Note : All deposit is refundable
সেই কতকাল আগে থেকে মানুষ গল্প শুনতে চেয়েছে। গল্প শোনার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। গুহাচারী মানুষেরা জানতে চেয়েছে পশু শিকারের কাহিনি। আগুনের চারপাশে গোল হয়ে বসে শুনেছে শিকারের বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা। কথক নিপুণ কৌশলে গল্পকাহিনির কাঠামো তৈরি করেছে। রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির সৃষ্টি করে গল্পকাহিনিগুলো বুনেছে।
আদিকালের মানুষেরা সৃষ্টি রহস্য আর প্রাকৃতিক শক্তির কৌতুহল মেটাতে গিয়ে সৃষ্টি করেছে নানা ধরনের বিচিত্র উপখ্যান, কাহিনি, লোকগাথা, গল্প। এভাবেই, তৈরি হয়েছে লোককাহিনি। কোনো এক আদিবাসীদের পুরাকথায় শুধু পানি আর পানি। আর নিচে ছিল মাটি।’ লোককাহিনির বেশিরভাগ গল্পে রয়েছে আদিম সৃষ্টি রহস্যের কথা। প্রাচীনকালের মানুষ রাতের নক্ষত্রভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে কল্পনাশক্থিকে বিস্তারিত করতে চেয়েছে। বিভিন্ন দেশের প্রচলিত লোককাহিনি আর উপকথার এক ভিন্ন জগত রয়েছে। সাধারণ মানুষের সৃ্টি এই কাহিনিগুলো আপামর মানুষের আশা-আকাঙ্কা, কামনা-বাসনা, স্বপ্ন, ইচ্ছে আর সুখ-দুঃখের অনুভূতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। সমাজের নিচুতলার অন্ধকারে ডুবে থাকা যে পিলসুজ মানুষদের শ্রমে তিল তিল করে সভ্যতার ভিত্তিভূমিটি গড়ে ওঠে সেই মানুষদের স্বপ্ন পূরণের ইচ্ছে মিশে থাকে লোককাহিনিগুলোতে তাদের বঞ্চিত জীবনের গভীরে অন্তলীন হয়ে থাকে ন্যায়বিচারের জন্য আকুতি। সেই আকুতি এসব কাহিনিতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। এসব কাহিনির প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বিশ্বজনীনতা। অনেক লোককাহিনিতে মিথ মিশে আছে
েআদিমকালের মানুষ খাদ্য সংগ্রহের জন্য বনেজঙ্গলে গিয়ে পশু শিকার করতো। শিকার করে আনার পর আগুনের চারপাশে বসে শিকারকালীন সময়ের উত্তেজনাপূর্ণ, রোমাঞ্চকর ঘটনাগুলো নিয়ে গল্প করতো। তারা তখন সেই রহস্যময় অর্দশ্যলোকের উল্লেখ করতো যেখানে চলে গেছে গেছে মৃত শিকারগুলো । তারা এ কথা গভীরভাবে বিশ্বাস করতো যে সেই শিকারগুলো আবার ফিরে আসবে। সেই অদৃশ্যলোকের কোথাও বাস করেন পশুপতি । যিনি মানুষের জন্ম-মৃত্যুর ধারাকে নিয়ম্ত্রণ করে থাকেন। তাদের জীবনধারণের জন্য পশুর দলকে পাঠিয়ে থাকেন। তিনি যদি পশু পাঠাতে কখনো বিফল হন তাহলে মানুষকে অভুক্ত থাকতে হয়। আদিম সমাজ ভালোভাবেই বুঝতে পারে যে শিকারের মাঝেই তাদের জীবনের তাৎপর্য রয়েছে।