থানার সেপাই রামশরণ হনুমানজির মন্দিরে পুজো চড়িয়ে ভজন গাইছে। মন্দিরটা অবশ্য একেবারেই বেঁটে বকেশর। মাত্র হাততিনেক উঁচু, বড়জোর দু-হাত লম্বা আর আড়াই হাত চওড়া। ভিতরে অঙ্গুষ্ঠপ্রমাণ একটা মূর্তিও আছে। তবে তেল-সিঁদুর, শ্যাওলা আর ময়লায় মূর্তির মুখচোখ কিছু বােঝবার উপায় নেই। কিন্তু রামশরণ রােজ সকালে বিভাের হয়ে বেসুরাে গলায় ভজন গেয়ে তার ভক্তি নিবেদন করে। হনুমানজির উপর তার ভক্তির কারণ আছে। সময়টা রামশরণের খারাপ যাচ্ছে। তার মােষটাকে নিধুবাবু খোঁয়াড়ে দিয়েছেন, তার ছেলে শিউশরণ এবার নিয়ে
প্রতিটি মানুষ জীবন শুরু করে একক একটি কোষ থেকে : একটি নিষিক্ত ডিম্ব থেকে। পূর্ণবয়স্ক হতে হতে মানবশরীরে কোষের সংখ্যা হয়ে ওঠে এক লাখ কোটি। সব জীবেরই মৌলিক একক হলাে ‘কোষ'। মানবশরীরের গঠন ও কাজকর্মের একক হলাে কোষ । কোষ সজীব, কিন্তু অবনতি ঘটতে থাকলে কোষ বুড়াে হতে থাকে। কোষের কাজকর্মে গলদ হলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। কোষ সম্বন্ধে আমরা যদি আরও ভালাে করে জানতে পারি, তাহলে আমরা দীর্ঘদিন সজীব ও সুস্থ হয়ে বাঁচতে পারব।
সুবাদার আমির মােহাম্মদ বলছিলেন : মিশরের উত্তর অঞ্চলে গিয়েছিলাম আমি একবার, এক কাজে। উঠেছিলাম ওখানকার বিখ্যাত চাষি ফাল্লাহ’র বাড়িতে। সে তখন বৃদ্ধ। গায়ের রঙ তামাটে অথচ লক্ষ করলাম, তার ছেলেমেয়েরা সব ধবধবে ফর্সা, গালে গােলাপি আভা। রেশমের মতাে হালকা নরম চুল, নীল চোখ।
ভীষণ কৌতূহল হল। শেষে জিগ্যেসই করে ফেললাম ফাল্লাহকে, আপনার রঙ তাে তামাটে। ছেলেমেয়েদের রঙ এত সুন্দর হল কী করে? হেসে ফাল্লাহ বলল, আমার বিবি ফ্র্যাঙ্ক দেশের মেয়ে। যুদ্ধে বন্দি হয়েছিল। আমি তাকে কিনে নিয়েছিলাম। হিতিনের যুদ্ধে সালাহ আল-দিন খ্রিস্টানদের পরাজিত করে জেরুজালেম
থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। সে-সব অনেক দিন আগের কথা। তখন আমি যুবক।
স্কাইলিট সিটি, পৃথিবী দ্বিতীয় ডাইমেনশনের গল্প। দ্বিতীয় পৃথিবীর খণ্ডচিত্র। সাল ২০৪৫। বাংলাদেশের একাংশ ততদিনে মহাপ্লাবনে তলিয়ে গিয়েছে। রাজধানী ঢাকা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে স্কাইলিট সিটিতে। দেশের ভৌগলিক সীমারেখা পালটে গিয়েছে। মানুষের পাশাপাশি বাস করছে রোবট। ভয়ংকর উচ্চাশা ও হতাশা উভয়েই গ্রাস করে নিয়েছে স্কাইলিট সিটির অধিবাসীদের।
প্রথম পর্বে অক্টাভেলা সাম্রাজ্যের পতনের পনের বছর পরের ঘটনা এই পর্বে দেখা যাবে। সেই ছোট্ট রাজকুমারী এলজার কি হলো, পাঠক তা জানতে পারবেন।
ফ্যারাডের পথিকৃৎ আবিষ্কারের পর থেকে আজ পর্যন্ত সেমিকন্ডাকটর ইন্ডাস্ট্রির যে রমরমা সেটা সংক্ষেপে প্রযুক্তির ইতিহাসও বটে। পদার্থের | রােধত্বের ঋণাত্মক তাপীয় সহগ আবিষ্কারের পর প্রায় একশ বছর এ সংক্রান্ত
রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অত্যন্ত ধীরগতিতে এগিয়েছে। এর কারণ হলাে ঐ সময়ে গবেষণা ও উন্নয়ন আজকের মতাে ইন্ডাস্ট্রি স্ট্যান্ডার্ডে এগােয়নি, জাতীয় বা কর্পোরেট কোনাে ফান্ডও ছিল না। বিজ্ঞানীরা নিজের তাগীদে, প্রকৃতিকে উন্মােচনের তাগীদে, প্রায়শই পকেটের পয়সা খরচ করে গবেষণা করতেন। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে রেডিও আবিষ্কৃত হলে এই ধরনের সেমিকন্ডাকটিং ডিভাইস, যারা রেকটিফায়ার হিসেবে কাজ করতে সক্ষম,
দুটি বাড়ির মধ্যে সরু একটি গলি। সেখানে দেখা হল দুবাড়ির দুটি মেয়ের। বাড়ির ময়লা পানি জমে ছােট একটা ডােবার মতাে হয়েছে গলিটায়। একটা মেয়ে খুবই ছােট, আর আরেকটি একটু বড়। দুজনার মা-ই বেশ নতুন জামা-কাপড় পরিয়ে দিয়েছে তাদের। ছােট মেয়েটির কাপড়ের রঙ নীল, বড়টির হলদে। এ ছাড়া দুজনার মাথায় জড়ানাে লাল রুমাল। এইমাত্র তারা গির্জা থেকে ফিরেছে। প্রথমে একে অপরকে তারা নিজের জামা-কাপড় দেখাল, তারপর শুরু করল খেলতে। একটু পরেই তাদের ইচ্ছে হল পানি ছিটাছিটি করবে। ছােটমেয়েটি তাে জামা কাপড় আর জুতাে পরেই নেমে যাচ্ছিল, তাকে থামাল বড়মেয়েটি। সে বলল, অমন করে পানিতে নেমাে না মালাশা, তােমার মা রাগ করবেন। আমি আমার জুতে-মােজা খুলে রাখছি, তােমারটাও তুমি খুলে ফ্যালাে।
ধাঁধা নিয়ে মাথা ঘামাননি এমন লোক দুনিয়াতে বিরল। ধাঁধায় নানারকম ধারা রয়েছে। তবে, ধাঁধা জগতের একটি বড় অংশ গাণিতিক ধাঁধার। ধাঁধা সমাধানের মাধ্যমে মাথার নিউরনে নানা ধরনের উদ্দীপনা হয়। সে কারণে, অনেকেই গণিতের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য গাণিতিক ধাঁধার চর্চা করেন। ধাঁধা সংকলনের বেশিরভাগ লেখা সেই চিন্তাকে মাথায় রেখে। তবে, আনন্দের জন্য সেখানে নানা প্রসঙ্গ এসেছে, গল্পের ঢঙে। যারা নিজেদের গণিতের দক্ষতা বাড়াতে আর যুক্তির সৌধ নির্মাণে আগ্রহী তাদের জন্য এই সংকলন অনেক কাজে আসবে বলে আশা করা যায়।
মায়ের কাছে শােনা আমার খুব ছােটবেলার দু'একটি গল্প বলি। আমি নাকি বেশ বেশি বয়স অবধি মাতৃদুগ্ধ পান করি । কিছুতেই অভ্যাসটা ছাড়ানাে যাচ্ছিল না। একদিন বাবা অনেক আদর করে আমার কাছ থেকে সম্মতি ও প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিলেন যে কাল থেকে আমি আর বুকের দুধ খাব না। তারপর যথাসময়ে প্রচণ্ড ক্ষুধায় আমি খাবার জন্য অস্থির হয়ে উঠলাম। গরুর দুধ দেয়া হলাে বােতলে করে, মুখেই তুললাম না। কান্না, জেদ, অস্থিরতা। শেষে মা নিরুপায় হয়ে বুকের দুধ দিয়েই আমার ক্ষুধা মিটাতে এগিয়ে এলেন কিন্তু তাও আমি মুখে নেব না । জেদ আর কান্না সমানে চলল কিছুক্ষণ।
কিন্তু কথাটা বরাবর আমি শুনেই গিয়েছি, বিশেষ একটা উচ্চবাচ্য করিনি। কারণ এ বাজারে যেমন তেমন একটি আলমারি কিনতে হলেও অন্তত শ’ দেড়েক টাকার প্রয়ােজন তাে বটেই। অথচ আয় বলতে আমার কোন এক মার্চেন্ট অফিসের কেরানীগিরির মাসান্তে মাহিনা ডিয়ারনেস ও অনান্য এলাউন্সসহ সর্বসমেত দুই শত পঞ্চাশ টাকা। পৈতৃক বাড়িটা পেয়েছিলাম, তাই কিছুটা রক্ষে নচেৎ মানসম্রম বাঁচিয়ে খেয়ে পরে ঐ কটি মাত্র টাকায় সংসার চালানােই হয়ত দুঃসাধ্য হয়ে উঠতাে। কিন্তু নিজের এ দৈন্যের ব্যথা বােঝাই বা কাকে আর বােঝেই বা কে। অগত্যা তাই একান্ত নরাধমের মত গৃহিণীর মনােগত বাসনার খেদোক্তিটা বরাবর শুনেই গিয়েছি।
মহাবিশ্ব ধ্বংসের প্রযুক্তি আবিষ্কার করে ফেলেছেন এক বিজ্ঞানী। তাই তাঁকে ধরে নিয়ে গেছে বিদেশি কমান্ডো দলের সদস্যরা। আটকে রেখেছে প্রশান্ত মহাসাগরের একটি দ্বীপে। সেই বিজ্ঞানীকে বাঁচানোর জন্য ও মহাপ্রলয়ের হাত থেকে বিশ্বজগতকে রক্ষার জন্য বাংলাদেশের খ্যাতিমান বিজ্ঞানী দিদার, বুয়েটের ছাত্র তূর্য আর অন্য জগৎ থেকে আসা আরেক বিজ্ঞানী তাদের অভিযান শুরু করল। তারা কি পারবে মহাপ্রলয় (যার নাম হিগস প্রলয়) ঠেকাতে এবং সেই আবিষ্কারককে বাঁচাতে?
হকিং পরিবার যখন সেন্ট অ্যালবান্সের বাড়িটি কেনেন তখন তাদের আর্থিক অবস্থা ভালাে ছিল না। অথচ পুরােনাে আমলের বাড়িটিকে ঠিকঠাক করে নিতে অনেক টাকার প্রয়ােজন ছিল। কিন্তু ফ্র্যাংক হকিং তা না করে শুধু রংচং করে বাড়িটিকে চলনসই করে নেন। বাড়িটি বেশ বড়ােসড়াে ছিল এবং সেখানে কাজের লােকের থাকার ব্যবস্থাও ছিল। তদের কিন্তু সেরকম কোনাে লােকজন ছিল না। বাড়িটি পুরােনাে হলেও বেশ মজবুত ছিল এবং ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত হকিং পরিবার ওই বাড়িতেই বসবাস করতাে।
উঠোনের মুরগিদের সাথে ছুটোছুটি করে বিরক্ত কুকুরছানাটি ভাবে জঙ্গলে গিয়ে পশুপাখি শিকার করতে হবে। নিজেকে সে ভাবে সব থেকে চালাক। বক, ঝুঁটিদার পাখি, তিতির, গিরগিটি, শুঁয়োপোকা, প্রজাপতি, ফড়িং, থুড্ডিপোকা সবাইকে সে শিকার করে ফেলতে পারে একাই। ধেয়ে গেল জঙ্গলে। কী হল তারপর?
রুশ শিশুরা কুকুরছানাদের খুব ভালোবাসে। তাই তাদের এই বই খুব প্রিয়। লিখেছেন ভিতালি বিয়ানকি। আমাদের জন্য মূল রুশ থেকে অনুবাদ করেছেন হায়াৎ মামুদ। অসাধারণ ছবি এঁকেছেন ভিক্তর কিরিল্লভ।
দক্ষিণ-পশ্চিম কলােরাডাের লা প্লাটা পর্বতমালা চোখ ধাঁধানাে সাদা বরফে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। হু হু করে বইছে বাতাস। বেসি জি’র স্বর্ণখনির প্রবেশ দ্বারের বাইরে কাজ করছিলেন ওরা দু’জন। প্রবল ঠান্ডা হাওয়া যেন কামড় বসাচ্ছিল। একমনে কাজ করে যাচ্ছিলেন দু'জনে। কল্পনাও করতে পারেন নি কি দুর্ভোগ রয়েছে কপালে। হঠাৎ দেখতে দেখতে গর্জাতে শুরু করল বাতাস, প্রচন্ড বেগে আছড়ে পড়তে লাগলাে ওদের গায়ে। কিন্তু ওরা তখনাে জানেন না সামনে কি ভয়াবহ বিপদ ওঁৎ পেতে আছে।
আকবর স্যার একা থাকেন, একবেলা খান। তাও হোটেলে খান। রাতে খান না। এটা জেনে একদিন সঞ্জু রাতে স্যারের খাওয়ার টেবিলে দেয়াল টপকে ভাত-তরকারি দিয়ে এল, স্যারকে না জানিয়ে। কিন্তু স্যার টের পেয়ে গেলেন, রাগলেনও ভীষণ। বলাই বাহুল্য শাস্তিটা দিলেন স্কুলে এবং হুঁশিয়ারি করে দিলেন। এ রকম করলে শাস্তি কিন্তু চলতেই থাকবে। তারপরের কাহিনী তো সবাই জানে। সঞ্জুর শাস্তি চলতেই থাকছিল। মাঝখানে ফারুক ঢুকে...
-তাহলে স্যার এখন কী হবে? সাহস করে মুহবি বলে বসে।
-নাহ্ এখন আর শাস্তি না্ সব শাস্তি বন্ধ। তা ছাড়া .. স্যার থামেন।
-তা ছাড়া?
-তা ছাড়া সঞ্জুর মা’টা এত ভালো রাঁধেন যে কী বলব? ..এই বুড়ো বয়সে ভাতের স্বাদটা মুখে লেগে থাকে রে...