Note : All deposit is refundable
আমরা কালাধুঙ্গির বাের নদীর পুরানাে কাঠের সেতুটার এক পাশে বসে ড্যানসির ভূত-পেত্নীর কিস্সা শুনছিলাম। সে সব গল্প এমনই ভয়াল যে, শুনলে শরীরের রক্ত হিম হয়ে আসে। আমরা আট থেকে আঠারাে বছর বয়সের চৌদ্দজন ছেলেমেয়ে একজন অন্যজনের গায়ের সাথে গা লাগিয়ে বসেছি। তবু ভয়ে দলের মেয়েদের মধ্য থেকে কেউ-কেউ ভয়-পাওয়া চোখে পেছনের ঘন অন্ধকার জঙ্গলটার দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে বারবার তাকাচ্ছিল।
তখন সবেমাত্র সন্ধ্যার অন্ধকার ধীরে ধীরে ঘন হয়ে আসছে। আশেপাশের ঝােপ-জঙ্গল থেকে শুকনাে কাঠ-পাতা জড়াে করে আমরা আগুন জ্বেলেছিলাম। সেই আগুন নিভে গেলেও গনগনে লালচে আঁচ তখনাে রয়ে গেছে। এই গা ছমছম-করা পরিবেশে ড্যানসির ভূত-পেত্নীর গল্পগুলাে আমাদের কাছে খুবই বিশ্বাসযােগ্য মনে হচ্ছিল।
আয়ারল্যান্ডের মানুষ ড্যানসি। ওরা ভূত-প্রেতে চরমভাবে বিশ্বাসী। সে এতক্ষণ শুনিয়েছে আপাদমস্তক ঢাকা-দেওয়া মূর্তি, তাদের হাড়ের ঠকঠকানি, রহস্যজনকভাবে ঘরের দরজা খুলে-যাওয়া আর বন্ধ-হওয়া আর পুরানাে বাড়ির সিড়িতে মচমচ শব্দ—এসব নিয়ে নানা রকম জমজমাট সব ভূতের কিস্সা।
এসব ভূতের কিসসা শুনতে শুনতে আমরা যখন সবাই সম্মােহিতের মত প্রায়—এমন সময় একটা বুড়াে শিঙাল পেঁচা কর্কশ স্বরে ডাকতে ডাকতে আমাদের মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গেল। হয়তাে বাের নদীর মাছ আর ব্যাঙ ধরতে বেরােলাে। পেঁচার ডাক শুনে, সুযােগ বুঝে ড্যানসি তার গল্পের মােড় ঘুরিয়ে দিল। এবার শুরু করল ভয়াবহ সব বশির কিস্সা।