বাজার আর সােজা রাস্তার প্রতি আকর্ষণ ছিল তার। মহল্লার ছােট বাজার নয়, যেখানে বাচাল মহিলারা খােশগল্প করতে এবং সন্ধ্যায় স্যুপে দেওয়ার ওগিলি কিনতে সূর্যাস্তের সময় জড়াে হয়, বরং কাছের ও দূরের মানুষকে হাতছানি দেওয়া একটি বিরাট, সর্বগ্রাসী হাটবাজার। এবং এই গাঁয়ে শুরু আর ওই ঝরনায় শেষ এমন ধূলিধূসর, জীর্ণ পায়ে চলা পথ নয়, বরং আদি-অন্তহীন প্রশস্ত, কালাে, রহস্যময় জনপদ। বিস্তর পরিক্রমণের পর এ ধরনের একটি জনপদযুক্ত দুটি হাটবাজারের সন্ধান পেল সে; ফলে তার পরিক্রমণও শেষ হলাে। একটি বাজার আফো, আরেকটি ইকে।
নেলসন ম্যান্ডেলা জন্মগতভাবে একজন দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষ। কিন্তু তিনি। আমাদের সকলের । তখন প্রশ্ন ওঠে না কোথায় তারা বাস করে এবং কেমন করে তারা জীবনযাপন করে। জেল থেকে বেরিয়ে আসার অল্প কিছুদিনের মধ্যে তিনি মানবিক সমঝােতার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। যখন পৃথিবী অনেক গােপন ঘূণায়। একজন অন্যজনের দিক থেকে মুখ ফেরায় তিনি তখন হয়ে ওঠেন প্রেমের প্রতীক। তিনি প্রতিবাদ করে বলেন- আমি কোনাে সাধু সন্ন্যাসী নই। আমি দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষ। তবে আমার দেশের মানুষের জন্য আমি হলাম রংধনু মানুষ। সত্যি কথা এবং সহজ কথা এই তার সমকক্ষ আর কেউ নেই।
আরও কিছু আছে। ধর্ম, শিল্প ও সাহিত্য সম্বন্ধেও আমাদের কিছু কিছু জানিবার সুযােগ আছে। এ বিষয়ে সর্বাগ্রে স্বর্গত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয়ের নাম করিতে হয়। প্রাচীন বাঙলার সাহিত্য এবং বৌদ্ধ ও ব্রাহ্মণ্য ধর্মের স্বরূপ সম্বন্ধে তিনিই সর্বপ্রথম আমাদের সজাগ করিয়াছিলেন। তাহার এবং স্বর্গত অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় মহাশয়ের প্রদর্শিত পথে শিল্প, সাহিত্য, ভাষা ও ধর্ম-সম্পৃক্ত সংবাদ আহরণ ও আলােচনায় স্বর্গত নগেন্দ্রনাথ বসু, গিরীন্দ্রমােহন সরকার, রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীযুক্ত জিতেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, নলিনীকান্ত ভট্টশালী, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, সরসীকুমার সরস্বতী, অর্ধেন্দ্রকুমার গঙ্গোপাধ্যায়, প্রবােধচন্দ্র বাগচী, নলিনীনাথ দাশগুপ্ত, চিন্তাহরণ চক্রবর্তী, দীনেশচন্দ্র ভট্টাচার্য, যােগেশচন্দ্র রায়, শ্রীমতী স্টেলা ক্ৰামরিশ প্রভৃতি পণ্ডিত ও মনীষীরা নানাদিকে। উল্লেখযােগ্য উদ্যম প্রকাশ করিয়া বাঙলার ইতিহাসের সীমা ও পরিধি বিস্তৃত করিয়াছেন।