প্রোগ্রামিং শেখাটা ঠিক অন্য লেখাপড়ার মতো নয় যে, বই পড়লাম, উদহারণ দেখলাম, কয়েকটি অনুশীলনীর সমাধান করে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলাম কিংবা কিছু প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করে ফেললাম। প্রোগ্রামিং হচ্ছে একটি বিশেষ দক্ষতা (skill), যেটি অর্জন করার জন্য প্রয়োজন বিষয়টির ওপর পরিষ্কার ধারণা এবং পর্যাপ্ত চর্চা। শুধু বই পড়ে গেলে এবং চর্চা না করলে প্রোগ্রামিং শেখা হয় না। আবার কেন কী করছি, সেটি না বুঝে শুধু চর্চা করলেও কাজ হয় না। বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের কাছে প্রোগ্রামিং বিষয়টি একটু কঠিন মনে হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে, যার একটি হচ্ছে, বাংলা ভাষায় ভালো বইয়ের অভাব। এই অভাবটি আমরা পূরণ করার চেষ্টা করছি বেশ কয়েক বছর ধরেই। আমার সৌভাগ্য যে, এক্ষেত্রে কিছুটা সফলও হয়েছি, কারণ আজকাল কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে আমার ‘কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ১ম খণ্ড’ বইটি থাকে, এমনকি স্কুল-কলেজের অনেক ছেলেমেয়েরাও বইটি পড়ে প্রোগ্রামিং শিখছে। বইটির দ্বিতীয় খণ্ড, তৃতীয় খণ্ড, প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধান শুরু করার জন্য ‘৫২টি প্রোগ্রামিং সমস্যা ও সমাধান’ এবং প্রোগ্রামিং শিখতে গিয়ে যারা নিজেদেরকে গণিতে দুর্বল ভাবে, তাদের জন্য ‘গণিত করব জয়’ আমরা প্রকাশ করেছি। তারপরও আমার মনে হচ্ছিল, শিক্ষার্থীরা যখন কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ১ম খণ্ড বইটি পড়ে, তখন তাদের আরো বেশি প্রোগ্রামিং চর্চা করা দরকার, অনুশীলন করা দরকার। তাই এমন একটি বইয়ের চিন্তা মাথায় আসে, যেখানে প্রচুর উদাহরণ থাকবে, সেই সঙ্গে থাকবে অনুশীলনী। তাহমিদ রাফির সঙ্গে আলোচনার পরে সে বইটি লিখতে সানন্দে রাজি হয়ে যায়। আমাদের দেশে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আইসিটি কোর্সে ‘সি প্রোগ্রামিং’ আছে। আবার দেশের হাতেগোনা কয়েকটি বাদে সব বিশ্ববিদ্যালয়েই সি ভাষা দিয়ে প্রোগ্রামিং শেখানো শুরু করা হয়। সেসব শিক্ষার্থী ছাড়াও যে-কেউ যখন প্রথম সি ভাষায় প্রোগ্রামিং শিখবে, তখন বইটি তার কাজে লাগবে। বইটি কেবল পড়লে হবে না, বইয়ের উদাহরণগুলো দেখে বুঝে তারপরে কম্পিউটারে টাইপ করে কম্পাইল ও রান করতে হবে। আউটপুট সঠিক আসলো কি না, বোঝার চেষ্টা করতে হবে, না বুঝলে বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তারপর অনুশীলনীর প্রতিটি সমস্যার সমাধান করতে হবে। আশা করি, বইটির সমস্যাগুলো অনুশীলন করলে শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামিংয়ের ভিত্তি মজবুত হবে।