সঙ্গে সঙ্গে আজকালকার কবিতার আর একটা বিশেষত্ব নজরে পড়ে। সেটা হচ্ছে কোনাে কবিতা সমগ্রভাবে হয়তাে মনে কিছু দাগ কাটে, কিন্তু কোনাে বিশেষ পক্তি কিংবা কোনাে বিশেষ ছবি সব সময় মনে থাকে না। অর্থাৎ আবেগ দু একটা ছবিতে কিংবা দু একটা লাইনে দানা না বেঁধে সমস্ত লেখায় শিথিলভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেক সময় উচ্ছাসে মিলিয়ে যায়। কবি শক্তিমান হলে এই বিস্তারের ফল যে শুভ হয় সেটা নিঃসন্দেহ। কিন্তু কবিদেরও বিচ্যুতি হয় বারে বারে; অনেক সময় বিলম্বিত লয়ে বিস্তারটা আবেগ-প্রসূত না হয়ে ছন্দের ও অভ্যাসের ঠেলায় হয়। এবং যেহেতু দশটা কবিতা লিখলে বড় জোর হয়তাে একটা উৎরােয়, সেহেতু পাঠকদের বিড়ম্বনার সম্ভাবনা আজকাল অনেক বেশি।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (Sunil Gangapadhyay) বিংশ শতকের শেষার্ধে আবিভুর্ত একজন প্রথিতযশা বাঙালি সাহিত্যিক। ২০১২ খ্রিস্টোব্দে মৃত্যুর পূর্ববর্তী চার দশক তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা-ব্যক্তিত্ব হিসাবে সর্ববৈশ্বিক বাংলা ভাষা-ভাষী জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন। বাঙলাভাষী এই ভারতীয় সাহিত্যিক একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট হিসাবে অজস্র স্মরণীয় রচনা উপহার দিয়েছেন। তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার জীবনানন্দ-পরবর্তী পর্যায়ের অন্যতম প্রধান কবি। একই সঙ্গে তিনি আধুনিক ও রোমান্টিক। তাঁর কবিতার বহু পংক্তি সাধারণ মানুষের মুখস্থ। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় "নীললোহিত", "সনাতন পাঠক" ও "নীল উপাধ্যায়" ইত্যাদি ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন।