গিরিশচন্দ্র সেনের মূল অনুবাদের শতবর্ষকে সামনে রেখে ঢাকার খােশরােজ কিতাব মহল থেকে ১৯৮১ সালে একটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল । নিউজপ্রিন্টে ছাপা এ সংস্করণটিকে মূলানুগ মনে করা যেতে পারে । কিন্তু এ সংস্করণটি এখন দুষ্প্রাপ্য। ঢাকার দিব্য প্রকাশ থেকে ২০০৮ সালে একটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল। এ সংস্করণটি আমার সামনে ছিল। কিন্তু যাচাই করে দেখার সময় হয়নি। কিন্তু উপরিউক্ত দুটি (খােশরােজ ও দিব্য প্রকাশ) সংস্করণে গিরিশ সেনের দেওয়া কোরআনের নাম অনুসৃত হয়নি। দুটোতেই কোরআন শরীফ নাম দেওয়া হয়েছে। গিরিশ সেন বঙ্গানুবাদে প্রকৃতপক্ষে কী নাম দিয়েছিলেন তার প্রামাণ্য দলিলের ছবি আমরা এই সংস্করণের প্রথম পৃষ্ঠায় ছেপে দিয়েছি। এতে দেখা যাচ্ছে, গিরিশ সেন তার অনুবাদিত কোরআনের নাম দিয়েছিলেন, কোরাণ শরিফ। বিশ্বসাহিত্য ভবন থেকে ২০১৪ সালে প্রকাশিত এই সংস্করণটি এসব দিককে গুরুত্ব দিয়ে সম্পাদনা করা হয়েছে।
গিরিশচন্দ্র সেন (জন্ম: ১৮৩৪ - মৃত্যু: ১৯১০)। ভাই গিরিশচন্দ্র সেন নামে তিনি অধিক পরিচিত। তাঁর প্রধান পরিচয় ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন- এর প্রথম বাংলা অনুবাদক হিসেবে। তখন প্রায় ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা ছিল যে, মূলভাষা থেকে অনূদিত হলে গ্রন্থটির পবিত্রতা ক্ষুণ্ন হবে। পবিত্র কুরআন সম্পর্কেও এমন ধারণা ছিল। এ কারণে অনেক মুসলিম মনীষী এর বঙ্গানুবাদ করতে সাহস পাননি। গিরিশচন্দ্র সেনই অন্য ধর্মালম্বী হয়েও এই ভয়কে প্রথম জয় করেন। শুধু কুরআন শরীফের অনুবাদ নয় তিনি ইসলাম ধর্ম বিষয়ক অনেক গ্রন্থ অনুবাদ করেন। তিনি ইসলাম ধর্ম নিয়ে অনেক গবেষণাও করেন।