Note : All deposit is refundable
এক কথায় বই মানেই দুই মলাটে আবদ্ধ একটা সুন্দর জগৎ। এবারে এই বইয়ের কথায় আসা যাক, এই বইটা আসলে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ-এর বিভিন্ন জায়গায়,বিভিন্ন সময়ে দেয়া কিছু বক্তৃতার সমষ্টি। একটা বই মানে কী? একটা বই মানে কি শুধু বই? একটা বই মানে,যে লেখকের বই পড়ছি,তার মধ্যে যা কিছু সুন্দর, যা কিছু আনন্দময় সেসবেরই তো সমাহার।সুতরাং কোনো বই যখন পড়ি,তখন কতগুলো কাগজের পৃষ্ঠাই শুধু পড়িনা,সেই লেখকের সুন্দর অন্তরের সমস্ত সৌন্দর্য আর আলোকেও স্পর্শ করি।অন্তরের মধ্যে একটা জ্যোতি প্রবাহ তখন খেলা করে।শেক্সপিয়র পড়লে তার অন্তরের সৌন্দর্য গুলো যাবে কই? যদি প্লেটো পড়ি,রবীন্দ্রনাথ পড়ি,হাদিস পড়ি, কালিদাস পড়ি,পৃথিবীর সবচেয়ে জ্ঞানী মানুষদের শ্রেষ্ঠ ও সৌন্দর্যময় লেখা পড়ে যাই,তাহলে? তাহলে কী হবে? পাঠ প্রতিক্রিয়া : এই বইটা পড়ে আমার শুধু আফসোস হচ্ছে।কিসের আফসোস? কেন আরো আগে এই বইটা পড়িনি! বইয়ের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে কতকিছু করা যায়,একটা দেশ,জাতির ভবিষ্যৎ বদলে দেয়া যায়। কী করা যায়না বই দিয়ে?
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ একজন বহুমুখী ব্যক্তিত্ব। অধ্যাপনা করেছেন তিনি তিরিশ বছর-১৯৬২ সাল থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত। অধ্যাপক হিসেবে তাঁর খ্যাতি কিংবদন্তিতুল্য। ষাটের দশকে বাংলাদেশে যে নতুন ধারার সাহিত্য আন্দােলন হয়, তিনি ছিলেন তার নেতৃত্বে। সাহিত্য পত্রিকা 'কণ্ঠস্বর সম্পাদনার মাধ্যমে সেকালের নবীন সাহিত্যযাত্রাকে তিনি নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা দিয়ে সংহত ও বহমান করে রেখেছিলেন এক দশক ধরে। বাংলাদেশে টেলিভিশনের সূচনালগ্ন থেকে মনস্বী, রুচিমান ও বিনোদন-সক্ষম ব্যক্তিত্ব হিশেবে আবির্ভূত হন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। টেলিভিশনের বিনােদন ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় তিনি পথিকৃৎ ও অন্যতম সফল ব্যক্তিত্ব। এইসব ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি সাহিত্যচর্চায় নির্বিষ্ট। কবিতা, প্রবন্ধ, ছােটগল্প, নাটক, অনুবাদ, জর্নাল, জীবনীমূলক বই ইতািলয়ে তাঁর গ্রন্থভাণ্ডারও যথেষ্ঠ সমৃদ্ধ। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ ২৭ টি। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ব্যক্তিত্বের প্রায় সবগুলো দিক সমন্বিত হয়েছে তার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সংগঠক সত্তায় । তিনি অনুভব করেছেন যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের প্রয়োজন অসংখ্য উচ্চায়ত মানুষ। আলোকিত মানুষ চাই”—সারা দেশে এই আন্দোলনের অগ্রযাত্রী হিশেবে ত্রিশ বছর ধরে তিনি রয়েছেন সংগ্রামশীল। ২০০০ সাল থেকে সামাজিক আন্দােলনে উদ্যোগী ভূমিকার জন্য তিনি দেশব্যাপীঅভিনন্দিত হয়েছেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধ আন্দােলন, পরিবেশ দূষণ-বিরোধী আন্দােলনসহ নানান সামাজিক আন্দােলন তাঁর নেতৃত্বে প্রাণ পেয়েছে। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, পিতা মৃত আয়ীম উদ্দিন, জন্মস্থান : পার্ক সার্কাস, কলকাতা। জন্মসাল: ২৫ জুলাই ১৯৪০। পৈতৃক নির্বাস : কামারগতি, কচুয়া বাগেরহাট। বর্তমান ঠিকানা : ৭৭ সেন্ট্রাল রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা। শিক্ষা : মাধ্যমিক : পাবনা জিলা স্কুল (১৯৫৫); উচ্চমাধ্যমিক : প্রফুল্ল চন্দ্র কলেজ, বাগেরহাট ১৯৫৭; স্নাতক সম্মান (বাংলা) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬০), স্নাতকোত্তর (বাংলা) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬১)। পেশা : অধ্যাপনা, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি : বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। পুরস্কার : জাতীয় টেলিভিশন পুরস্কার (১৯৭৭), মাহবুব উল্লাহ ট্রাস্ট পুরস্কার (১৯৯৮), রোটারি সিড পুরস্কার (১৯৯৯), বাংলাদেশ বুক ক্লাব পুরস্কার (২০০০), র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার : (২০০৪), একুশে পদক (২০০৫), শেলটেক পদক (২০০৬)।