আর সেইজন্য ২০ দিনের জন্য গ্রামে আসা। গ্রামের পরিবেশে এবং শহরের পরিবেশের মধ্যে কোন পরিবেশে গল্প লেখা জমে নীল অপরাজিতায় হবে তার অগ্নীপরীক্ষা। গ্রাম সম্পর্কে লেখক শওকতের খুব একটা ধারনা ছিল না কিন্তু বজুলুর রহমান গ্রাম সম্পর্কে বলায় তার এমন ধারনা হয়েছে যে শেষ পর্যন্ত গ্রামে আসলেন কিন্তু বজুলুর রহমানের বলা গ্রামের সাথে এই গ্রামের কোন মিল নেই। প্রথম কথা বর্ষাকাল হওয়া সত্বেও কোন ব্যঙ্গের ডাক শুনতে পাচ্ছেন না তিনি। বর্ষাকাল তাহলে ব্যঙ ডাকবে না কেন? লেখা বাদ দিয়ে শওকাত খুজতে লাগলেন সেই রহস্য। পেলেও গেলেন অদ্ভুত সব সমাধান। গ্রামে এসেছেন কোলাহল মুক্ত পরিবেশে লেখালেখি করতে কিন্তু এটা যেন অপূরণীয় কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়। কারন গ্রামে এমন সব মানুষদের সাথে পরিচয় হচ্ছে যারা অনর্গল কথা বলতে ভালবাসে। অপরজন বিরক্ত হল কি হলনা সেদিকে তাদের খেয়াল নেই।
হুমায়ূন আহমেদ বিংশ শতাব্দীর বাঙালি জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক গণ্য করা হয়। হুমায়ূন আহমেদ একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার। বলা হয় আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের তিনি পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও হুমায়ূন আহমেদ সমাদৃত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতাধিক। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। সত্তর দশকের শেষভাগে থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি তিনি ছিলেন বাংলা গল্প-উপন্যাসের অপ্রতিদ্বন্দ্বী কারিগর। এই কালপর্বে তাঁর গল্প-উপন্যাসের জনপ্রিয়তা ছিল তুলনারহিত। হুমায়ূন আহমেদ এর সৃষ্ট হিমু ও মিসির আলি চরিত্রগুলি বাংলাদেশের যুবকশ্রেণীকে গভীরভাবে উদ্বেলিত করেছে। হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত চলচ্চিত্রসমূহ পেয়েছে অসামান্য দর্শকপ্রিয়তা। তবে তাঁর টেলিভিশন নাটকগুলি ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়। সংখ্যায় বেশী না হলেও তাঁর রচিত গানগুলোও সবিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাঁর অন্যতম উপন্যাস হলো নন্দিত নরকে, মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, মাতাল হাওয়া ইত্যাদি। তাঁর নির্মিত কয়েকটি চলচ্চিত্র হলো দুই দুয়ারী, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেঁটুপুত্র কমলা ইত্যাদি।