Categories


ছেলেমেয়ে সবাই সমান - ৭

শান্তা আর সবুজ মালাদের বাড়ি বেড়াতে গেল। মালা খুব খুশি। ওরা মায়ের একটা ছােট বাবু হবে। এখন থেকেই মালার খুশি আর ধরে না। মালার ছােট মামা বেড়াতে এসেছেন ওদের বাসায়। মামাও গল্প করছিলেন সবার সাথে । মামা বলেন, মালা আমি জানি তােমার একটা ভাই হবে। ভাই হলেই ভাল হয়। এক বােন এক ভাই।

একথা শুনে দাদী বলেন, ছিঃ বাবা, এমন করে বলে না। আল্লাহ যা দেন তাই ভাল । মেয়ে হলেও ভাল, ছেলে হলেও ভাল । মালার মা হেসে বলেন, আল্লাহ যা দেন তাতেই আমরা খুশি। সব শুনে মালা বলে, আমি বােন পেলেও খুশি হব, ভাই পেলেও খুশি হব । মালাদের বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে সবুজ বলে, এরা কত ভাল । ছেলেমেয়েতে ভেদাভেদ করে

না।

 


হাসুর বুদ্ধি - ৯

আমি হাসু। আজকাল আমার মন খুব ভাল থাকে। সব। সময় হাসি-খুশি থাকি। কারণটা খুলেই বলি।

একদিন মাকে বললাম, গল্প বল। মা বলল, পারব না। শরীর ভাল নেই। এখন যাও। খুব মন খারাপ হল আমার ।

ভাবলাম, মা তাে এমন করেন না। গল্প বলেন আমায়। আজ মার শরীর ভাল না। একথা ভেবে মনটা নরম হল ।

 


হাসুর শরীর - ১০

আমি চোখ । বল তাে আমি কী করি?

ঠিক বলেছ। আমি দেখি ।।

আমি কান। বল তাে আমি কি করি?

ঠিক বলেছ। আমি শুনি।

 


গুড্ডুবুড়ার হাসির কাণ্ড গুড্ডুবুড়ার দারুণ কীর্তি

গুডুবুড়া তাে আবারও হাসির কাণ্ড করে ফেলল।

তারা বেড়াতে গেছে তার ফুপুর বাড়িতে। ফুপুর বাড়িতে একটা টিয়া পাখি আছে। সেই টিয়া পাখির ঠোট একেবারে লাল টকটকে।

গুডুবুড়া ভাবল, আহা, আমার ঠোটও যদি এই রকম টুকটুকে লাল হতাে। তাহলে কী মজাই না হতাে।

সে তার ফুপাত ভাই শান্তকে বলল, ভাইয়া, টিয়াপাখির ঠোট এত লাল কেন? শান্তর বয়স দশ বছর। সে ভীষণ দুষ্টু। সে বলল, টিয়াপাখি কী। খায়, দেখাে। তাহলেই বুঝবে, তার ঠোট লাল কেন?

শান্ত নিয়ে এল একেবারে টকটকে লাল কাঁচা মরিচ।

 


স্বপ্নবিলাসী পাখি

ছোট্র পাখিটা কোনো কাজই করে না। সে কেকবল স্বপ্ন দেখে এটা করবে, ওটা শিখবে। আর কিছু শিখতে গেলেই যত গণ্ডগোল। সে চেয়েছিল অনেক উঁচুতে উড়তে, পানিতে সাঁতার কাটতে কিংবা গান গাইতে। আলসেমীর জন্য কোনোটাই আর শেখা হলো না। শেষ পর্যন্ত তুষার ঝরা এক শীতের মধ্যে বিপদে পড়ে সে। আর তখন পাখিটার পাশে এসে দাঁড়ায় তার বন্ধুরা।


ভূতের সঙ্গে গুড্ডুবুড়ার সেল্ফি

গুডুবুড়ার বাসায় ভূতের উৎপাত হচ্ছে।

গুডুবুড়ারা থাকে একটা চারতলা বাসার চারতলায়। একদিন দুপুরবেলা। বাবা অফিসে। মা ঘুমুচ্ছেন। বড় বােন গুডুবুড়ি গেছে। গানের ক্লাস করতে। সারা বাড়ি নিঝুম। কোথাও কোনাে সাড়াশব্দ নেই। হঠাৎ গুডুবুড়া দেখতে পেল, তাদের বৈঠকখানার জানালায় একটা লােক ঝুলছে। তার চুল সাদা, চোখ সাদা, মুখ সাদা, কান সাদা। গায়ের কাপড়চোপড়ও সাদা।

এ নিশ্চয়ই ভূত।

 


মা আর আমি স্বপ্ন দেখি

মা আগের চেয়েও গম্ভির হয়ে বলল, “সেদিন তাে সিনেমা দেখতে না পেরে আমি আল্লাহর কাছে বলেছিলাম, আল্লাহ, মিতুল আমার মনে। দুঃখ দিলাে, তুমি মিতুলকে অংকে ফেল করিয়ে দাও।” মার কথা বলার ধরণ দেখে মন খারাপের। সময়ও মিতুল হেসে খুন। মিতুলের মা মােটেও এমন দোয়া করেনি। মিতুল তাে অংকে একশােতে একশােই পেয়েছে। কিন্তু মিতুলের। মন খারপ দেখলে ওর মা সবসময় এমন হাসির কথা বানিয়ে বানিয়ে বলে যেনাে মিতুল হাসে। মিতুলের রেজাল্ট নিয়ে মা কখনােই মন খারাপ করে না।।


সাইমুম সিরিজ - ৫২ : ক্লোন ষড়যন্ত্র

বিজ্ঞানের ভয়ংকর অপব্যবহার করছে হিংস্র, অর্থলোলুপ রহস্যময় এক শক্তি- শত শত হেক্টর ফার্মল্যান্ডের মালিকানা একের পর এক চলে যাচ্ছে রহস্যের অন্ধকারে লুকানো এই শক্তির হাতে। মালিকরা নিরব, নিষ্ত্রিুয়, পাপেট- পাপেটদের ঘরে উত্তরাধীকারী হিসাবে যারা আসছে তারাও পাপেট। পাপেট পরিবারে রূপান্তর ঘটছে মালিক পরিবারগুলোর!... এ ষড়যন্ত্র এক ভয়ংকর মহামারি রূপ নিল! কিভাবে ঘটছে এমন অবিশ্বাস্য ব্যাপার?... ক্লোন ষড়যন্ত্র- বিজ্ঞানের এক ভয়ংকর অপব্যবহার। বছরের পর বছর ধরে চলা এ ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে কোন প্রশ্ন, কোন সন্দেহ কারো মনে জাগেনি। অবশেষে তা ধরা পড়ল এক নারীর চোখে। কে সেই নারী?... কিভাবে ধরা পড়ল?... প্রতিকারের কোন উপায় না দেখে ভয়ে চেপে রাখে সেই নারী সব কথা। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে সেই নারী তার ডাইরি তুলে দেয় আহমদ মুসার হাতে- যাতে ষড়যন্ত্রের সব কথা লিখে রেখেছিল।.... এভাবেই ঐ নারী আহমদ মুসাকে ঠেলে দিল মহাবিপদসংম্কুল সমস্যার জালে ও ভয়ংকর এক পথে। কি করবে আহমদ মুসা?.... পদে পদে অদৃশ্য শত্রুর বিষাক্ত ছোবল!.... এ সব পায়ে দলে আহমদ মুসা কিভাবে বাঁচাবে মানব সভ্যতাকে ধ্বংসের জটিল আবর্ত থেকে? রহস্য, রোমাঞ্চ ও সংঘাতের সম্পূর্ণ নতুন এক কাহিনী নিয়ে হাজির হলো “ক্লোন ষড়যন্ত্র”


মিতুর আনন্দ

বাবা খুব সকালে হােটেলে যায়। মা ব্যস্ত ছােটভাই বাবুকে নিয়ে। ছােটভাইটার যত কাজ। সবই মাকে একা করতে হয়। মিতুর ইচ্ছে করে মাকে সাহায্য করত। অবশ্য সাহায্য করতে পারলে ভালােই হতাে । তাতে সময়টা ভালােই কাটত। আজকাল মিতুর দিকে খেয়াল রাখার মতাে বাসার কারও সময় নেই। বাবা হােটেল নিয়ে ব্যস্ত। বড় আপু স্বামী, সংসার আর মা ব্যস্ত- বাবুর যত্ন, কাপড় ধােয়া, রান্না করার কাজে। পড়াশােনায় বরাবর প্রথম স্থান অধিকার করতে ফেইল করেছে। অবশ্য তাতে দুঃখ নেই। পরিবারের সবাই বলে পাস করলে বিদ্যার্জন হয় না। বরং ভালাে করে সমাজ ও প্রকৃতির সবকিছুই মনের চোখ দিয়ে দেখতে হবে, বুঝতে হবে। আর সেভাবে বারবার ভাঙে নিজেকে গড়তে হবে।


হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ

টুকু একটা খবরের কাগজের টুকরা কুড়িয়ে পেয়েছে। সেই টুকরায় আবার সিনেমার নায়ক-নায়িকার খবর । আজ শাকিবের জন্মদিন। সে বানান করে করে পড়ল। পথশিশুদের একটা ইশকুল আছে কারওয়ান। বাজারের ভেতরে। মুরগির মার্কেটের পেছনের দোতলার অন্ধকার সিড়ি পার হলে তাদের ইশকুল । তিনটা ঘর । আলাের পাখি সেই ইশকুলের নাম। তিনজন আপা সেখানে বাচ্চাদের পড়ান। টুকু পড়ে সেখানে। দিনে দুই ঘণ্টা। দিনের বাকিটা টুকুর অবাধ স্বাধীনতার সময়।

তেজগাঁও রেলস্টেশনে পড়ে থাকা ট্রেনের বগিতে সে ঘুমায় । কারওয়ান বাজারে ডালা হাতে মিন্তিগিরি করে। সাহেবেরা বাজার করতে আসেন গাড়ি করে ।


আমড়া ও ক্র্যাব নেবুলা

মা চোখ পাকিয়ে বললেন, ফাজলামি করবি না। যা বলেছি কর। ট্রেনে যাবি-আসবি তাের সমস্যাটা কোথায়? 

কাজেই রাজুকে বিয়ের কার্ড নিয়ে সিলেট দৌড়াতে হল। সে কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে। এই বয়সটার নানারকম যন্ত্রণা, ছােট বলে আলাদা করে কেউ আর আলাদা করে খাতির-যত্ন করে না, আবার বড় হয়ে গেছে বলে কেউ স্বীকার করে না। যত রকমের নােংরা কাজগুলাে তার ঘাড়ে এসে পড়ে। সিলেট যাওয়া অবশ্যি ঠিক নােংরা কাজের মাঝে পড়ে না। সত্যি কথা বলতে কী সে এই দায়িত্বটা পেয়ে বেশ খুশিই হয়েছে, না হলে তাকে ডেকোরেটরের কাছে আর দর্জির কাছে দৌড়াদৌড়ি করতে হত। তাছাড়া মামার সাথে অনেকদিন দেখাসাক্ষাৎ নেই, একটু পাগলাটে মানুষ—কিন্তু তাদের খুব আদর করেন।

 


বোকা রাজার সোনার সিংহাসন

যে রাজার চারপাশে চালাক মন্ত্রীর দল সেই রাজার কোনাে কাজকর্ম থাকার কথা না। এই রাজারও নেই। খাওয়া, ঘুম, খাওয়া। এই হলাে তাঁর প্রধান কাজ। অতিরিক্ত খাওয়া, অতিরিক্ত ঘুমের কারণে রাজা ফুলেফেপে একাকার হয়ে গেছেন। বসলে উঠতে পারেন না, উঠলে বসতে পারেন না এমন অবস্থা। তিন মন্ত্রী তাঁকে উঠা-বসায় সাহায্য করেন। সেই তিন মন্ত্রীর নাম উঠবােস মন্ত্রী।


হানাবাড়ির রহস্য

এই বইটি আশির দশকে 'রাজবাড়ির রহস্য' নামে প্রকাশিত হয়, আর এর মূল চরিত্র ছিল আবুদের এডভেঞ্চার বইয়ের সেই আবু-বিজু! বিজুদের বহু পুরুষের পুরোনো বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে কিভাবে ওরা ভূত-রহস্য সমাধান করে, কিভাবে নবু নামের অসমসাহসী আরেক কিশোরের সাথে বন্ধুত্ব হয়, তা নিয়েই কাহিনী। নব্বই দশকের শেষে রাজবাড়ির রহস্য নাম, চরিত্রের নাম পালটে বর্তমান রূপে প্রকাশিত হয়েছে।


ঘুরে বেড়াই আদিম গুহায়

আমাদের মেয়ে কাজরিকে নিয়ে আমি ও হলেন বাস করেছি পৃথিবীর নানা দেশে। আদিম গুহায় ঘুরে বেড়ানাে আমাদের হবি। একবার কাজরিকে নিয়ে আমরা বেড়াতে গিয়েছিলাম লাওসের তন হাইহিন গুহায় । আরেকবার আমরা তাকে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মারােপেং গুহায় বেড়াতে যাই। তখন তার বান্ধবী ডিলেনি আমাদের সঙ্গী হয়েছিল। জিম্বাবুয়ের সিনহােয়ি গুহায় বেড়াতে গিয়ে তার সাথে বন্ধুত্ব হয় এলসা ও আনেনি নামে দুটি মেয়ের। এ বইতে এসব গুহায় কাজরি ও তার বান্ধবীদের সাথে ঘুরে বেড়ানাের বর্ণনা আছে।

 


ছোটদের নির্বাচিত গল্প

দুজনের জন্মদিন নিয়ে ওদের বাবা-মায়ের এক একটি গল্প আছে। ওদের মা রাহেলা বলে, যেদিন রুমার জন্ম হয় সেদিন বাড়ির উঠানের শিউলি গাছটা ফুলে ফুলে ভরে ছিল। এত ফুল নাকি আর কখনাে দেখেনি রাহেলা বানু। খুশবু ছড়িয়ে গিয়েছিল চারদিকে।


মোহন রায়ের বাঁশি

ময়নাগড়ের দিঘির ধারে সন্ধেবেলায় চুপটি করে বসে আছে বটেশ্বর। চোখে জল, হাতে একখানা বাঁশি। পুবধারে মস্ত পূর্ণিমার চাঁদ গাছপালা ভেঙে ঠেলে উঠবার চেষ্টা করছে। দিঘির দক্ষিণ দিককার নিবিড় জঙ্গল পেরিয়ে দখিনা বাতাস এসে দিঘির জলে স্নান করে শীতল সমীরণে পরিণত হয়ে জলে হিলিবিলি কাঁপন তুলে, বটেশ্বরের মিলিটারি গোঁফ ছুঁয়ে বাড়িবাড়ি ছুটে যাচ্ছে। চাঁদ দেখে দক্ষিণের জঙ্গল থেকে শেয়ালেরা ক্যা হুয়া, ক্যা হুয়া’ বলে হিন্দিতে পরস্পরকে প্রশ্ন করছে। বেলগাছ থেকে একটা প্যাঁচা জানান দিল হাম হ্যায়, হাম হ্যায়।

 


শয়তান

কিন্তু তারও একটা বিহিত করা যায়। দেনা মিটিয়ে যদি কিছু হাতে নগদ আর বিষয়-আশয় রাখতে চায় ছেলেরা, সে ব্যবস্থা অনায়াসেই হতে পারে। মস্ত বড় যে জঙ্গলের মহালটা রয়েছে সেইটে আর কিছু বার দিকের খুচরাে জমি বিক্রি করে ফেললে সুরাহা হবে। কেবল সেমিয়ােনভ তালুকটা যেটা সবচেয়ে উৎকৃষ্ট সম্পত্তি অর্থাৎ চার হাজার বিঘে আন্দাজ পােডড়ামাটির জমি, চিনির কারখানা, আর দুশাে বিঘের মস্ত বড় বিল— এইটে রাখলেই যথেষ্ট। যদি এই বিষয়টুকু ভালােমতাে তদ্বির-তদারক করা যায়, জমিদারিতে নিজে বসবাস করে বুদ্ধি খাটিয়ে চাষ-আবাদ করা যায় তাহলে ওই আবাদেই ফলবে সােনা। অনর্থক খরচ বাঁচিয়ে যে মিত্যব্যয়ীভাবে জমি-জমা চালাতে জানে তার পক্ষে গুছিয়ে নেওয়া কিছু শক্ত নয়।