বিশ্বের সবচেয়ে বড় সায়েন্টিফিক রিসার্চ ফ্যাসিলিটি সার্ন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত। সার্ন এর প্রতিভাবান বিজ্ঞানি লিওনার্দো ভেট্রা এবং তার মেয়ে ভিট্টোরিয়া ভেট্রা মিলে গোপনে একটা এন্টিম্যাটার আবিষ্কার করেছে। যার ১ গ্রামের চারভাগের একভাগ দিয়ে একটা শহরের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো যায়। তবে এটার একটাই সমস্যা হলো বাতাসের সংস্পর্শে এলেও এটি বিস্ফোরণ ঘটাবে। আর ঐ একফোটা এন্টিম্যাটার পারবে একটা শহর নিশ্চিহ্ন করে দিতে। লিওনার্দো ভেট্রা কে খুন করে কেউ একজন সেই এন্টিম্যাটার নিয়ে যায়। খুনি যাওয়ার আগে নিজের একটা চিহ্ন বা সিম্বল ছেড়ে যায় বিজ্ঞানী লিওনার্দো ভেট্রার বুকে । সিম্বল টা ছিল এম্বিগ্রামে। আর সেটা হলো "ইলুমিনাটি"। ইলুমিনাতি একটি গুপ্ত সংগঠন। ইলুমিনাতি শব্দের অর্থ "যারা কোনো বিষয়ে বিশেষ ভাবে আলোকিত বা জ্ঞানার্জনের দাবী করে" অথবা "বিজ্ঞান বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান সম্পন্ন কোনো দল"। প্রায় ১০০ বছরের আগে তারা গায়েব হয়ে যায়। চার্চ সবসময় চেয়েছিলো বিজ্ঞানের সাথে যেন ধর্ম মিশে না যায়। আর ইলুমিনাটি চেয়েছিলো বিজ্ঞান দিয়ে ধর্মকে প্রমাণ করতে। যে কারণে চার্চের প্রধান শ্ত্রু ছিল ইলুমিনাটি। বিজ্ঞানি গ্যালিলিও চার্চের হাতে খুন হয়েছিলেন একই কারনে। আর এসব কারণেই আন্ডারগ্রাউন্ডে সংঘটিত হতে থাকে ইলুমিনাটি। খুনির রেখে যাওয়া সেই এম্বিগ্রামের পাঠোদ্বার করতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিম্বলজিস্ট রবার্ট ল্যাংডন হাজির হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান সার্ন এ। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় মৃত লিওনার্দো ভেট্রার মেয়ে ভিট্টোরিয়া। ভিট্টোরিয়া ও ল্যাঙডন জানতে পারে, এন্টিম্যাটারটা রয়েছে ভ্যাটিকান সিটিতে। যার ২৪ ঘন্টার ব্যাকআপ ব্যাটারি শেষ হওয়া মাত্র ঘটবে এক বিশাল বিস্ফোরণ। ভ্যাটিকান সিটির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় ভিট্টোরিয়া ও ল্যাঙডন, ভ্যাটিকান সিটির পোপ মারা গেছে ১৪ দিন আগে। নিয়ম মত ১৫ তম দিন নতুন পোপ নির্বাচন করা হবে। এই প্রক্রিয়ার নাম কনক্লেভ। ১৫ তম দিন রাতে সারা পৃথিবীর প্রায় ১৬৫ জন কার্ডিনাল কে নিয়ে সিস্টিন চ্যাপেলে বসে গোপন সভা। এ সভার মাধ্যমেই নতুন পোপ নির্বাচন করা হয়। আর এই সভা চলাকালীন সময়ে চ্যাপেলের দরজা বাইরে থেকে তালা মেরে দেয় সুইস গার্ড। কনক্লেভ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ বেরুতে পারবেনা। কিন্তু জানা যায় নির্বাচনের সবচেয়ে জনপ্রিয় ৪ জন প্রার্থী নিঁখোজ। তাদের এই নিখোঁজ হওয়ার পিছনেও রয়েছে শক্তিশালী ইলুমিনাতি। একে একে খুন হন চারজন কার্ডিনাল, বুকে থাকে ইলুমিনেটির পোড়া সিম্বলগুলো। স্মরণকালের সবচাইতে ভয়াবহ অস্ত্রের হাত থেকে ভ্যাটিকান সিটিকে রক্ষার জন্য ল্যাংডন ঝাঁপিয়ে পড়ে রোমের উপর। সাথে থাকে সুন্দরী পদার্থবিদ-জীববিজ্ঞানী ভিট্টোরিয়া ভেট্টা। তারা দুজনে চষে বেড়ায় রোমের অস্পৃশ্য সব এলাকা- পরিত্যক্ত ক্যাথেড্রাল, বদ্ধ কবরখানা, বিশাল বিশাল গির্জায়; একসময় তারা আবিষ্কার করতে পারে পৃথিবীর সবচে গোপন এবং সুরক্ষিত ভোল্টটি। রহস্য কি বাড়ছে নাকি এগিয়ে যাচ্ছে সমাধানের পথে??? পোপদের খুনি কে? এন্টিম্যাটার চুরির পিছনে উদ্দেশ্য কী? এত বছর পরে কেনো আবার দেখা দিলো ইলুমিনাতি? নাকি ইলুমিনাতির নাম ব্যবহার করে অনয কেউ করছে এসব কাজ? জানতে হলে পড়েতে হবে অ্যাঞ্জেলস অ্যান্ড ডিমনস।
ড্যান ব্রাউন (জুন ২২, ১৯৬৪) একজন মার্কিন রোমাঞ্চকর উপন্যাস লেখক। পৃথিবীব্যাপী আলোড়ন তোলা উপন্যাস দ্য দা ভিঞ্চি কোড রচনার জন্য তিনি সবচেয়ে পরিচিত যা ২০০৩ সালে প্রকাশিত এবং সর্বাধিক বিক্রী হওয়া উপন্যাস। ব্রাউনের উপন্যাসের মূল উপজীব্য হচ্ছে বর্ণজটীয় সংকেতায়ন বা ক্রিপ্টোগ্রাফি, রহস্যময় সংকেত ও এদের দ্বৈতমানে (ইংরেজি: dual-meaning)। তাঁর উপন্যাসে এ ব্যাপারগুলো ঘুরে ফিরে বারবার আসে। বর্তমানে ব্রাউনের লিখা উপন্যাস ৪০ টিরও অধিক ভাষায় অনুদিত হয়েছে।