Note : All deposit is refundable
এমনকি সে জাহানারাকেও ঘরের স্ত্রী বানাতে ব্যর্থ হয়, একই সাথে সে শিউলির কাছ থেকে বিতাড়িত হয়। এসকল দিক কাসেদ চরিত্রটিকে পাঠকের হৃদয়ে হতাশার ছাপ ফেলেছে। জাহানারা ও শিউলি দুইজনই স্বচ্ছল পরিবারের আধুনিক মেয়ে। কিন্তু কাসেদের প্রতি দুর্বলতা পাঠককে বিস্মিত করে, আবার জাহানারা তার হৃদয় গহীনে কাসদেরে জন্য ভালোবাসার বীজ বপণ করলেও, কখনও প্রকাশ করেনি। এক পর্যায়ে জাহানারা কাসেদকে ভুল বোঝে এবং নিজেকে আড়ালে নিয়ে যায়। জাহানারা কেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয় নিজের আত্নমর্যাদাবোধ বজায় রাখার জন্য নাকি কাসেদের কাছ থেকে অনাকাঙ্খিত আচরণের জন্য ? জাহানরা কি তবে অভিমানকেই বেশি গুরুত্ব দিল, প্রকৃত ভালোবাসার কাছে নত না হয়ে? লেখক ইচ্ছা করলে এই বিষয়টা পরিষ্কার ভাবে উপস্থাপন করতে পারতেন। আবার শিউলি চরিত্রটিও পাঠকের হৃদয়ে স্থান করে নিতে পারেনি, যদিও সে পুরোপুরি সংস্কারমুক্ত এবং আধুনিক মেয়ে। অন্যদিকে, নাহার সর্ম্পূণ ব্যতিক্রম একটি চরিত্র, যার মাধ্যমে লেখক তার লেখনীর সব রহস্য লুকিয়ে রেখে, সর্বশেষে রহস্যের উদঘাটন করেছেন।
জহির রায়হান (১৯ আগস্ট ১৯৩৫ - ৩০ জানুয়ারি ১৯৭২) একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক, ঔপন্যাসিক, এবং গল্পকার। বাংলা সাহিত্যের গল্প শাখায় অবদানের জন্য তিনি ১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৭৭ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক এবং সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯২ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। চলচ্চিত্রে তার সামগ্রিক অবদানের জন্য ১৯৭৫ সালে ১ম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে মরণোত্তর বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়। তার রচিত প্রথম উপন্যাস শেষ বিকেলের মেয়ে ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয়। তার রচিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হল হাজার বছর ধরে ও আরেক ফাল্গুন। হাজার বছর ধরে উপন্যাসের জন্য ১৯৬৪ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র কখনো আসেনি (১৯৬১)। ১৯৬৪ সালে কাঁচের দেয়াল চলচ্চিত্রের জন্য তিনি নিগার পুরস্কার লাভ করেন। তার নির্মিত অন্যান্য চলচ্চিত্রগুলো হল বেহুলা, সংগম, আনোয়ারা এবং জীবন থেকে নেওয়া। স্টপ জেনোসাইড প্রামাণ্যচিত্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে প্রশংসিত হন।