সময়টা সন্ধ্যাকালের আগে। একটু আগেই এক পশলা বৃষ্টি পড়েছে। আকাশ জুড়ে কালো মেঘের আনাগোনা। নদীর ওদিকটায় দেবী বিসর্জন চলছে। দূর থেকে ভেসে আসছে ঢাকের ধ্বনি। নদীর এদিকটায় এমনিতেও কেউ আসে না। নদীর পানির সাথে আউলা বাতাসের কানাকানিতে চারিদিকে যেন এক অপার্থিব পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। রাধিকার মাথা হতে রুপু আশীর্বাদের হাত সরায়। রাধিকার কাজল টানা চোখ রুপুর চোখে নিবদ্ধ। তার ঠোঁট কাঁপে, বিড়বিড় করে সে রুপুকে কিছু বলে, গুড়গুড় মেঘের ডাকে সে কথা আর শোনা যায় না। আবারও বৃষ্টি নামবে। চোখ বন্ধ হয়ে আসে রুপুর। সে অনুভব করে রাধিকার গায়ের মিষ্টি সুবাস তার কাছে এগিয়ে আসছে। রুপু হয়তো নিজেকে ছেড়েই দিতো কিন্তু তখনই তার চোখে ভেসে উঠে জমিদার বাড়ির দোতলার বদ্ধ ঘরের সেই মুহূর্তগুলোর স্মৃতি। সজোরে ধাক্কা দিয়ে রাধিকাকে রুপু ফেলে দেয়। মাটিতে ছিটকে পড়ে রাধিকা। গাছের গুঁড়ির সাথে বারি লেগে তার কপালের ডান পাশ কেটে রক্ত বেরোতে থাকে। রাধিকা রুপুর দিকে তাকায়। সেই চোখে কোন অভিযোগ ছিল না, ছিল কেবল একরাশ বিমূঢ়তা।