Note : All deposit is refundable
বছর তিন-চার আগে আমরা দেশে হাইস্কুলের ছেলেমেয়েদের কম্পিউটার প্রোগ্রামিং-এ আগ্রহী করে তোলার একটি উদ্যোগ নিই। এটি শুরু হয় ২০১৩ সালে ‘আওয়ার অব কোড’ নামে একটি আন্তর্জাতিক কার্যক্রম দেশে চালু করার মাধ্যমে। বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (www.bdosn.org)-এই কাজটি তখন শুরু করে। এর পরের বছরই সরকারের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে হাইস্কুলের ছেলেমেয়েদের জন্য ‘জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা’ শুরু করে। গত তিন বছর ধরে এটি সাফল্যের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আওয়ার অব কোড করার সময় আমরা শুরু থেকে লক্ষ করি, খেলার মাধ্যমে প্রোগ্রামিং শেখার এই পদ্ধতি এমনকি খুবই ছোটোরাও শুরু করতে পারে। এবং তারা খুব সহজে এই কাজটি করতে পারে। ২০১৭ সালের আওয়ার অব কোডের আয়োজনে বিডিওএসএনের পক্ষ থেকে সারা দেশের ২০ জেলাতে একদল ভলান্টিয়ারকে পাঠানো হয়। তারা খেলার মাঠে, স্কুলে, পুকুরপাড়ে, বাস স্টপে তথা হাটে-মাঠে-ঘাটে যেখানে ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েকে পেয়েছে সেখানেই ল্যাপটপ খুলে বসে পড়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনো জায়গায় পথশিশুরাও যোগ দিয়েছে। আর আমরা আশ্চর্য হয়ে দেখেছি, ওরা খুব সহজে প্রোগ্রামিংয়ের মূল ব্যাপারগুলো ধরে ফেলছে। আমাদের ভলান্টিয়াররা যখন ঢাকায় ফিরে তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করল তখন আমরা ভাবলাম সারা দেশের আনাচকানাচে তো এরকম আয়োজন করা সম্ভব হবে না। তাহলে সবার কাছে প্রোগ্রামিংয়ের এই আশ্চর্য জগতের খবর কেমন করে পৌঁছে দেওয়া যাবে?<br.
সহজ উত্তর হলো- বাংলায় একটি বই লিখে ফেলা, যা প্রোগ্রামিংয়ের জটিল পদ্ধতির অবতারণা ছাড়াই প্রোগ্রামিংয়ের মূল ব্যাপারগুলো তুলে ধরতে পারবে। আমাদের মনে পড়ল বিশ্বখ্যাত ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (MIT― Massachusetts Institute of Technology) ঠিক এরকম একটি প্রোগ্রামিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে প্রায় দেড় যুগ আগে! আমরা ভাবলাম, তাহলে আমরা বাংলা ভাষাতে স্ক্র্যাচের একটি বই লিখে ফেলি!
যেই ভাবা, সেই কাজ! আমরা তিনজন মিলে বাংলা ভাষাতে এই বইটি লিখে ফেলেছি। আমরা খুব দ্রুততার সঙ্গে এই বইটি লিখেছি। কাজেই কিছু ভুল-ভ্রান্তি থাকতেই পারে। তবে, আমাদের যত্নের কমতি সেখানে ছিল না। বইটিতে আমরা প্রোগ্রামিং শেখানোর গতানুগতিক পথে না হেঁটে বরং বিভিন্ন কাজ করে দেখিয়েছি। প্রোগ্রামিংয়ের অনেক প্রচলিত শব্দ ও সংজ্ঞা আমরা সযত্নে এড়িয়ে গিয়ে প্রোগ্রাম তৈরিতেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছি, যেন শিশুরা প্রোগ্রামিংয়ের আনন্দ খুঁজে পায়। প্রোগ্রামিংয়ের বিষয়টি যেন তারা লেখাপড়ার মতো চিন্তা না করে খেলা হিসেবে গ্রহন করে। আশা করি, বইটি আমাদের শিশুদের চিন্তাজগতকে সমৃদ্ধ করবে।
সূচীপত্র
ভূমিকা
লেখক পরিচিতি
অধ্যায় ১ : প্রোগ্রামিং – কেন দরকার?
অধ্যায় ২ : স্ক্র্যাচে অ্যাকাউন্ট তৈরি
অধ্যায় ৩ : স্ক্র্যাচে প্রথম প্রোগ্রাম
অধ্যায় ৪ : স্প্রাইট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা
অধ্যায় ৫ : স্ক্র্যাচ দিয়ে আঁকাআঁকি
অধ্যায় ৬ : একটুখানি জ্যামিতি
অধ্যায় ৭ : অপারেটর ব্লক
অধ্যায় ৮ : আরো একটু জ্যামিতি
অধ্যায় ৯ : তিনটি মজার প্রোগ্রাম
অধ্যায় ১০ : সহজ অ্যানিমেশন
অধ্যায় ১১ : মিনি করল গোল
অধ্যায় ১২ : জিপিএ ক্যালকুলেটর
অধ্যায় ১৩ : স্ক্র্যাচ দিয়ে মজার গল্প তৈরি
অধ্যায় ১৪ : রাস্তায় গাড়ি চলাচল
অধ্যায় ১৫ : নিউটনের মাথায় আপেল পড়া
অধ্যায় ১৬ : ফুলের পাপড়ি আঁকা
অধ্যায় ১৭ : সংখ্যার মজার খেলা
অধ্যায় ১৮ : আরো বেশি প্রোগ্রামিং</br.