দীনলক্ষ্মী কথা শেষ করেনি। আরও কিছু হয়ত তার বলার ছিল, হয়ত সে মহীন্দ্রের নাম ধরেই স্নেহলতাকে ডাকত, কিন্তু তার আগে বাঁধানাে কুয়াের ভেতরে বালতি নামিয়ে দিয়ে টেনে তুলতে তুলতে স্নেহলতা সন্ধ্যামালতীর ঝাড়ের দিকে তাকিয়েছিল। তখন পশ্চিমের নারকেল গাছের ছায়া, কাছেই একটি জবা গাছের ঝাড় আর নারকেল গাছগুলাের কোলের কাছের কাপিলার কচার ছায়া মিলেমিশে সন্ধ্যামালতীর ফুলের রঙ একটু যেন কালটে করে তুলেছে। অথচ দিনের প্রথম দিকে, এমনকি দুপুরের পরও এই গাছের ফুলগুলাে কত উজ্জ্বল দেখায়। এই পর্যন্ত ভেবেওছে স্নেহলতা। কুয়ােয় নামিয়ে দেয়া বালতি জল ভরে টেনে তােলার আগে একটুক্ষণ ভাসমানই থাকে, তারপর জলে বালতি ভরে গেলে হাতে যখন দড়ির টান লাগে, ঠিক সেই সময়ে দীনলক্ষ্মী ডাক দেয়াটা মিলে গেলে, এই মিলে যাওয়াতেই দীনলক্ষ্মীর মহীন্দ্রকে দেখে ডাকের উত্তেজনার সঙ্গে সেও যেন প্রস্তুতই ছিল উত্তর নিতে, তাই বালতির জলে ডুবে যাওয়ায় টান আর দীনলক্ষ্মীর ডাক মিলেমিশে যাওয়ার এই মুহূর্তমাত্রে স্নেহলতা উত্তর নেয়, কী হইছে, ও মা ঠাইরেন, ডাকেন কেন?