হেমা নয়ন কে বুঝতে পারা এক চমৎকার প্রেমিকা চরিত্র যার প্রেমের গভীরতা বুঝতে উপন্যাসের শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত যেতে হয়। হেমার বন্ধু রাহাতের হেমার প্রতি একতরফা ভালোবেসে কষ্ট পেয়ে যাওয়ার গল্পও এখানে উল্লেখ্য। এখানে লেখা আছে জীবনের প্রতি পরতের মায়া, স্নেহ, অবহেলা, ক্রোধ, লালসা,প্রতিশোধ, অপেক্ষা কিংবা হারিয়ে ফেলার গল্প। নয়নের নানা দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী তৈয়ব খাঁ কিংবা কুৎসিত মানসিকতার আব্দুল ফকিরের মধ্যকার বাইরে ঠান্ডা কিন্তু ভেতরে প্রচণ্ড শোধ নেয়ার মানসিকতা কিংবা নূরের আলোয় আলোকিত নয়নের মা কোহিনূরের জীবন, হেমার বাবা-মা রেনু- আসলামের মধ্যকার কথাহীন, স্পর্শহীন সংসার নামক বন্দী থাকার গল্প কিংবা জীবনের শেষ বেলায় এসে তৈয়ব খাঁ তার স্ত্রী আমোদি বেগমের প্রতি হঠাৎ ই স্বামী হিসেবে দমিয়ে রাখার ভুল বুঝতে পারার অংশ টুকু কিংবা কুৎসিত আব্দুল ফকিরের নিজের মেয়ে পারুল ছাড়া অন্য সবাই একটা মাংসের দলা বা ভোগ ছাড়া কিছুই নয় কিংবা নির্মম সত্য টা জানতে পারার পরে প্রতিশোধে উন্মুখ নয়নের মানসিক বিকারগ্রস্ততা এবং হেমার কাছের মানুষ হয়ে আগলে রাখার চেষ্টা এই সব কিছুই বিচ্ছিন্ন নয় বরং একটা মানবজনমের প্রতিটি ব্যর্থতা, গোপন কষ্ট এখানে এক এক করে লেখা।
দুটো ইচ্ছে নিয়ে স্বপ্নযাত্রার শুরু। এক- খেয়ানৌকার মাঝি হওয়া, দুই- নিজের নামটি ছাপার অক্ষরে দেখতে পাওয়া। মাদারীপুরের কালকিনি থানার কয়ারিয়া নামের যে গ্রামে জন্ম, তার পাশ দিয়েই তিরতির করে বয়ে গেছে ছোট্ট এক নদী। খেয়ানৌকার মাঝি হওয়ার স্বপ্নটা তাই সত্যি হওয়াই ছিল সহজ। কিন্তু হলো উল্টোটা। পূরণ হলো দ্বিতীয় স্বপ্নটি! সাদাত হোসাইন হয়ে গেলেন লেখক। এ পর্যন্ত তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ছয়। লিখেছেন, কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস। যা প্রশংসা কুঁড়িয়েছে পাঠক মহলে। ‘আরশিনগর’ এবং ‘অন্দরমহল’ নামের দীর্ঘ কলেবরের উপন্যাস দুটি রীতিমত চমকে দিয়েছে পাঠকদের। শুধু লেখালেখিই নয়, দুর্দান্ত আলোকচিত্রী সাদাত হোসাইন নিজের স্বপ্নের সীমানাটাকে বাড়িয়ে নিয়ে গেলেন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণেও। তার নির্মিত ‘বোধ’ ও ‘দ্যা শ্যুজ’ নামের নির্বাক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দুটি প্রশংসার ঝড় তুলেছে বিশ্বব্যাপী। কাজ করছেন একাধিক নতুন ফিল্ম নিয়ে। সাদাত হোসাইনের জগত জুড়ে অমিত স্বপ্নের বসবাস। সেই স্বপ্নের সবটা ছুঁয়ে ছুটে যেতে চান অবিরাম। সম্প্রতি আলোকচিত্র, লেখালেখি এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের জন্য জিতেছেন ‘জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যশনাল অ্যাওয়ার্ড’।