‘পাকিস্তানের জন্মমৃত্যু-দর্শন’কে বলা যেতে পারে লেখকের স্মৃতিকথা। স্মৃতির আধারেই বিধৃত হয়েছে ইতিহাস। এ ইতিহাস কোনো বইয়ে পাওয়া যাবে না। মানুষের মনোলোকের ইতিহাস উঠে এসেছে এখানে।
এ বইয়ের ‘দর্শন’ শব্দটি ‘দেখা’ ও ‘ফিলসফি’-দুটো অর্থই ধারণ করেছে। পাকিস্তানের জন্ম ও মৃত্যুকে লেখক যেভাবে দেখেছেন তার বর্ণনা যেমন আছে এ বইয়ে, তেমনই আছে পাকিস্তান মানক রাষ্ট্রটির জন্ম ও মৃত্যর পেছনে সক্রিয় ছিল যে দর্শন তারও অনুপুঙ্ক্ষ বিশ্লেষণ। পাকিস্তানের জন্মের দর্শনটি ছিল একান্তই অপদর্শন। অপদর্শন ছিল বলেই পাকিস্তানের মৃত্যু ছিল অপরিহার্য। বাংলাদেশের জন্মের যে দর্শন, সেই দর্শনের মধ্যেই নিহিত ছিল পাকিস্তানের মৃত্যুর দর্শন। পাকিস্তানের এই জন্মমৃত্যুর দর্শন সম্পর্কে এ-রকম মনোগ্রাহী বিশ্লেষণ আর কোথাও পাওয়া যাবে না। লেখকের জীবন কেটেছে গ্রামে ও মফস্বল শহরে। আমাদের ইতিহাস বইগুলোতে গ্রামের চিন্তা-চেতনার পরিচয় কিংবা মফস্বল শহরের মানুষের অবদান সম্পর্কে কিচুই লেখা হয় না। ‘পাকিস্তানের জন্মমৃত্যু-দর্শন’ এক্ষেত্রেও একটি ব্যতিক্রমী পুস্তক। সাধারণ পাঠক যেমন, তেমনই ইতিহাস লেখকগণও এ বইয়ে অনেক ভাবনার খোরাক পাবেন।