Categories


শীতের প্রকার

ধাবমান এই বর্তমানে স্থান ও কালের প্রেক্ষাপট দ্রুত পরিবর্তনশীল। আমাদের শান্তশ্রী গ্রাম আর তার প্রকৃতির জৌলুস আজ শুধু স্মৃতির মাধুরী। বিশ্বায়নে ভাবজগৎ যতটা আলোড়িত তার চেয়ে বেশি বস্তুজগতে আগ্রাসনের পীড়ন-তাড়না। বিপর্যয় আজ নিসর্গে, বহির্জগতে, বিপন্ন আজ মনোজগৎ, হতবাক সংবেদনশীল মানস। শীতের প্রকার - ওবায়েদ আকাশ কবির জন্যে কঠিন এ কাল, চেনা পথে আর চলার উপায় নেই। অচেনা পথে নিজেকে চেনার ও চেনানোর মগ্ন-চঞ্চল প্রয়াসকে স্বাগত জানাই। কপটতার আড়ালে ক্রমশ নৃশংসতায় মজে ওঠা এ-কালে তাঁর কবিতায় প্রসন্ন সাহস ও সহজ-সুন্দর দ্যুতি ছড়ায় জীবনসন্ধানী উন্মোচনে। নিজের সময়কে বুঝে নিজের কথাটি বলার দুরূহ কাজে এই তরুণের ধারাবাহিকতা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী অর্জন। আধুনিক বাংলা কবিতার অভিযাত্রায় সাধনা ও সিদ্ধিতে দীর্ঘতর পথ-পরিক্রমায় এ-স্বীকৃতি অনুপ্রেরণা জোগাবে, এই আমাদের প্রত্যাশা। ওবায়েদ আকাশ দৈনিক সংবাদের সাহিত্য-সম্পাদক। লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সংশি­­ষ্ট। তাঁর জন্ম ১৯৭৩ সালের ১৩ জুন, রাজবাড়িতে।


শিক্ষা ও সমাজ কাঠামো

শিক্ষা যে কাক্ষণীয় এবং দরকারি তা সকল সভ্য রাষ্ট্রের অভিমত। তথাপি এই অভিমতও সকল যুগে কিছু ‘শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি বিতর্কের ঊর্ধ্বে বলে মেনে নিতে পারেন নি। শিক্ষার বিরােধিতা যারা করেন তাদের অভিমত হল শিক্ষা কখনাে ঈপ্সিত সাফল্য অর্জন করতে পারে । এদের অভিমত সঠিকভাবে মূল্যায়ন করার আগে আমাদের ভেবে দেখতে হবে শিক্ষা কতটা অর্জন করতে পারে বলে আমরা মনে করি। মানবকল্যাণ সম্পর্কে যেমন বিচিত্র ধারণা বিদ্যমান শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কেও তেমনি রয়েছে বিচিত্র অভিমত। আবার এতসব বিতর্কের ভেতর একটা বিভেদ দেখা যাচ্ছে খুবই গভীর। একদল মনে করেন শিক্ষার প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিত ব্যক্তি, অপর দলের অভিমত হল শিক্ষার কেন্দ্রীয় স্থান দখল করবে সমাজ।


টু হ্যাভ অ্যান্ড হ্যাভ নট

দরােজা পেরিয়ে তারা ডানদিকে মােড় নিল, দেখলাম চত্বরের দিক থেকে। তাদের দিকে অগ্রসর হচ্ছে একটা কার। প্রথম ব্যাপার যেটা ঘটল তা হলাে কাচের একটা শার্সি ভেঙে গেল আর ডানদিকের দেয়াল বরাবর শাে-কেসের ওপর রাখা এক সারি বােতল চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেল বুলেটের আঘাতে। বপ বপ বপ করে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে ছােড়া অবিরাম গুলির আওয়াজ শুনতে পেলাম আর সমস্ত দেয়াল বরাবর বােতল ভাঙার শব্দ।


বারাব্বাস

কীভাবে তাদের ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল এবং কারা তার চারপাশে এসে সমবেত হয়েছিল, সবাই তা জানে। দাঁড়িয়েছিল মা মেরি, মেরি মাগদালেন, ভেরােনিকা, সিরিনের সাইমন আর এরিমিথিয়ার যােশেফ। সাইমন ক্রুশটিকে বহন করে এনেছিল ; যােশেফ তার শবদেহকে আচ্ছাদিত করেছিল। ঢালু প্রান্তরের আরেকটু নিচে, আরাে একজন লােক দাঁড়িয়েছিল। মৃত্যুপথযাত্রী লােকটির উপরেই তার দৃষ্টি। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সে তার মৃত্যুযন্ত্রণা দেখে আসছে। লােকটির নাম বারাব্বাস।


বাংলার লৌকিক দেবতা

জলাশয়ের তীরে গজখানেক জমি বেশ ভালভাবে পরিষ্কার ও সমতল করে নিয়ে তার ঠিক মাঝখানে একটা ছােট বেদী (বা স্থণ্ডিল) তৈরি করে মাটি দিয়ে, ওই বেদীর তিনটি থাক (step) রাখা হয়। বেদীর ঠিক মাঝখানে প্রতীকস্তুপ একটি বা দুটি বসানাে হয়। চারটি তীরকাঠি বেদীর চার কোণে পুঁতে সেগুলি পরস্পর লাল সুতাে দিয়ে সংযুক্ত করা হয়-এই প্রকারে বেদীর একটা আবরণ বা বেড়া তৈরি হয়। প্রতীকের উপর একটা লাল রংয়ের চাদোয়াও টাঙানাে হয়।


কাছে দূরের গান

দীনলক্ষ্মী কথা শেষ করেনি। আরও কিছু হয়ত তার বলার ছিল, হয়ত সে মহীন্দ্রের নাম ধরেই স্নেহলতাকে ডাকত, কিন্তু তার আগে বাঁধানাে কুয়াের ভেতরে বালতি নামিয়ে দিয়ে টেনে তুলতে তুলতে স্নেহলতা সন্ধ্যামালতীর ঝাড়ের দিকে তাকিয়েছিল। তখন পশ্চিমের নারকেল গাছের ছায়া, কাছেই একটি জবা গাছের ঝাড় আর নারকেল গাছগুলাের কোলের কাছের কাপিলার কচার ছায়া মিলেমিশে সন্ধ্যামালতীর ফুলের রঙ একটু যেন কালটে করে তুলেছে। অথচ দিনের প্রথম দিকে, এমনকি দুপুরের পরও এই গাছের ফুলগুলাে কত উজ্জ্বল দেখায়। এই পর্যন্ত ভেবেওছে স্নেহলতা। কুয়ােয় নামিয়ে দেয়া বালতি জল ভরে টেনে তােলার আগে একটুক্ষণ ভাসমানই থাকে, তারপর জলে বালতি ভরে গেলে হাতে যখন দড়ির টান লাগে, ঠিক সেই সময়ে দীনলক্ষ্মী ডাক দেয়াটা মিলে গেলে, এই মিলে যাওয়াতেই দীনলক্ষ্মীর মহীন্দ্রকে দেখে ডাকের উত্তেজনার সঙ্গে সেও যেন প্রস্তুতই ছিল উত্তর নিতে, তাই বালতির জলে ডুবে যাওয়ায় টান আর দীনলক্ষ্মীর ডাক মিলেমিশে যাওয়ার এই মুহূর্তমাত্রে স্নেহলতা উত্তর নেয়, কী হইছে, ও মা ঠাইরেন, ডাকেন কেন?