Note : All deposit is refundable
একদিন অবাক হয়ে দেখি সােনা আমাদের বাগানে বসে আছে। বিকেলবেলা। আমাদের মফস্বল শহরে মাঘ গিয়ে ফারুন পড়েছে। বিকেলবেলা সূর্যের শেষ আলােয় বড় সুন্দর দেখায় শহরটি। অদূরে নদী, নদীর তীর জুড়ে ধুধু বালিয়াড়ি। বহুদূরে নদীর চরে ফাল্গুন মাসের বিকেলবেলায়ও পাতলা একটা কুয়াশার রেখা পড়ে। একটা দুটো গাঙচিল অনবরত নদীর ওপর চক্কর খায়, জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে চেলামাছ তুলে নেয় ঠোটে। আর আছে নৌকা। কত রকমের যে! মহাজনী (নৗকা, পানসি নৌকা, জেলে নৌকা, কেরায়া নৌকা। অনবরত পুবে যায় নৌকা, পশ্চিমে যায়।
সােনাকে প্রথম দেখি আমি। হাঁটুতে মাথা গুঁজে বসে আছে হাসুহেনা ঝােপটার কাছে। আমি তখন খেলতে যাচ্ছিলাম মাঠে। সােনাকে দেখেই খেলার কথা ভুলে যাই। দৌড়ে বাগানে গিয়ে ঢুকি। তার আগে চেঁচিয়ে সারাবাড়ি মাত করে ফেলি। সােনা এসেছে। সােনা এসেছে। | সােনা আমাদের কাজের ছেলে। আমার বয়সী। দশ-বারাে বছর হবে। খুব ছােটবেলা থেকে আমাদের বাড়িতে আছে সােনা। বাবা ওকে কুড়িয়ে পেয়েছিলেন।
আমার বাবা থানার বড় দারােগা। আগে ছিলেন বরিশালের পিরােজপুর থানায়। সেখানেই একদিন এক ঝােপের ধারে পাঁচ বছরের সােনাকে কুড়িয়ে পান। গায়ে প্রচণ্ড জুল ছিল সােনার। অজ্ঞান হয়ে পড়ে ছিল ঝােপঝাড়ের ধারে। বাবা গিয়েছিলেন ডাকাত ধরতে।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল (জন্মঃ ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২) হলেন একজন বাংলাদেশী লেখক, পদার্থবিদ ও শিক্ষাবিদ। তাকে বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লেখা ও জনপ্রিয়করণের পথিকৃত হিসাবে গণ্য করা হয়। এছাড়াও তিনি একজন জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক এবং কলাম-লেখক। তার লেখা বেশ কয়েকটি উপন্যাস চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে। তিনি বর্তমানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের একজন অধ্যাপক এবং তড়িৎ কৌশল বিভাগের প্রধান।