একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের কোনরকমে খেয়ে পরে বেঁচে থাকার চরম বাস্তবতা আছে এতে । বাবার বেতনের টাকায় চলে না এতগুলো মানুষের খাওয়া , পড়াশোনা , বাড়ী ভাড়া। নড়বড়ে ঘর , মায়ের তালি দেয়া শতছিন্ন ছেড়া শাড়ী , ছোট ভাই-বোনের ছোটখাটো আবদার পুরণ করতে না পারা এক সংগ্রামী জীবন মাহমুদের । বি.এ.পাশ করে একটা পত্রিকায় সাব এডিটর এর চাকরি করে মাহমুদ ৫০ টাকা মাইনে পায় , এতে নিজের খরচ রেখে পরিবারে একটু সাহায্য করে । চাকরি টা অনেক আশা করে নিয়েছিল কিন্তু সেই আশা সম্পাদকের নিয়মনীতির গণ্ডিতে বাঁধা পরে গেছে । বাড়ীর বড় মেয়ে মরিয়ম , অল্প বয়সে একটা ভুল করে ফেলে । যা তাকে পরবর্তী জীবনে সুখ থেকে বঞ্চিত করে রাখে । সেও নিজের পড়াশোনার খরচ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রী পড়িয়ে জোগাড় করে নেয় । ছাত্রী পড়ানোর সুবাদে একজনের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পরে । পারিবারিক আয়োজনেই বিয়ে হয়ে যায় বড়লোক ছেলে মনসুরের সাথে । যদিও এই বিয়েতে মরিয়মের বড় ভাই মাহমুদের মত ছিল না । মাহমুদ বড়লোকদের দুচোখে দেখতে পারে না ।
জহির রায়হান (১৯ আগস্ট ১৯৩৫ - ৩০ জানুয়ারি ১৯৭২) একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক, ঔপন্যাসিক, এবং গল্পকার। বাংলা সাহিত্যের গল্প শাখায় অবদানের জন্য তিনি ১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৭৭ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক এবং সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯২ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। চলচ্চিত্রে তার সামগ্রিক অবদানের জন্য ১৯৭৫ সালে ১ম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে মরণোত্তর বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়। তার রচিত প্রথম উপন্যাস শেষ বিকেলের মেয়ে ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয়। তার রচিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হল হাজার বছর ধরে ও আরেক ফাল্গুন। হাজার বছর ধরে উপন্যাসের জন্য ১৯৬৪ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র কখনো আসেনি (১৯৬১)। ১৯৬৪ সালে কাঁচের দেয়াল চলচ্চিত্রের জন্য তিনি নিগার পুরস্কার লাভ করেন। তার নির্মিত অন্যান্য চলচ্চিত্রগুলো হল বেহুলা, সংগম, আনোয়ারা এবং জীবন থেকে নেওয়া। স্টপ জেনোসাইড প্রামাণ্যচিত্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে প্রশংসিত হন।