পারলে গােধূলির এই রং গণ্ডুষে শুষে নিত ধনপতি। ওই কেশ-কালা ফিঙেটির মতাে দোল খেত কর্ণের মাথায়। পশ্চিমের কমলা সূর্যের মতাে দিনশেষে ডুবে যেত ভ্রমরার জলে। গিরিমাটিরঙে রাঙিয়ে দিত আকাশের কোল।
কিন্তু তাকে যেতে হবে সিংহল দেশে, নােনা পথে—রাজার নির্দেশ। যে-জন চন্দনে শিবের আরাধনা করে সে সপ্তদ্বীপা অবনীতে রাজা হয়, যে শ্রীহরির সামনে চমরি দুলিয়ে বন্দনা করে সে রথে চড়ে স্বর্গে যায়; কিন্তু এক তােলাও চন্দনকাষ্ঠ নেই রাজভাণ্ডারে, চমরি নেই একটিও। ভাণ্ডারীর প্রয়ােজন গজের জন্য লবঙ্গ, তুরঙ্গের সৈন্ধব লবণ, রাজরানিদের পান্না, নীলা, মানিক, প্রবাল, মােতি ও পলা, বামাদের শত্থালংকার, কুঙ্কুম, কস্তুরি ও গন্ধচুয়া এবং বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের পাহাড়িয়া ভােটকম্বল। রাজভাণ্ডারী বলে, যত ঋণী সদাগর ছিল তারা সব এখন ধনী। গেহ থেকে এক পা ফেলার মতি নেই কারাে। শেষ দক্ষিণ পাটনে গিয়েছিল জয়পতি দত্ত, ধনপতির বাবা। ডিঙার পর ডিঙা ভরে এনেছিল নানা সামগ্রী। তারপর আর কোনাে সাধু ওমুখাে হয়নি, কোনাে সদাগর আসেনি ওদেশ হতে। ফলে গুয়ারও টান। রায়, কীসে সাজা হবে তাম্বুল, কী দিয়ে রাখবেন মান!