Categories


বারাব্বাস

কীভাবে তাদের ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল এবং কারা তার চারপাশে এসে সমবেত হয়েছিল, সবাই তা জানে। দাঁড়িয়েছিল মা মেরি, মেরি মাগদালেন, ভেরােনিকা, সিরিনের সাইমন আর এরিমিথিয়ার যােশেফ। সাইমন ক্রুশটিকে বহন করে এনেছিল ; যােশেফ তার শবদেহকে আচ্ছাদিত করেছিল। ঢালু প্রান্তরের আরেকটু নিচে, আরাে একজন লােক দাঁড়িয়েছিল। মৃত্যুপথযাত্রী লােকটির উপরেই তার দৃষ্টি। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সে তার মৃত্যুযন্ত্রণা দেখে আসছে। লােকটির নাম বারাব্বাস।


অচিন দ্বীপের গল্প

প্রয়ােজন বা উচ্চাকাঙ্ক্ষার আর্জি জানাতে আসতে পারবে না। প্রথমে ধারণা হতে পারে যে এই নিয়মের কারণে সবচেয়ে বেশি যে ব্যক্তি লাভবান হবেন তিনি রাজা মশাই নিজে কারণ, যেহেতু অল্পসংখ্যক মানুষ তাদের অভিযােগ নিয়ে তাকে বিরক্ত করার সুযােগ পায়, তিনি আরাে বেশি সময় আর ফসসরত পান তােষামােদ শােনার. বিবেচনা করার এবং উপভােগ করার। তবে, দ্বিতীয়বার চিন্তা করলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, লােকসান আসলে রাজামশাইয়ের, এবং এটাই সত্যি, কারণ যখন মানুষ বুঝতে পারে যে, তাদের জবাব আসতে প্রয়ােজনের চেয়ে বেশি সময় নিচ্ছিল, তখন জনগণের প্রতিবাদ সামাজিক অসন্তোষ বাড়িয়ে তুলত বহুগুণ,


সব পেয়েছির বই

টমাস এমন অনেক কিছু দেখতে পায় যা অন্যরা পায় না। খালের পরিষ্কার পানির নিচে সাতার কাটা মাছ। মিসেস ভন এমার্সফোর্টের মায়াজাল, পাশের বাড়িতে বসবাসকারী বিটোভ্যানের ভক্ত ডাইনী। মোহময়ী রূপের অধিকারিনী এলিজা যার একটি পা কৃত্রিম। এবং প্রভু যিশু, যিনি তাকে বলেন, ‘আমাকে শুধু যিশু বলো।’ টমাস তার কল্পনায় দেখা এই দৃশ্যাবলী লিপিবদ্ধ করে রাখেÑ যার নাম দিয়েছে সে সব পেয়েছির বই। এটা তাকে সান্ত্বনা এবং আশ্বাস দেয় যখন তার বাবা তাকে ভীষণ মারে, যখন স্বর্গের পরীরা তার মায়ের কালো চোখের জন্য কান্না করে। এবং এগুলো তাকে শক্তি যোগায় অবশেষে তার বাবার মুখোমুখি হওয়ার এবং সেই পথে এগিয়ে যাওয়ার বড় হয়ে সে যা হতে চায় ‘সুখী’।


আমার স্মৃতির বিষাদ গণিকারা

তেমন আলাদা করে বলার কোনাে অপেক্ষা রাখে না যে আমি আসলে একজন কুৎসিতদর্শন, মিকে ও পুরনাে ধ্যানধারণার পুরুষমানুষ। কিন্তু সারা জীবনই আমি ওই ধরনের পুরুষদের ঘেন্না করতে করতে ভান করেছি ঠিক উলটো, দেখাতে চেয়েছি আমি ওরকম কখনও নই, আলাদা। কিন্তু আজকের ঘটনাটা, আমি যা, ঠিক তাই হওয়ার জন্যে রােজার সঙ্গে আমার ওই কথাবার্তা, আমার মনে হয়েছিল আমার ভেতরে এক অন্য বিচারবােধ কাজ করছে। হাঁপিয়ে ওঠা ওই একান্ত নিজস্ব বিচারবুদ্ধিকে একটু আলাে-বাতাস দিতেই আমি রােজার কাছে অমন একটা প্রস্তাব দিয়েছি। তাছাড়া আরও মনে হয়েছিল যে আজ আমার এক নতুন জীবনের শুরু ঠিক এমনই একটা বয়সে, যখন বেশির ভাগ মরণশীলই অবধারিত মৃত।


প্যান

শুয়ে থাকতে থাকতে অনেক সময় সেখানেই ঘুমিয়ে পড়ি। সারা গায়ে পােশাক, খেয়াল নেই, সমুদ্র-পাখীদের কলরব শুরু না হওয়া পর্যন্ত ঘুম আর ভাঙে না। জানালা দিয়ে চেয়ে দেখি বড় বড় কারখানার দালান, সিরিল্যাণ্ড-এর বন্দরঘাট-ঐখান থেকেই তাে রুটি নিয়ে আসি রােজ। আরাে খানিকক্ষণ শুয়ে থাকতে ভালাে লাগে, আশ্চর্য হয়ে ভাবি এইখানে নর্ডল্যাণ্ড-এ কি করে এলাম! তারপর ঈশ উনুনের ধার থেকে তার লম্বা কৃশ দেহটি মুড়ি দিয়ে বলটিতে একটু আওয়াজ করে হাই তুলে লেজ নেড়ে উঠে দাঁড়াত, আর আমিও লাফিয়ে উঠতাম-তিন চার ঘণ্টা বিশ্রামের পর তাে বটেই। নিবিড় আনন্দে তা ভরা... নিবিড় আনন্দে ভরা তাে সবই।


লাইফ এন্ড টাইম অব মাইকেল কে

তিনি বাচ্চাকে তার কাজের জায়গায় নিয়ে যেতেন এবং যখন সে আর বাচ্চা থাকল না তখনও রােজই নিয়ে যেতেন। কারণ অন্যদের হাসিতামাশা আর কানাকানি তাকে আঘাত করতাে। তিনি তাকে অন্য বাচ্চাদের নিকট থেকে দূরে রাখতেন। মাইকেল কে বছরের পর বছর ধরে একটা কম্বলের উপরে বসে দেখত তার মা অন্য লােকের মেঝে মুছে চকচকে করে তুলছেন। সে শান্ত নীরব হয়ে বসে থাকা শিখেছিল ।


মুক্তা

এর বছর কয়েক পর মেক্সিকোতে বেড়াতে গেলেন স্টেইনবেক। মেক্সিকোর সেই সময়ের বিখ্যাত চিত্র পরিচালক এমিলি ফার্নান্দেজের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হলাে। ফার্নান্দেজ তাঁকে প্রস্তাব দিলেন একসঙ্গে কিছু কাজ করার। ঠিক হলাে মেক্সিকোর মানুষের জীবন নিয়ে একটি বই লিখবেন। স্টেইনবেক। স্ক্রিপ্টও তৈরি করবেন তিনি। বইটিকে চলচ্চিত্রে রূপ দেবেন ফার্নান্দেজ।


দি গড অব স্মল থিংস

মে মাস। এয়েমেনেমে এখন গরম। সময়টা যেন গভীর ভাবের। এখানকার দিনগুলাে এখন দীর্ঘ এবং সঁতসেঁতে। প্রবহমান নদীটি ক্ষীণস্রোতা। কেবল হলুদ রং ধরেছে আমগাছে। ডালে কাকগুলাে এই কাঁচাপাকা আম নিয়েই মহাব্যস্ত। চারদিকের গাছগুলাে মরা সবুজ। কলা পেকে লাের গন্ধ ছড়াচ্ছে। পাকা ফলের মাদকগন্ধে নীল মাছি হাওয়ায় উড়ছে ভনভনিয়ে। স্বচ্ছ কাচের জানলায় ধাক্কা খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ছে তীব্র রােদের নিচে।