অন্দরমহল জুড়ে তাই ষড়যন্ত্রের ফিসফিসানি, দুর্যোগের ঘনঘটা, গঙ্গাবতীর উন্মত্ত স্রোত। সবসময় যেন গেম অফ থ্রোনসের সিজন ৬ ফিনালের থিম সং মাথায় বাজে-এই কিছু হল, এই যেন কে মরলো। উপন্যাসের শুরুতেই লেখক বলে নিয়েছেন-লেখকের মৃত্যু পাঠকের কাছে এসে। লেখক হয়তো রাজমহল, আকবর দ্যা গ্রেট ভঙ্গিতে চিন্তা করেছেন-আর আমার চোখে ভেসে উঠেছে আরেক ভংগীতে। কারো চোখে সুলতান সোলেমান সিরিয়ালের স্টাইলে, আর আমার চোখে গেফ অফ থ্রোনসের মত করে। তবে হ্যা-গঙ্গাবতী ভাবতে গিয়ে বুড়িগঙ্গার কালো পানি অন্তত মনে আসেনি। নির্দ্বিধায় আমি বানীবালাকে সার্সেই ল্যানিস্টার এর সাথে মিলাতে পারি, তার পুত্র দ্বিজেন্দ্র মিলে যায় জফ্রে ব্যারাথিওন এর সাথে। থাক সে কথা বলবো না, অনেকেই বুঝবেনা।
দুটো ইচ্ছে নিয়ে স্বপ্নযাত্রার শুরু। এক- খেয়ানৌকার মাঝি হওয়া, দুই- নিজের নামটি ছাপার অক্ষরে দেখতে পাওয়া। মাদারীপুরের কালকিনি থানার কয়ারিয়া নামের যে গ্রামে জন্ম, তার পাশ দিয়েই তিরতির করে বয়ে গেছে ছোট্ট এক নদী। খেয়ানৌকার মাঝি হওয়ার স্বপ্নটা তাই সত্যি হওয়াই ছিল সহজ। কিন্তু হলো উল্টোটা। পূরণ হলো দ্বিতীয় স্বপ্নটি! সাদাত হোসাইন হয়ে গেলেন লেখক। এ পর্যন্ত তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ছয়। লিখেছেন, কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস। যা প্রশংসা কুঁড়িয়েছে পাঠক মহলে। ‘আরশিনগর’ এবং ‘অন্দরমহল’ নামের দীর্ঘ কলেবরের উপন্যাস দুটি রীতিমত চমকে দিয়েছে পাঠকদের। শুধু লেখালেখিই নয়, দুর্দান্ত আলোকচিত্রী সাদাত হোসাইন নিজের স্বপ্নের সীমানাটাকে বাড়িয়ে নিয়ে গেলেন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণেও। তার নির্মিত ‘বোধ’ ও ‘দ্যা শ্যুজ’ নামের নির্বাক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দুটি প্রশংসার ঝড় তুলেছে বিশ্বব্যাপী। কাজ করছেন একাধিক নতুন ফিল্ম নিয়ে। সাদাত হোসাইনের জগত জুড়ে অমিত স্বপ্নের বসবাস। সেই স্বপ্নের সবটা ছুঁয়ে ছুটে যেতে চান অবিরাম। সম্প্রতি আলোকচিত্র, লেখালেখি এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের জন্য জিতেছেন ‘জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যশনাল অ্যাওয়ার্ড’।