Note : All deposit is refundable
বাংলা কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর আসরে স্কটিশ চার্চ কলেজের অধ্যাপক ত্ৰিলোকেশ্বর শঙ্কুর আবিৰ্ভাব উনিশশো একষট্টি সালে। ‘সন্দেশ’ পত্রিকার পাতায় প্রথম বেরুল ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’। লেখক সত্যজিৎ রায়। সেই শুরু। সূচনালগ্ন থেকেই শঙ্কুকাহিনী কিশোর পাঠকদের মন জয় করে নিল। প্রথম কাহিনীতে ডায়রির আকারে প্রোফেসর শঙ্কু নিজেই বলেছেন নিজের কাহিনী। তারপর থেকে শঙ্কুর আটত্রিশটি সম্পূর্ণ এবং দুটি অসম্পূর্ণ ডায়রি প্রকাশিত হয়েছে উনিশশো বিরানব্বই পৰ্যন্ত। এই তিরিশ বছরে শঙ্কু স্বয়ং এবং তাঁর কাহিনী ছোটদের কাছে সেরা আকর্ষণ।
এই বৈজ্ঞানিক ও আবিষ্কারক মানুষটি খাঁটি বাঙালি। ভয়ঙ্কর অভিযানে তিনি অকুতোভয়, অথচ আত্মভোলা। আবার আশ্চৰ্য সংযমী। তাঁর কর্মক্ষেত্র কলকাতা হলেও গবেষণাক্ষেত্র বিহারের গিরিডিতে। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীমহলে তিনি সসম্মানে গৃহীত হয়েছেন। তাঁর আত্মপ্রত্যয় ও বিচিত্র উদ্ভাবনী প্ৰতিভা বিস্ময়কর।
প্রোফেসর শঙ্কুর আবিষ্কারের পদ্ধতি যেমন বিচিত্র, তেমনই অদ্ভুত সেইসব আবিষ্কারের নাম। অ্যানাইহিলিন, মিরাকিউরল, নার্ভিগার, অমনিস্কোপ, স্নাফগান, ম্যাঙ্গোরেঞ্জ, ক্যামেরাপিড, লিঙ্গুয়াগ্রাফ ইত্যাদি। এদের কোনওটি ওষুধ, কোনওটি যন্ত্র, কোনওটি বা অন্ত্র কিংবা গ্যাজেট। শঙ্কুর জগতে প্রাকৃত ও অতিপ্রাকৃতের দারুণ সহাবস্থান।
গবেষণা ও আবিষ্কারের সূত্রে শঙ্কু বিশ্বভ্রমণ করেছেন। তিনি ‘সুইডিশ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স কর্তৃক সম্মানিত’। এই ‘বিশ্ববিখ্যাত’ চরিত্রটিকে নিয়ে সত্যজিৎ রায় যেসব আশ্চর্য কাহিনী রচনা করেছেন, তাকে শুধু ‘সায়েন্স ফিকশন’ বা কল্পবিজ্ঞান কাহিনী বললে সবটুকু বলা হয় না। কল্পবিজ্ঞান তো অবশ্যই, একই সঙ্গে এই কাহিনীগুলিতে মিশে আছে ভ্ৰমণ, রহস্য ও অ্যাডভেঞ্চার রস। আবার দুরন্ত অভিযান, অতীন্দ্ৰিয় পরিপার্শ্ব, ফ্যান্টাসি ও রোমাঞ্চের মিশ্রণে গল্পগুলি জমজমাট।
শকুকাহিনীর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য, এই কাহিনীগুলির জগতে ঢুকে ছোট-বড় নির্বিশেষে সকল পাঠক যেন একবয়সী হয়ে ওঠে। সমস্ত কাহিনী একটি খণ্ডে গ্রথিত করে এবার প্রকাশিত হল শঙ্কুসমগ্ৰ৷ এই সংকলনে সংযোজিত হল সত্যজিৎ রায়ের আঁকা বেশ কিছু ছবি—যা এর আগে গ্রন্থাবদ্ধ হয়নি।