Note : All deposit is refundable
তাদের একেবারে সােজা সাপটা কাড়াকাড়ি করে খাওয়া দেখতে আমার এক ধরনের আনন্দ হয়। প্রাণীগুলাে আজকাল আমাকে ভয় পায় না, আমার আস্তিনের নিচে নির্বিবাদে লুকিয়ে থাকে কিংবা আমার কাঁধে বসে কিচিরমিচির করে ডাকাডাকি করে। এই এলাকার রােবটগুলাে ভাবলেশহীন মুখে আমাকে লক্ষ্য করে, কিন্তু তাদের সবুজ ফাটাসেলের চোখে আলাের তারতম্য দেখে আমি বুঝতে পারি তাদের কপােট্রনে খানিকটা হলেও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং তারা নিজেদের ভেতরে কোনাে একটা হিসেব মেলাতে পারে না। একজন অল্পবয়সী মানুষের সুউচ্চ অট্টালিকার দেয়ালে হেলান দিয়ে চুপচাপ বসে থাকার কথা নয়, তার শরীরের ওপর দিয়ে পশুপাখির ছােটাছুটি করার কথা নয়। রােবটগুলাে কখনােই আমাকে বিরক্ত করেনি। কিন্তু সাইবর্গ এবং এন্ড্রয়েডগুলাে মাঝে মাঝেই থমকে দাঁড়িয়ে কৌতুহল প্রকাশ করেছে, কখনাে কখনাে অবজ্ঞা, তাচ্ছিল্য কিংবা ক্রোধ প্রকাশ করেছে। আমাকে দেখে মানুষেরা অবশ্যি সবসময়ই সহজাত সৌজন্যের কারণে নিজেদের অনুভূতি লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সেটি কখনাে গােপন থাকেনি। আমি বুঝতে পারি তারা আমার জন্যে এক ধরনের করুণা এবং অনুকম্পা অনুভব করছে। প্রাচীনকালে মানুষ মানসিক রােগাক্রান্ত হয়ে জীবনবিমুখ হয়ে যেতাে- গত কয়েক শতাব্দীতে তার কোনাে উদাহরণ নেই।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল (জন্মঃ ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২) হলেন একজন বাংলাদেশী লেখক, পদার্থবিদ ও শিক্ষাবিদ। তাকে বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লেখা ও জনপ্রিয়করণের পথিকৃত হিসাবে গণ্য করা হয়। এছাড়াও তিনি একজন জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক এবং কলাম-লেখক। তার লেখা বেশ কয়েকটি উপন্যাস চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে। তিনি বর্তমানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের একজন অধ্যাপক এবং তড়িৎ কৌশল বিভাগের প্রধান।