উপন্যাস পড়ার সময় আমাদের ভিতর ঠিক কী হয়? আর কীভাবেই-বা উপন্যাস তার অনন্য ফল সৃষ্টি করে, যে ফল ছবি থেকে, চলচ্চিত্র থেকে বা কবিতা থেকে এত পৃথক? এই চিন্তামূলক, গভীরভাবে ব্যক্তিগত বইটিতে, ওরহান পামুক আমাদের লেখক ও পাঠকদের বিশ্বে নিয়ে যান, প্রকাশ করেন তাঁদের অন্তরঙ্গ যোগাযোগ। পামুক ‘অকপট’ কবিদের যাঁরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে, প্রগাঢ়ভাবে, অসচেতনভাবে লিখে থাকেনও ‘ভাব প্রধান’ কবিদের : যাঁরা চিন্তাপ্রধান, আবেগাশ্রয়ী, প্রশ্নমুখর ও লেখা শব্দের কৃৎকৌশলের প্রতি জাগ্রত মধ্যে পার্থক্যের বিষয়ে বিচরণ করেন। যৌবনে পড়া প্রিয় উপন্যাসগুলির দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে, টলস্টয়, দস্তয়েভস্কি, স্তাঁদাল, ফ্লবেয়ার, মান ও নাইপলের লেখা খুঁজে দেখে পামুক অকপট ও চিন্তাপ্রধানের ভিতর আন্দোলিত হতে থাকেন, অন্বেষণ করেন কাক্সিক্ষত ভারসাম্য, ঔপন্যাসিকের নির্মাণ-কৌশলের কেন্দ্রে যার অবস্থান, তিনি উপন্যাসের দৃশ্যগত ও ইন্দ্রিয়গত শক্তি নিয়ে মগ্ন থাকেন। সে শক্তির প্রাণবন্ত নিসর্গচিত্র নির্মাণের ক্ষমতা এই মুহূর্তের স্থান-কালকে প্রায় মুছে দেয়। এই অনুসন্ধানের পথে, পামুক, চরিত্র, ছক, সময় ইত্যাদির উপাদানকে বিবেচনায় আনেন, যে উপাদান গল্পবিশ্বের ‘মিষ্টি বিভ্রমকে’ রচনা করে। উপন্যাসের গভীরে নিমজ্জিত হওয়ার আনন্দের সাথে পরিচিত ব্যক্তিমাত্রেই আধুনিক উপন্যাস শিল্পের একজন অগ্রণী শিক্ষকের এই বইটি উপভোগ করবেন, শিক্ষা নেবেন গ্রন্থকারের উপলব্ধ সত্য থেকে।