দুলে দুলে দুলে দুলে মাটি ওঠে ফুলে ফুলে বাড়ি যাও বাড়ি যাও বাড়ি যাও বাড়ি যাও, দেখাে হাতলণ্ঠনে আছে কিনা কেরােসিন। দেখাে পথ দেখে চলাে, পেটে খিদে বড় খিদে, বাড়ি গেলে সব পাবে লেবু আছে নুন আছে, কঁচা লঙ্কাও গাছে, আছে আছে সব আছে। নেই নেই, পান্তার হাঁড়িতে যে হু হু হাওয়া, কেন এত হু হু হাওয়া ফুটো হাঁড়ি চোখ আঁকা, জল ছছাটে আঁকাবাঁকা চৌকাঠে ভাঙা শাখা নেই নেই ভাত নেই, আমানি ও চিড়ে নই, গুড় নেই খই নেই। কী খাবে গাে খাবেটা কী, খিদে জ্বলে দাউ দাউ পেটে কিল পেটে কিল বউ ছেলে কোথা গেল, ছােট মেয়ে কঁদুনিটা, সেই মেয়ে কোথা গেল ঘরে নেই কেউ নেই, আলাে নেই ঘর নেই, দেয়ালের চকখড়ি দাগ নেই দাগ নেই, বসুধারা মুছে গেছে, ঘরভরা ভাঙা কাচে তালগাছে কেউ নেই, পুকুরেও কেউ নেই,
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (Sunil Gangapadhyay) বিংশ শতকের শেষার্ধে আবিভুর্ত একজন প্রথিতযশা বাঙালি সাহিত্যিক। ২০১২ খ্রিস্টোব্দে মৃত্যুর পূর্ববর্তী চার দশক তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা-ব্যক্তিত্ব হিসাবে সর্ববৈশ্বিক বাংলা ভাষা-ভাষী জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন। বাঙলাভাষী এই ভারতীয় সাহিত্যিক একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট হিসাবে অজস্র স্মরণীয় রচনা উপহার দিয়েছেন। তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার জীবনানন্দ-পরবর্তী পর্যায়ের অন্যতম প্রধান কবি। একই সঙ্গে তিনি আধুনিক ও রোমান্টিক। তাঁর কবিতার বহু পংক্তি সাধারণ মানুষের মুখস্থ। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় "নীললোহিত", "সনাতন পাঠক" ও "নীল উপাধ্যায়" ইত্যাদি ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন।