রবীন্দ্রনাথের সাহচর্য দীর্ঘদিন লাভ করিয়াছেন, বাংলা সাহিত্যের লেখকদের মধ্যে এমন সংখ্যা বেশি নয়। এই প্রসঙ্গে শ্ৰীপ্ৰমথনাথ বিশীর পর একমাত্র সৈয়দ মুজতবা আলীর নামই করা যায়। সৈয়দ মুজতবা আলীর নিকট একটি পূর্ণাঙ্গ কবিস্মৃতি লিখিবার অনুরোধ আমরা অনেকবার করিয়াছিলাম। লিখিবার বাসনাও তাঁহার হইয়াছিল। কতকটা সময়াভাব ও কতকটা আলস্যবশত শেষ পর্যন্ত তাহা হইয়া ওঠে নাই, যদিও তিনি বলিতেন গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ সম্বন্ধে বিভিন্ন স্থানে প্রবন্ধে যাহা লিখিয়াছেন তাহা সাজাইয়া সম্পাদন করিয়া একটি পূর্ণাঙ্গ স্মৃতি-গ্রন্থের রূপ দেওয়া বিশেষ আয়াসসাধ্য নয়। “গুরুদেব ও শান্তিনিকেতন’ গ্রন্থটির প্রকাশ তাহার সেই অপূর্ণ বাসনা পরিপূরণের একটি প্রয়াস মাত্র। এই গ্রন্থ সংকলন কালে “গুরুদেব” নামক প্রথম অংশে ব্যক্তি রবীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রসঙ্গীত ও রবীন্দ্ৰ-সাহিত্য সম্পর্কিত রচনাগুলি সংকলিত হইয়াছে। শান্তিনিকেতন আশ্রম ও অন্যান্য আশ্রম-সতীর্থদের সম্বন্ধে মূল্যবান রচনাগুলি অন্তর্ভুক্ত হইয়াছে “শান্তিনিকেতন’ নামক দ্বিতীয় অংশে। ‘গুরুদেব’ অংশের রচনাগুলির বিস্তৃত পরিচয় গ্রন্থ-পরিচয়ে দেওয়া হইয়াছে। গ্রন্থের দুই অংশেরই রচনাগুলি ঘটনা-পরম্পর্য ক্রম অনুসারে সাজানো হইয়াছে। ত্রুটিবিচূতি থাকিলেও থাকিতে পারে। সহৃদয় পাঠক কেহ সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করিলে বাধিত হইব।