বুননা পাড়ার মুড়ােতে ঝাকড়া অশােখ গাছের ছায়া। গেল বছর এখানে একটা সবজে রঙের টিউকল বসিয়েছে সরকার। তার আগে বেশির ভাগ বুননা পাড়ার লােকে জল খেত বুড়িগাঙের, যাদের ভাগ্য ভালাে তারা যেত গাঁয়ের বারােয়ারি কুয়গাটায় জল আনতে। দড়ি-বালতি সেখানে ধপাস করে ফেলে দিয়ে জল তােল। খ্যাচালের ঘটাং ঘটাং শব্দ, পেশির টানে জলভরা বালতি উঠবে উপরপানে, কষ্ট বলতে চরম কষ্ট। তবু দুর্গামণি যেত মাটির কলসী নিয়ে, লাইন দিয়ে জল আনত। পাড়ার বউ-ঝিউড়িদের টীকা-টিপ্পনী কানে আসত তার। ভালাে লাগত না পরনিন্দা পরচর্চা শুনতে। বেশি বয়সে মা-হওয়ার সুখ যেমন জ্বালাও কম নয়। দু-চার শব্দ কানে বােলতার হুল ঢােকায়। তা-ও নেই নেই করে দেখতে-দেখতে রঘুর বয়স ষােল ছাড়াল। চুনারাম সেবার কথায় কথায় বলছিল, আমাদের ঘরের রঘুটা তাে গায়ে-গতরে হয়েছে, এবার ওর বিয়ে-থা দিয়ে লেটা চুকিয়ে দাও।