পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার এবং তার ফলশ্রুতি হিসেবে নানাবিধ সমাজসংস্কার আন্দোলন এ ক্ষেত্রে যে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিল, সে কথা আমাদের প্রায় সকলেরই জানা। যা অজানা, তা হল এই শিক্ষা ও সংস্কার আন্দোলনগুলির প্রবল অভিঘাতে একের-পর-এক অসমসাহসিনী বঙ্গনারীর সাগরপাড়ি দেওয়া ঘটনার আশ্চর্য ইতিবৃত্ত। উচ্চশিক্ষালাভের উচ্চাকাঙ্ক্ষায় বিলেতগামী জাহাজে উঠে পড়ে কালাপানি পেরিয়ে এই বঙ্গললনারা ভেঙে চুরমার করে দিলেন সমাজের প্রচলিত রীতি, অনুশাসন। তরু দত্ত-অরু দত্ত থেকে শুরু করে জ্ঞানদানন্দিনী-কাদম্বিনী হয়ে এই গ্রন্থ তুলে ধরেছে ফজিলতুন্নেসা পর্যন্ত দশ অসমসাহসিনী বাঙালি নারীর উচ্চশিক্ষার্থে ইউরোপযাত্রার ইতিবৃত্ত।
শুধু বর্ণবৈষম্য কিংবা অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই করেই যাওয়া নয়, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের তীব্র সমালোচনাকারী বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ হিসেবেও বাবাসাহেব আম্বেদকরের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। প্রকৃত অর্থেই তিনি ছিলেন এক বহুমুখী প্রতিভা। ভারতীয় দলিত রাজনীতির প্রবক্তা তথা সংগঠকরূপে তো বটেই, সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেও তিনি ছিলেন এক আপোশহীন যোদ্ধা। ভারতীয় সংবিধানের রূপকার এই মানুষটিই আবার ছিলেন হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়ের পারস্পরিক সম্পর্ক ও পাকিস্তান গঠনের আন্দোলন প্রসঙ্গে স্পষ্টবাদী এক অনন্য মতের প্রবর্তক। এগারোটি প্রবন্ধ সংকলিত এই গ্রন্থে পুনর্বার ফিরে তাকানো হল সমাজবিপ্লবী আম্বেদকরের ব্যতিক্রমী জীবন ও কর্মের উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন পর্বের দিকে।