শুধু বর্ণবৈষম্য কিংবা অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই করেই যাওয়া নয়, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের তীব্র সমালোচনাকারী বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ হিসেবেও বাবাসাহেব আম্বেদকরের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। প্রকৃত অর্থেই তিনি ছিলেন এক বহুমুখী প্রতিভা। ভারতীয় দলিত রাজনীতির প্রবক্তা তথা সংগঠকরূপে তো বটেই, সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেও তিনি ছিলেন এক আপোশহীন যোদ্ধা। ভারতীয় সংবিধানের রূপকার এই মানুষটিই আবার ছিলেন হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়ের পারস্পরিক সম্পর্ক ও পাকিস্তান গঠনের আন্দোলন প্রসঙ্গে স্পষ্টবাদী এক অনন্য মতের প্রবর্তক। এগারোটি প্রবন্ধ সংকলিত এই গ্রন্থে পুনর্বার ফিরে তাকানো হল সমাজবিপ্লবী আম্বেদকরের ব্যতিক্রমী জীবন ও কর্মের উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন পর্বের দিকে।
শুরুটা হয়েছিল সুরাইয়াকে দিয়ে। একটি মেয়ে—কাজলকালো যার চোখ, রোদেপোড়া চকচকে মুখ কিন্তু আকর্ণবিস্তৃত চওড়া হাসি। সুরাইয়া—বিদ্যুৎচমকের মতো মুহূর্তেই যার মনভোলানো হাসি সশব্দ কান্নায় পরিণত হয়; বিপুল উদ্দীপনা বদলে যায় চরম নৈরাশ্যে; অনুপম অনুরাগ পরিণত হয় ভয়াবহ প্রতিশোধস্পৃহায়। সুরাইয়া—যার আছে একটি অজ্ঞাত অতীত, এক সাগর দুঃখ আর হার না মানা বিক্ষুব্ধ মনন। সুরাইয়া—যার গল্পটা শুরু হয়েছিল মনোরম এক প্রাণবন্ত পরিবেশ থেকে। আর শেষ হয় নরপিশাচ দানবের পাঞ্জায় আবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে। সুরাইয়ার সেই দানবের নাম মুয়াম্মার গাদ্দাফি। আফ্রিকার লৌহমানব নামে যিনি পরিচিত ছিলেন সারাবিশ্বে। যিনি বরিত হতেন লিবিয়ার নারীমুক্তির প্রবাদপুরুষ হিসেবে। অথচ তারই গোপন হেরেমে রক্ষিতা হিসেবে বন্দী ছিল শত শত নিষ্পাপ মেয়ে। প্রথমবার এ কথা শুনে হয়তো পাঠকমাত্রই অবিশ্বাসে আঁতকে উঠবেন। কিন্তু হেরেমবন্দী সুরাইয়ার হাত ধরে যখন আপনি প্রবেশ করবেন গাদ্দাফির হেরেমখানায়, এক কোমলপ্রাণ কিশোরীর ধর্ষিত হবার বর্ণনা শুনে আপনার চোখ জলে ভেসে যাবে।