মেনে চলা হয়নি।
অধ্যায়-১ : প্রাচীন গ্রিকদের অর্জন
অধ্যায়-২ : গঠনযোগ্যতার একটি বিশ্লেষণী মানদনণ্ড
অধ্যায়-৩ : জটিল সংখ্যা
অধ্যায়-৪ : ডেলিয়ান সমস্যা
অধ্যায়-৫ : কোন কোণকে ত্রিখণ্ডিত করা
অধ্যায়-৬ : বৃত্তকে বর্গক্ষেত্রে রূপান্তরের সমস্যা
অধ্যায়-৭ : সুষম বহুভুজ নির্মাণের সমস্যা
অধ্যায়-৮ : শেষের কথা