Categories


ছোটদের মহানবী (সা.)

ছােটদের মহানবী (সাঃ) 

আমাদের মহানবী সাললাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম যে দেশে জন্ম গ্রহণ করেন, সে দেশের নাম আরব দেশ। আরব মরুভূমির দেশ। শুধু বালি আর পাথরকণা। মরুভূমির দেশ হলেও কোথাও কোথাও কিছু কিছু ঘাস, লতা-পাতা, বাবলাগাছ ও খেজুর গাছ দেখা যায়। নিচু সমতল ভূমিতে মানুষ বাস করে। | বেদুঈনরা পশু চরায় এবং জায়গায় জায়গায় তাঁবু ফেলে বাস করে। উট মরুভূমিতে চলাচলের একমাত্র বাহন। উটকে মরুভূমির জাহাজ বলা হয়।

 


রোহান ও তার বিচ্ছুরা

নটরডেম কলেজের বিজ্ঞানের ছাত্র রোহান মামার সাথে কাজল আর সজলের খুব ভাব। ছোটখাটো অপরাধ করে বাবার কাছে যখন ওরা ঝাড় খায়, রোহান তখন বুক দিয়ে আগলায় ওদের। রোহানের বন্ধু নিতু। ওর সৎমা তাকে খুব জালায়। বাপ কিছু বলে না, মেনিমুখোর মতো চোখ বুজে থাকে। ওদিকে কাজলের বন্ধু সায়ান লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালাতে গিয়ে একটা মেয়েকে চাপা দেয়। মামলা হয় ওর নামে। সায়ানদের মেলা টাকা। ভেবেছিল, টাকা দিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে আনবে। কিন্তু আদতে তা হয়নি। সেই মেয়েটি হাসপাতালে মারা গেলে সায়ানকে পুলিশ কোর্টে চালান করে। ওরা একদিন সাফারি পার্কে যায় ঘুরতে। সেখানে ফুটবলের মতো দেখতে উটপাখির ডিম পায় ওরা। তাই নিয়ে শুরু হয় অবাক কা-। নিতুর সৎমায়ের ঘরে হঠাৎ ভূতের নাচ দেখা যায়, সাথে হরর মুভির মতো পিলেকাঁপানো কণ্ঠস্বর। কা-টা কী জানতে চলো পড়ে ফেলি ‘রোহান ও তার বিচ্ছুরা’ বইটি।


ছেলেবেলা

ভূমিকা
গোঁসাইজির কাছ থেকে অনুরোধ এল, ছেলেদের জন্যে কিছু লিখি। ভাবলুম, ছেলেমানুষ রবীন্দ্রনাথের কথা লেখা যাক। চেষ্টা করলুম সেই অতীতের প্রেতলোকে প্রবেশ করতে। এখনকার সঙ্গে তার অন্তর-বাহিরের মাপ মেলে না। তখনকার প্রদীপে যত ছিল আলো তার চেয়ে ধোঁয়া ছিল বেশি। বুদ্ধির এলাকায় তখন বৈজ্ঞানিক সার্ভে আরম্ভ হয় নি, সম্ভব-অসম্ভবের সীমা-সরহদ্দের চিহ্ন ছিল পরস্পর জড়ানো। সেই সময়টুকুর বিবরণ যে ভাষায় গেঁথেছি সে স্বভাবতই হয়েছে সহজ, যথাসম্ভব ছেলেদেরই ভাবনার উপযুক্ত। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ছেলেমানুষি কল্পনাজাল মন থেকে কুয়াশার মতো যখন কেটে যেতে লাগল তখনকার কালের বর্ণনার ভাষা বদল হয় নি, কিন্তু ভাবটা আপনিই শৈশবকে ছাড়িয়ে গেছে। এই বিবরণটিকে ছেলেবেলাকার সীমা অতিক্রম করতে দেওয়া হয় নি— কিন্তু শেষকালে এই স্মৃতি কিশোরবয়সের মুখোমুখি এসে পৌঁছিয়েছে। সেইখানে একবার স্থির হয়ে দাঁড়ালে বোঝা যাবে, কেমন করে বালকের মনঃপ্রকৃতি বিচিত্র পারিপার্শ্বিকের আকস্মিক এবং অপরিহার্য সমবায়ে ক্রমশ পরিণত হয়ে উঠেছে। সমস্ত বিবরণটাকেই ‘ছেলেবেলা’ আখ্যা দেওয়ার বিশেষ সার্থকতা এই যে, ছেলেমানুষের বৃদ্ধি তার প্রাণশক্তির বৃদ্ধি। জীবনের আদিপর্বে প্রধানত সেইটেরই গতি অনুসরণযোগ্য। যে পোষণপদার্থ তার প্রাণের সঙ্গে আপনি মেলে বালক তাই চারি দিক থেকে সহজে আত্মসাৎ করে চলে এসেছে। প্রচলিত শিক্ষাপ্রণালীদ্বারা তাকে মানুষ করবার চেষ্টাকে সে মেনে নিয়েছে অতি সামান্য পরিমাণেই।

এই বইটির বিষয়বস্তুর কিছু কিছু অংশ পাওয়া যাবে জীবনস্মৃতিতে, কিন্তু তার স্বাদ আলাদা— সরোবরের সঙ্গে ঝরনার তফাতের মতো। সে হল কাহিনী, এ হল কাকলি; সেটা দেখা দিচ্ছে ঝুড়িতে, এটা দেখা দিচ্ছে গাছে— ফলের সঙ্গে চার দিকের ডালপালাকে মিলিয়ে দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। কিছুকাল হল, একটা কবিতার বইয়ে এর কিছু কিছু চেহারা দেখা দিয়েছিল, সেটা পদ্যের ফিল্মে। বইটার নাম ‘ছড়ার ছবি’। তাতে বকুনি ছিল কিছু নাবালকের, কিছু সাবালকের। তাতে খুশির প্রকাশ ছিল অনেকটাই ছেলেমানুষি খেয়ালের। এ বইটাতে বালভাষিত গদ্যে।
-- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


কিশোর ক্লাসিক লরা ইঙ্গলস ওয়াইল্ডার এর চারটি বই একত্রে (ফার্মার বয়, লিটল হাউজ অন দ্য প্রেয়ারি, অন দ্য ব্যাঙ্কস অভ প্লাম ক্রীক, লিটল টাউন অন দ্য প্রেয়ারি)

ছোট্ট ছেলে আলমানযো ! সবে নয় বছর বয়স। বাবার খামার-বাড়িতে বড় হয়ে উঠছে। ভাইবোনদের সঙ্গে ওকেও প্রচুর কাজ করতে হয় । কিন্তু ভুলেও ওকে শহুরে জীবনের আরাম-আয়োশের লোভ দেখিয়ো না-ও মাথা নড়বে।
লিটল হাউস অন দ্য গ্রেয়োরি:
ওই একই সময়ে ছোট্ট মেয়ে লরা বাবা-মা'র সঙ্গে গোটা আমেরিকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে স্থায়ী বসতির সন্ধানে। বিচিত্র অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠছে। ও জানে না, একদিন দেখা হবে। আলমানযোর সঙ্গে ।
অন দ্য বাঙ্কস অভ প্লাম ক্রীক:
প্লাম ক্রকের তীরে বসতি গড়ল ওরা ইণ্ডিয়ান টেরিটারি থেকে তাড়া খেয়ে ফিরে এসে । কিন্তু এখানে আকাশ থেকে নামল শক্রি-কেচিকোটি ঘাসফড়িং। সর্বস্বান্ত করে দিল বাবাকে । জীবন থেমে থাকে না। আরও পশ্চিমে চলল ওরা। লরা কি দেখা পেল আলমানযোর?
লিটন টাউন অন দ্য প্রেয়ারি:
ডাকোটার শীত কাকে বলে টের পাবে তোমরা ‘দ্য লঙ উইন্টারে’।সাত মাস ধরে তুষার ঝড়!কল্পনা করা যায়?শহরের সব খাবার শেষ,কী করে টিকে থাকবে ওরা ছয়জন? আলমানযো বাড়িয়ে দিল সাহায্যের হাত।


বুবুনের বাবা

যে স্যুটকেসটা বুবুন আর আম্মা মিলে টেনে নাড়াতে পারেনি জাহিদ চাচা সেটা এক হাতে তুলে একেবারে বাসার দরজার সামনে রেখে দিলেন। জাহিদ চাচার শরীরে মনে হয় মােষের মতাে জোর। যাদের শরীরে মােষের মতাে জোর হয় তাদের চেহারায় একটা গুণ্ডা-গুণ্ডা ভাব থাকে কিন্তু জাহিদ চাচার বেলায় সেটা সত্যি না। তার চেহারাটা একেবারেই ভালাে মানুষের মতাে। ফর্সা গায়ের রং, চুল সুন্দর করে আঁচড়ানাে, চোখে কালাে ফ্রেমের চশমা। কথা বলেন সুন্দর করে আর যখন হাসেন তখন মনে হয় তার এত | আনন্দ হচ্ছে যে সেই আনন্দে চোখ দুটি বুজে আছেন। বুবুন মানুষজনের বেলায় খুব খুঁতখুঁতে কিন্তু এই মানুষটাকে তার বেশ পছন্দ হলাে।

. জাহিদ চাচা পকেট থেকে একটা চাবি বের করে দরজার তালা খুলে আম্মাকে বললেন, “ডক্টর রওশান, এই হচ্ছে আপনার নূতন বাসা।”

আম্মা ভিতরে ঢুকে বললেন, “বাহ!”

বুবুন বুঝতে পারল বাসাটা আম্মার পছন্দ হয়েছে। পছন্দ না হলে আম্মা চুপচাপ থাকতেন আর জিজ্ঞেস করলে বলতেন, “হুম! বেশ ভালােই | তাে মনে হচ্ছে-

 


ইলেক্ট্রনিক্সের কথা : মজার প্রজেক্ট

আমাদের দেশে ইলেক্ট্রনিক্সে আগ্রহী অনেক ছেলে-মেয়ে রয়েছে। কিন্তু তাদের হাতের কাছে এ বিষয় সম্পর্কে তেমন কোন উদ্ভাবনী মূলক বই-পত্র নেই। তাদের সকলের কথা ভেবেই আমাদের বাংলাদেশের কিছু শ্রেষ্ঠ পুরস্কার প্রাপ্ত ক্ষুদে ইলেক্ট্রনিক্স প্রযুক্তিবিদ এবং ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বিভিন্ন স্থানের শ্রেষ্ঠ ক্ষুদে ইলেক্ট্রনিক্স হবিষ্টদের কিছু বাছা বাছা গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট দিয়ে এই বইটি সাজানাে হয়েছে। তাছাড়া যারা এ বিষয়ে অপেক্ষাকৃত নবীন তাদের সুবিধার জন্য এই বইটিকে দুটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম অংশে তাদের জন্য রয়েছে ইলেক্ট্রনিক্সএর প্রাথমিক কিছু কথা-বার্তা, ইলেক্ট্রনিক্সের নানা রকম যন্ত্রাংশের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত পরিচয় ইত্যাদি । এবং বইয়ের দ্বিতীয় অংশে রয়েছে প্রায় ৬৫টির মতাে বিভিন্ন রকমের ইলেক্ট্রনিক্স প্রজেক্ট। এই প্রজেক্টগুলির কিছু কিছু সহজ ও কিছু কিছু একটু অপেক্ষাকৃত জটিল। সচিত্র সার্কিট ডায়াগ্রাম সহ সেগুলির বিবরণ ও উপকরণ তালিকা আকারে লেখা হয়েছে।

এই বইটি সম্পাদনা করতে আমাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে সাহায্য করছেন আমার স্নেহের অনুজ সুব্রত সাহা । যে নিজেও একজন ইলেক্ট্রনিক্স প্রযুক্তিবিদ। তাছাড়া এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ অনেকেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রজেক্টগুলি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন। তাঁদের সকলের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। সবশেষে কৃতজ্ঞতা জানাই অনুপম প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধিকারী শ্রী মিলন নাথ মহােদয়কে , যার ঐকান্তিক সাহায্য-সহযােগীতা ও অনুপ্রেরণা না পেলে এই বইটি বােধ হয় প্রকাশের মুখই দর্শন করতাে না। তাই তাকেও আমার পক্ষে থেকে জানাই অশেষ কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন।

 


ঈশপের গল্প

স্বভাবভীরু এক ভদ্রলােকের একটিমাত্র ছেলে। ছেলেটি দুরন্ত, সাহসী এবং শিকারে অত্যন্ত আগ্রহী। দ্রলােক একদিন স্বপ্ন দেখলেন, একটি সিংহ তার ছেলেটিকে মেরে ফেলেছে। স্বপ্ন দেখে অত্যন্ত ভয় পেয়ে গেলেন তিনি, ভাবলেন ছেলের শিকারে যেমন ঝোক, সিংহের হাতে মরণই বুঝি তার ভাগ্যে লেখা আছে। ছেলের ভবিষ্যৎকে যেন তিনি স্বপ্নে দেখতে পেলেন।  নিয়তির লিখন এড়ানাের জন্য সভয়ে তিনি ছেলের জন্য একটি উঁচু। দেওয়াল-ঘেরা ঘর তৈরি করে চারদিকে প্রহরী নিযুক্ত করলেন এবং ছেলেকে সেই ঘরে বন্ধ করে রাখলেন। তিনি তার মনােরঞ্জনের জন্যও ব্যবস্থা করলেন, প্রচুর খরচ করে তিনি তার প্রিয় ছেলের প্রিয় সব জন্তু-জানােয়ারের ছবি দেওয়ালে-দেওয়ালে সাজিয়ে দিলেন। সেখানে সিংহের ছবিও ছিল।

কিন্তু শিকারপাগল ছেলের শুধু জন্তু-জানােয়ারের ছবি দেখে মন ভরবে কেন? সে ছবিগুলাে দেখে দেখে যেন আরও ক্ষিপ্র হয়ে ওঠে। একদিন সিংহের ছবির সামনে দাড়িয়ে সে ভীষণ ক্ষেপে উঠল।

 


নেক্সাস

মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর জন্ম ‍ঢাকায়। 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটে এক বছর পড়াশোনা করলেও পরবর্তীতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। 

বিশ্বমানের অসংখ্য জনপ্রিয় থৃলার অনুবাদ করার পর অবশেষে তার প্রথম দুটি মৌলিক থৃলার নেমেসিস এবং কন্ট্রাক্ট প্রকাশিত হলে বিপুল পাঠকপ্রিয়তা লাভ করে। সেই অনুপ্রেরণা থেকে বর্তমানে তিনি অনুবাদের পাশপাশি বেশ কয়েকটি মৌলিক থৃলারের কাজ করে যাচ্ছেন

তার পরবর্তী থৃলার উপন্যাস কনফেশন,মেডুসা কানেকশান এবং ম্যাজিশিয়ান প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। 

সাড়া জাগানো উপন্যাস দ্য দা ভিঞ্চি কোড, লস্ট সিম্বল, গডফাদার, বর্ন আইডেন্টিটি, বর্ন আলটিমেটাম, দ্য ডে অব দি জ্যাকেল, দ্য লাইসেন্স অব দি পয়েন্ট, আইকন, মোনালিসা,পেলিকান বৃফ, এ্যাবসলিউট পাওয়ার , ওডেসা ফাইল, ডগস অব ওয়ার, অ্যাডভেঞ্জার, দান্তে ক্লাব, দ্য কনফেসর ,স্লামডগ মিলিয়নেয়ার, দ্য কনফেফক্স এবং দ্য এইটসহ বেশে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ অনুবাদ করেছেন তিনি।

অভিজাত স্কুল সেন্ট অগাস্টিনে খুন হলো এক জুনিয়র ক্লার্ক, তদন্তে নামলো হোমিসাইড ইনভেস্টিগেটর জেফরি বেগ। বেরিয়ে এলো ভিনড়ব একটি ষড়যন্ত্র। আবারো মুখোমুখি দুই ভুবনের দু’জন মানুষ। ভয়ঙ্কর একটি ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি তারা। অবিশ্বাস্যভাবেই ঘটনা মোড় নিতে থাকে ভিনড়ব দিকে। জেফরি বেগ বাস্টার্ডের যে দ্বৈরথ শুরু হয়েছিলো নেমেসিস-এ, কন্ট্রাক্ট-এ এসে সেটা গতি লাভ করে আর নেক্সাস-এ পাঠক খুঁজে পাবেন সর্ম্পূর্ণ ভিনড়ব একটি উপাখ্যান। 


দানব

ভেসে যাচ্ছে। ছেলেটার চোখে মুখে এক ধরনের বিস্ময়, যেন সে এখনাে বুঝতে পারছে না কী হচ্ছে। রাজু দেখলাে ছেলেটা তার মুখে বিস্ময়ের ভঙ্গীটা ধরে রেখে আস্তে আস্তে বাম দিকে ঢলে পড়ল। তার সামনে আরাে দুজন রক্ত মাখা ছেলে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছে, সার্টের বােতাম বুক পর্যন্ত খােলা, চিৎকার করে কী বলছে বােঝা যাচ্ছে না।

“রাজু! রাজু!”

রাজু ঘুরে তাকালাে, চৈতী চিৎকার করে তাকে ডাকছে। রাজু তখন উঠে দাঁড়ালাে, তাকে এখন চলে যেতে হবে এখান থেকে। মাঠে যারা ক্রিকেট খেলছিলাে তারাও দৌড়তে শুরু করছে। দূরে কোথাও আবার একটা বােমা ফাটার শব্দ হলাে- চিৎকার শােনা যাচ্ছে অনেক মানুষের। চৈতী তার হাত ধরে টেনে নিতে নিতে বলল, “তুই, ওখানে বসে ছিলি কেন? উঠে আসলি না কেন?”

 


সবার জন্য জ্যোতির্বিদ্যা

ফ্ল্যাপে লিখা কথা
* তোমরা যারা আকাশ দেখতে চাও
* তোমরা যারা মনের মধ্যে অনেক প্রশ্ন নিয়ে ঘুমাতে যাও
* তোমরা যারা জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে ভাবতে চাও
* তোমরা যারা এই মহাজগৎ নিয়ে ভাবিত
* তোমরা যারা আকাশের কিছু অংকও শিখতে চাও যাতে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পার।

-- তোমাদের জন্য এই বই

সূচিপত্র
পর্ব-১
* রাতের আকাশ
* জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাস
* রেডিও তরঙ্গে পর্যবেক্ষণ
* মহাকাশযান
* জ্যোতিষাঙ্ক
* সংযোজনী ও গাণিতিক সমস্যাবলী

পর্ব-২
* আমাদের সৌরজগৎ
* চন্দ্র ও সূর্য
* কাছের গ্রহ
* দূরের গ্রহ
* গাণিতিক সমস্যাবলী

পর্ব-৩
* আলোর খেলা
* তারকালোক
* নক্ষত্রের জন্ম-মৃত্যু
* কৃষ্ণবিবর
* গাণিতিক সমস্যাবলী

পর্ব-৪
* আমাদের ছায়াপথ
* গ্যালাক্সি জগৎ
* বিগ ব্যাং ও তারপর
* মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ
* মহাবিশ্বে আমরা কি নিঃসঙ্গ ?


গল্পে-জল্পে জেনেটিক্স

‘গল্পে-জল্পে জেনেটিক্স’ বইটির সম্পর্কে লেখার আগে বইয়ের পটভূমিটাও একটু জানানো দরকার। বইটি লিখবার ক্ষেত্রে বিদেশী ভাষার লেখা ‘এ কার্টুন গাইড টু জেনেটিক্স’ বইটি থেকে সমুদয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। কাটুন গাইড টু জেনেটিভ এর মূল বইটি আমার হাতে আসে যখন, তখন আমি মেডিকেলের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র। সুব্রত ভাই প্রথম বইটির কথা আমাকে বলেছিলেন। আর চমকের (ইনিই হলেন আমাদের লেখক সাহেব) কাছ থেকে বইটির সফট কপি পাই। সুব্রত ভাই আর চমক দুজনই ইঞ্জিনিয়ার মানুষ আর আমি হলাম গোবেচারা ডাক্তার। গণিত অলিম্পিয়াড নামক অসামান্য চমৎকার ব্যাপারটি বাংলাদেশে না ঘটলে আমরা হয়তো কেউ কাউকে কখনোই চিনতাম না। সে যাই হোক, বইটি হাতে পেয়ে এবং সেই সাথে তাঁদের কাছে বইটির উচ্চকিত প্রশংসা শুনে, পড়ার আগে আমি ধারণা করেছিলাম, না, বইটি বোধহয় একেবারে মন্দ নয়। আমাদের দেশের শিক্ষা্ব্যবস্থার কারণেই হোক কিংবা যে কারণেই হোক, অনেক ডাক্তারই ভাবেন যে ডাক্তারবিদ্যা এবং তৎসংশিষ্ট জ্ঞান (তার মধ্যে জেনেটিক্সও পড়ে) হজম করা ইঞ্জিনিয়ারদের কম্মো নয়। অনেক ইঞ্জিনিয়ারও ডাক্তারদের সম্পর্কে অনুরূপ ধারণা পোষণ করেন। তো, আমিও প্রথমটায় ভেবেছিলাম, সত্যটা বলেই ফেলি, এই বইটিতে জেনেটিভের নিছক প্রাথমিক কিছু ধারণা অত্যন্ত সরল ভাষায় বাচ্চাদের (এবং ইঞ্জিনিয়ারদের) বোঝার মতো করে তুলে দরা হয়েছে। বইটি পড়ে আমি নতুন কিছু শিখব তা আশা করে বইটি পড়া শুরু করিনি, বরং, যারা জেনেটিভের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যারয়ে পড়েনি, তাদেরকে কী ভাষায় বললে সহজে জেনেটিভ বোঝানো যাবে সেটা জানতেই বইটা পড়া শুরু করি। কেননা, ডাক্তার হিসেবে প্রায়ই অসুখ-বিসুখ নিয়ে রোগী বা রোগীর স্বজনকে বুঝিয়ে বলা লাগে এবং তখন জেনেটিক্স সংক্রান্ত অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু বইটা পড়া যতোই এগোতে থাকে ততোই আমি বিস্মিত হতে থাকি। একী! এতো দেখছি মেডিকেল প্রথম বর্ষের বায়োকেমিস্ট্রি বিষয়টির অন্তর্ভুক্ত জেনেটিক্স কার্ডটির (মেডিকেল কলেজে কোনো বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত কোর্সকে ‘কার্ড’ বলে) পুরোটাই ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে আরো অনেক কিছু পেলাম যা ঐ কার্ডে ছিলনা কিন্তু থাকলে ভালো হতো। ইতিহাস থেকে শুরু করে বায়োটেকনোলজি আর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, আবার, জৈববিবর্তনের আলোকে জেনেটিক্সের বিশ্লেষণ, মলিকুলার বায়োলোজি কী নেই! কিন্তু তাই বলে বইটি কিন্তু একগাদা তথ্যের স্তুপ নয়। যেকোনো মজার কমিঙের মতো এক নিঃশ্বাসে আগাগোড়া পড়ে ফেলা যায়। পড়ার সময় আমার মনে হচ্ছিল, ইশ, প্রথম বর্ষে থাকতে যদি বইটি পেতাম তাহলে জেনেটিক্স কার্ডটাকে ঐরকম বিভীষিকা মনে হতো না। জটিল সব বিষয়ের কী আশ্চর্য সরল উপস্থাপনা, অথচ সরল করতে গিয়ে ‘অতি-সরল’ ছেলেভুলানো গল্প হয়ে যায়নি। বইটি বোঝার জন্য স্কুল পর্যায়ের রসায়ন জ্ঞানই যথেষ্ট, অথচ বইটির বিষয়বস্তু স্নাতক পর্যায়ের। 

এতো অসাধারণ সক দিকের সমন্বয় ঘটেছে যে বইতে, তার উপর বইটি হাতে লেখা ও আঁকা। এমন বইয়ের বৈজ্ঞানিক তথ্য, রসবোধ, শিল্পগুণ, নান্দনিকতা সবকিছু অবিকৃত রেখে পুরোপুরি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির উপযোগী করে লেখা চাট্টিখানি কথা নয়। চমক যখন প্রথম কুড়ি পৃষ্ঠা লিখে আমাকে দেখতে দিলো তখন তো আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। চমক একজন ইঞ্জিনিয়ার; ইঞ্জিনিয়ারদের সম্পর্কে আমার আগে যে ধারণাই থাকুক তা সম্পূর্ণ পাল্পে গেলো। আমার মনে হলো, চমকের রূপান্তরটি হয়তোবা মূল বইকেও অতিক্রম করে গেছে। তারপর অন্তর্জালে তার সাথে যখনই ভাব বিনিময় হতো তখনই বইটির কাজ কদ্দুর হলো তা বারবার জানতে চেয়ে তাকে যথেষ্ট বিরক্ত করেছি। সেজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। প্রবাসে থেকে পড়াশোনার চাপ ও এতো ব্যস্ততার মাঝেও এতো চমৎকার একটা কাজ হতো অল্প সময়ে সম্পন্ন করা বোধহয় চমকের ক্ষেত্রেই সম্ভব। বাংলাদেশের বইয়ের বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে এরকম ভিন্নধারার একটি বই প্রকাশ করার সময়োপযোগী সামাজিক দায়িত্ব সাহসের সঙ্গে পালন করায় প্রকাশক অন্যরকম প্রকাশনীর যত বড় ধন্যবাদ প্রাপ্য তা দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। শুধু ধন্যবাদ এজন্য যথেষ্টও নয়। 

বইটি পড়ে জেনেটিক্স সম্পর্কে একটা সামগ্রিক ধারণা তো পাওয়া যাবেই, তার চেয়ে বড় কথা হলো, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে দেবে এ বইটি। খুব কম বইয়েরই এমন ক্ষমতা থাকে। তাও যদি সেটা জেনেটিক্সের মতো কাটখোট্টা বিষয় হয় তবে তো কথাই নেই। যাঁরা এই বইয়ের আগে জেনেটিভের আর কোনো বই পড়েননি তাঁরা নিশ্চয়ই আমাকে গাল পাড়বেন জেনেটিক্সকে ‘কাঠখোট্টা’ বলার জন্য। তা আমি হাসিমুখে মেনে নেবো।


পৃ (হার্ডকভার)

আমি খুব ধীরে ধীরে চোখ খুলে তাকালাম। আমার মাথার কাছে একটি চতুষ্কোণ স্ক্রিন, সেখানে হালকা নীল রঙের আলাে, এই আলােটি আমার পরিচিত, কিন্তু কোথায় দেখেছি এখন কিছুতেই মনে করতে পারলাম না । খানিকক্ষণ চেষ্টা করে হাল ছেড়ে দিয়ে আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম। কিছু একটা ঘটছে এবং আমি জানি ব্যাপারটা ঘটবে কিন্তু সেটি কী আমার মনে পড়ছে না। আমি সেটি মনে করার প্রাণপণ চেষ্টা করতে করতে আবার গভীর ঘুমে অচেতন হয়ে পড়লাম।

এক সময় আবার আমার চেতনা ফিরে আসতে থাকে এবং আধাে ঘুম আর আধাে জাগরণের মাঝামাঝি একটি তরল অবস্থায় আমি ঘুরপাক খেতে থাকি। আমি একরকম জোর করে চোখ খুলে তাকালাম, চতুষ্কোণ স্ক্রিনটিতে একটি নীল গ্রহের ছবি ফুটে উঠেছে। আমি এই গ্রহটিকে চিনি, এর নাম পৃথিবী, ছায়াপথের একটি সাদামাটা নক্ষত্রকে ঘিরে যে গ্রহগুলাে ঘুরছে এটি তার তৃতীয় গ্রহ। এই গ্রহে প্রাণের বিকাশ হয়েছিল এবং আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই গ্রহ থেকে এসেছে। আমরা একটি মহাকাশযানে করে এখন আবার এই গ্রহটিতে ফিরে যাচ্ছি।

 


কিশোর উপন্যাসসমগ্র ৪র্থ খণ্ড

ভূমিকা
আমার ধারণা কিশোর উপন্যাস সমগ্রের এই খণ্ডটি একটু অন্যরকম হয়েছে-অন্যান্য খণ্ডগুলোর তুলনায় এখানে বৈচিত্র্য একটু বেশি। আমার একমাত্র রূপকথাটি এখানে আছে, বাচ্চা সায়েন্টিস্টের উপন্যাসটি এখানে আছে, বিদেশের পটভূমিতে এখানে আছে। এর বাইরে আমার ডানপিটে ছেলেমেয়েদের এ্যাডভেঞ্চার তো আছেই। মেয়েরা মনে হয় এবারে আমাকে বেশি দোষ দিতে পারবে না-তিন তিনটি উপন্যাসের মূল চরিত্র মেয়ে। এই গ্রন্থের উপন্যাসগুলোর মাঝে চোখ বুলিয়ে এবারে দুটো জিনিস চোখে পড়েছে। কিশোর কিশোরীদের জন্যে লেখা আমার প্রায় সব উপন্যাসেই কম বেশি মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারটি চলে আসে। এবারে লক্ষ করেছি আরো একটি ব্যাপার চলে আসেত শুরু করেছে-সেটি হচ্ছে লেখাপড়া আমি মাস্টার মানুষ মাথায় মাঝে লেখাপড়ার ব্যাপারটা মনে হয় পাকাপাকিভাবে ঢুকে গেছে-কিছু লিখতে চাইলে কিভাবে কিভাবে সেটা যেন চলে আসে! যারা পড়ছে তারা যেহেতু সেভাবে প্রতিবাদ করছে না আমি তাই সেটা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তা করছি না। বেশ কিছুদিন ছোট একজন পাঠক আমাকে বলেছিল, “আপনি বড়দের জন্যে কেন লিখেন? কক্ষনো লিখবেন না-শুধু আমাদের জন্যে লিখবেন!” আমি মুখ কাচুমাচু করে বলেছিলাম, “বিশ্বাস কর, আমিও আসলে শুধু তোমাদের জন্যেই লিখতে চাই-কিন্তু কী করব বল, বড় বড় মানুষেরা বড় বিরক্ত করে!” আমার মনে হয় আমার সময় হয়েছে শুধু বাচ্চাদের জন্যে লিখা, তার কারণ একটা জিনিস বড় মানুষেরা কখনো দিতে পারে না, ছোটরা পারে। সেটি হচ্ছে ভালোবাসা এবং ভালোবাসা!
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
সূচীপত্র
*নাট-বল্টু
*বৃষ্টির ঠিকানা
*লাবু এল শহরে
*রাশা
*মেয়েটির নাম নারিনা
*লিটু বৃত্তান্ত


সায়েন্স ফিকশান সমগ্র ৪র্থ খণ্ড

সূচিপত্র
*ত্রাতুলের জগৎ
*বেজি
*ফিনিক্স
*সায়রা সায়েন্টিস্ট
*সুহানের স্বপ্ন
*অবনীল
*নায়ীরা
*বিজ্ঞানী অনিল লুম্বা


জিম করবেট রচনাসমগ্র

আমরা কালাধুঙ্গির বাের নদীর পুরানাে কাঠের সেতুটার এক পাশে বসে ড্যানসির ভূত-পেত্নীর কিস্সা শুনছিলাম। সে সব গল্প এমনই ভয়াল যে, শুনলে শরীরের রক্ত হিম হয়ে আসে। আমরা আট থেকে আঠারাে বছর বয়সের চৌদ্দজন ছেলেমেয়ে একজন অন্যজনের গায়ের সাথে গা লাগিয়ে বসেছি। তবু ভয়ে দলের মেয়েদের মধ্য থেকে কেউ-কেউ ভয়-পাওয়া চোখে পেছনের ঘন অন্ধকার জঙ্গলটার দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে বারবার তাকাচ্ছিল। 

 তখন সবেমাত্র সন্ধ্যার অন্ধকার ধীরে ধীরে ঘন হয়ে আসছে। আশেপাশের ঝােপ-জঙ্গল থেকে শুকনাে কাঠ-পাতা জড়াে করে আমরা আগুন জ্বেলেছিলাম। সেই আগুন নিভে গেলেও গনগনে লালচে আঁচ তখনাে রয়ে গেছে। এই গা ছমছম-করা পরিবেশে ড্যানসির ভূত-পেত্নীর গল্পগুলাে আমাদের কাছে খুবই বিশ্বাসযােগ্য মনে হচ্ছিল।

আয়ারল্যান্ডের মানুষ ড্যানসি। ওরা ভূত-প্রেতে চরমভাবে বিশ্বাসী। সে এতক্ষণ শুনিয়েছে আপাদমস্তক ঢাকা-দেওয়া মূর্তি, তাদের হাড়ের ঠকঠকানি, রহস্যজনকভাবে ঘরের দরজা খুলে-যাওয়া আর বন্ধ-হওয়া আর পুরানাে বাড়ির সিড়িতে মচমচ শব্দ—এসব নিয়ে নানা রকম জমজমাট সব ভূতের কিস্সা। 

এসব ভূতের কিসসা শুনতে শুনতে আমরা যখন সবাই সম্মােহিতের মত প্রায়—এমন সময় একটা বুড়াে শিঙাল পেঁচা কর্কশ স্বরে ডাকতে ডাকতে আমাদের মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গেল। হয়তাে বাের নদীর মাছ আর ব্যাঙ ধরতে বেরােলাে। পেঁচার ডাক শুনে, সুযােগ বুঝে ড্যানসি তার গল্পের মােড় ঘুরিয়ে দিল। এবার শুরু করল ভয়াবহ সব বশির কিস্সা।