Note : All deposit is refundable
আমি বললুম, তােমার ছিল একজামিন, বিছানার উপরে বসে বসে ভূগােলবত্তান্ত মুখস্থ করছিলে, কখন তােমার মাথা ঠেকল বালিশে, পড়লে ঘুমিয়ে । সেদিন ছিল পূর্ণিমার রাত্রি। জানলার ভিতর দিয়ে জ্যোত্মা এসে পড়ল তােমার মুখের উপরে, তােমার আসমানি রঙের শাড়ির উপরে। আমি সেদিন স্পষ্ট দেখতে পেলুম, পরীস্থানের রাজা চর পাঠিয়েছে তাদের পলাতকা পরীর খবর নিতে। সে এসেছিল আমার জানলার কাছে, তার সাদা চারদটা উড়ে পড়েছিল ঘরের মধ্যে। চর দেখল তােমাকে আগাগােড়া, ভেবে পেল না তুমি তাদের সেই পালিয়ে আসা পরী কি না। তুমি এই পৃথিবীর পরী বলে তার সন্দেহ হল। তােমাকে মাটির কোল থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া তাদের পক্ষে সহজ হবে না। এত ভার সইবে না। ক্রমে চাঁদ উপরে উঠে গেল, ঘরের মধ্যে ছায়া পড়ল, চর শিশুগাছের ছায়ায় মাথা নেড়ে চলে গেল। সেদিন আমি খবর পেলুম, তুমি পরীস্থানের পরী, পৃথিবীর মাটির ভারে বাঁধা পড়ে গেছ।
কুসমি বললে, আচ্ছা দাদামশায়, আমি পরীস্থানে থেকে এলুম কী করে?
আমি বললুম, সেখানে একদিন তুমি পারিজাতের বনে প্রজাপতির পিঠে চড়ে উড়ে বেড়াচ্ছিলে, হঠাৎ তােমার চোখে পড়ল দিগন্তের ঘাটে এসে ঠেকেছে।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল (জন্মঃ ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২) হলেন একজন বাংলাদেশী লেখক, পদার্থবিদ ও শিক্ষাবিদ। তাকে বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লেখা ও জনপ্রিয়করণের পথিকৃত হিসাবে গণ্য করা হয়। এছাড়াও তিনি একজন জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক এবং কলাম-লেখক। তার লেখা বেশ কয়েকটি উপন্যাস চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে। তিনি বর্তমানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের একজন অধ্যাপক এবং তড়িৎ কৌশল বিভাগের প্রধান।