সেটা অসহ্য একটা ব্যাপার। যারা এই যন্ত্রনা ভোগ করেছে কেবল তারাই বুঝতে পারে এর ভয়াবহতা। . এছাড়াও মাঝে মধ্যে সারাদিন সে রোদের মধ্যে বসে থাকে। সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত পাথরের মত বসে থাকে। নড়েনা একচুলও। সারাদিন খাওয়া দাওয়া বন্ধ রাখে সে। সূর্য থেকেই নাকি খাবার পায় ঐদিনটায়। তারপর সূর্য ডুবে গেলেই নিজের ঘরে ফিরে এসে ছবি আকতে শুরু করে তিন্নী। অন্ধকারে বসেই ছবি আকে সে। সেটাও সাধারন কোন ছবি না। প্যাচানো লতার মত সবুজ আর হলুদ রঙয়ের এক ধরনের গাছের ছবি। . মাঝেমাঝে সে ঘুমের মধ্যে গাছগুলোর সাথে কথা বলে সে। গাছেরা নাকি তিন্নীকে নিজেদের দেশে নিয়ে যেতে চায়। ইদানিং বাগানের কিছু কিছু গাছের কথা বুঝতে পারে সে। সারাদিন তাদের কথা শুনে তিন্নী। . তিন্নীর বাবা শেষপর্যন্ত তিন্নীর সমস্যাটা নিয়ে আসে মিসির অালীর কাছে। মিসির আলী দিনরাত মাথা ঘামিয়েও কোন সুষ্ঠু ব্যাখ্যা খুজে পান না এই ব্যাপারটার। তবে কি এটা আরেকটা অমিমাংসিত রহস্য হিসেবে বাধা পড়ে যাবে মিসির আলীর অমিমাংসিত রহস্যের খাতায়?
হুমায়ূন আহমেদ বিংশ শতাব্দীর বাঙালি জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক গণ্য করা হয়। হুমায়ূন আহমেদ একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার। বলা হয় আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের তিনি পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও হুমায়ূন আহমেদ সমাদৃত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতাধিক। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। সত্তর দশকের শেষভাগে থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি তিনি ছিলেন বাংলা গল্প-উপন্যাসের অপ্রতিদ্বন্দ্বী কারিগর। এই কালপর্বে তাঁর গল্প-উপন্যাসের জনপ্রিয়তা ছিল তুলনারহিত। হুমায়ূন আহমেদ এর সৃষ্ট হিমু ও মিসির আলি চরিত্রগুলি বাংলাদেশের যুবকশ্রেণীকে গভীরভাবে উদ্বেলিত করেছে। হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত চলচ্চিত্রসমূহ পেয়েছে অসামান্য দর্শকপ্রিয়তা। তবে তাঁর টেলিভিশন নাটকগুলি ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়। সংখ্যায় বেশী না হলেও তাঁর রচিত গানগুলোও সবিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাঁর অন্যতম উপন্যাস হলো নন্দিত নরকে, মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, মাতাল হাওয়া ইত্যাদি। তাঁর নির্মিত কয়েকটি চলচ্চিত্র হলো দুই দুয়ারী, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেঁটুপুত্র কমলা ইত্যাদি।