Note : All deposit is refundable
রংপুরে গুপ্তপাড়ায় যে বাড়িটায় আমরা ভাড়া থাকতাম, সেখানে আশ্রিতা হিসেবে থাকতেন বু। বকসাদা চুল। মুখের রেখায় বয়সের আঁকিবুকি। বেশির ভাগ দাতই নেই। ফোকলা দাঁতে হাসলে বুকে শিশুর মতাে লাগত।
বু দিনমান ভিক্ষা করতেন, রাতে এসে আমাদের ওই বাসাটায় থাকতেন। বাসাটায় আমরা সাত-আটজন শিশু। সবাইকে কী যে ভীষণ আদর করতেন! তখন চার আনায় হজমি মিলত। আট আনায় সন্দেশ কিংবা টুংটুং ঘণ্টা বাজিয়ে বাক্সগাড়ি ঠেলে নিয়ে চলা দোকানের আইসক্রিম। কতবার বুর কাছে আবদার করে টাকা নিয়েছি। | দশ পয়সা-পাঁচ পয়সার চল তখনাে উঠে যায়নি। ভিক্ষে হিসেবে সেসবই দিত লােকে। তখন বুঝিনি, আজ ভাবি, এক টাকার সমান ভিক্ষে পেতেই ওই বুড়াে শরীর নিয়ে কত হাঁটতে হতাে বুকে।
তবে আমরা একটু আবদার করলেই বুলুকোনাে জর্দার কৌটো থেকে বের করে দিতেন সিকি-আধুলি। কখনাে যে কিপ্টেমি করেননি, তা-ও নয়। বু লুকিয়ে লুকিয়ে টাকা জমাতেন, আমরা জানতাম।