বছর দু্ই আগে ‘উত্তরাধিকার’পত্রিকায় ‘খাদক’ নামে একটা গল্প লিখেছিলাম।নিজের রচনায় সবচে’ বেশি মুগ্ধ হই আমি নিজে। ছাপা অক্ষরের গল্পটা পড়ার পর মনে মনে বললাম-বাহ্ চমৎকার তো, এ-ধরনের গল্প আরো কিছু লেখা যেতে পারে । কিন্তু লিখতে পারলাম না। চরিত্র সম্পর্কে ভাসা-ভাসা জ্ঞান নিয়ে কিছু লেখা কঠিন। দু’বছরে গল্প লেখা হলো মাত্র সাতটি। এই সাতটি গল্প সিয়েই ‘অয়োময়’। গল্প গন্থের নাম নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তি হতে পারে। সম্প্রতি বাংলাদেশের টিভি এই নামেই একটি সিরিয়েল প্রচার করেছে, যার রচয়িতাও আমি। তবে, টিভি সিরিয়েলের সঙ্গে গল্প গন্থের গল্প গুলোর কোন মিল নেই। অবশ্যি ,দুটি ক্ষেত্রেই চরিত্রগুলো এসেছে ভাটি অঞ্চল থেকে -মিল বলতে এইটুকুই। পাঠক-পাঠিকারা প্রশ্ন তুলতে পারেন,-‘অয়োময়’নামটি দুই জায়গায় ব্যবহার করা হলো কেন?উত্তর একটিই, কিছু কিছু নাম আমার পছন্দ হয়ে যায়।সেই না গুলোই বারবার ঘুরেফিরে ব্যবহার করতে ইচ্ছে করে।বেশির ভাগ পাঠক-পাঠিকাই আমার এই বদভ্যাসের কথা জানেন।তাঁরা অতীতে আমাকে ক্ষমা করেছেন,নিশ্চয়ই এবারও্ করবেন।
হুমায়ূন আহমেদ বিংশ শতাব্দীর বাঙালি জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক গণ্য করা হয়। হুমায়ূন আহমেদ একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার। বলা হয় আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের তিনি পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও হুমায়ূন আহমেদ সমাদৃত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতাধিক। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। সত্তর দশকের শেষভাগে থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি তিনি ছিলেন বাংলা গল্প-উপন্যাসের অপ্রতিদ্বন্দ্বী কারিগর। এই কালপর্বে তাঁর গল্প-উপন্যাসের জনপ্রিয়তা ছিল তুলনারহিত। হুমায়ূন আহমেদ এর সৃষ্ট হিমু ও মিসির আলি চরিত্রগুলি বাংলাদেশের যুবকশ্রেণীকে গভীরভাবে উদ্বেলিত করেছে। হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত চলচ্চিত্রসমূহ পেয়েছে অসামান্য দর্শকপ্রিয়তা। তবে তাঁর টেলিভিশন নাটকগুলি ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়। সংখ্যায় বেশী না হলেও তাঁর রচিত গানগুলোও সবিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাঁর অন্যতম উপন্যাস হলো নন্দিত নরকে, মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, মাতাল হাওয়া ইত্যাদি। তাঁর নির্মিত কয়েকটি চলচ্চিত্র হলো দুই দুয়ারী, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেঁটুপুত্র কমলা ইত্যাদি।