Note : All deposit is refundable
টেবিলের অন্যপাশে বসে থাকা মানুষটা একবার ভিডিও মডিউলটার দিকে তাকালাে, তারপর য়ুহার দিকে তাকালাে, তাকে দেখে মনে হয় সে বুঝি এখনাে বিশ্বাস করতে পারছে না যে যুহা তার সামনে বসে আছে।
“তুমি য়ুহা?”
য়ুহা মাথা নাড়ল, বলল, “হ্যা। আমি য়ুহা। মনে নাই আমি গত সপ্তাহে এসেছিলাম—”
“হ্যা আমার মনে আছে।” মানুষটা মাথা নাড়ল, “তুমি শব্দ দিয়ে কী যেন কর।”
“আমি শব্দশিল্পী।” য়ুহা তার ছেলেমানুষী মুখটা গম্ভীর করার চেষ্টা করে বলল, “তােমরা যাকে বল কবি।”
“কবি?”
“হ্যা। আমি শব্দকে এমনভাবে সাজাতে পারি যে সাধারণ একটা কথা অসাধারণ হয়ে যাবে।”
“তাজ্জবের ব্যাপার।” সামনে বসে থাকা মানুষটা তার গাল চুলকাতে চুলকাতে বলল, “আমি ভেবেছিলাম এসব জিনিস উঠে গেছে। ভেবেছিলাম কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ক দিয়ে সব করা যায়। ছবি আঁকা যায়, সংগীত তৈরি করা যায়, কবিতা লেখা যায়—” - মুহা হা হা করে হাসল, বলল, “যাবে না কেন? নিশ্চয়ই যায়। কিন্তু সেই ছবি, সেই সংগীত কিংবা সেই কবিতা হবে খুব নিম্নস্তরের। হাস্যকর, ছেলেমানুষী! খাটি শিল্প যদি চাও তাহলে দরকার খাটি মানুষ। খাঁটি কবিতা লিখতে পারে শুধু খাঁটি মানুষের খাঁটি মস্তিষ্ক।” য়ুহা নিজের মাথায় টোকা দিলে বলল, “আসল কবিতা লিখতে হলে দরকার আসল নিউরনের মাঝে আসল সিনান্স সংযােগ।”
মুহম্মদ জাফর ইকবাল (জন্মঃ ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২) হলেন একজন বাংলাদেশী লেখক, পদার্থবিদ ও শিক্ষাবিদ। তাকে বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লেখা ও জনপ্রিয়করণের পথিকৃত হিসাবে গণ্য করা হয়। এছাড়াও তিনি একজন জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক এবং কলাম-লেখক। তার লেখা বেশ কয়েকটি উপন্যাস চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে। তিনি বর্তমানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের একজন অধ্যাপক এবং তড়িৎ কৌশল বিভাগের প্রধান।