অবশ্য, উপরিউক্ত প্রশ্নের একান্ত ব্যক্তিগত উত্তরও রয়েছে। বিজ্ঞান আমাদের জানা বিষয়ের জ্ঞান প্রদান করে। কিন্তু আমরা খুব সামান্য বিষয়ই জানতে পারি। আমরা কতটুকু জানতে পারি না তা যদি ভুলে যাই, তাহলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে আমরা উদাসীন হতে পারি। অপরপক্ষে, বিশ্বজগৎ সম্পর্কে আমাদের যেখানে অজ্ঞতা রয়েছে সেখানে ধর্ম বিশ্বজগৎ সম্পর্কে এমন এক বিচারবিযুক্ত বিশ্বাসের সৃষ্টি করে যে, বিশ্বজগৎ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান আছে। এরূপ বিচারবিযুক্ত বিশ্বাস সৃষ্টির দ্বারা ধর্ম বিশ্বজগতের জ্ঞান সম্পর্কে অযৌক্তিক আস্ফালন প্রকাশ করে। তীব্র আশা-নিরাশার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা বেদনাদায়ক। কিন্তু আমরা যদি সুখদায়ক রূপকথা ব্যতীত জীবনধারণ করতে চাই, তাহলে আমাদের অবশ্যই দুঃখবেদনা ধৈর্যের সঙ্গে সহ্য করতে হবে। তাই দর্শনের উত্থাপিত প্রশ্নসমূহকে ভুলে যাওয়া আমাদের জন্য যেমন শুভ হবে না তেমনি সেসব প্রশ্নের সন্দেহাতীত উত্তর পেয়েছি বলে বিশ্বাস করা ঠিক হবে না। আমাদের যুগে যারা দর্শনচর্চা করেন তাদেরকে দর্শন এখনাে প্রধানত যে শিক্ষা দেয় তাহলাে, নিশ্চয়তা ব্যতীত কীভাবে জীবনযাপন করা যায়, এবং নিশ্চিত জীবন না থাকলেও কীভাবে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মাঝে অসহায় না হয়ে জীবনযাপন করা যায়।