সাদিব, নন্দিনী, অস্তি আর মাইকেল চারজন খুব বন্ধু। তার একসাথে থাকে, একসাথে খেলে, একসাথে দুষ্টমি করে। মাঝে মাঝে তারা ......
বাবা যখন ছোট, তখন কেবলি পড়ত সে ৷ পড়তে শিখেছিল বাবা চার বছর বয়সে, পড়া ছাড়া আর কিছুতেই ঝোঁক ছিল না । অন্য ছেলেরা লাফ ঝাঁপ ছুটোছুটি করছে, মজার মজার খেলা খেলছে নানা রকম, ছোট্ট বাবা কিন্তু তখন ব’সে আছে তার বইটি নিয়ে । শেষ পর্যন্ত ঠাকুদাঁ ঠাকুমার দুশ্চিন্তা হল ৷ সারাক্ষণ বই নিয়ে থাকলে ক্ষতি হবে বৈকি । বই উপহার দেওয়া বন্ধ হল, হুকুম হল পড়া চলবে কেবল দিনে তিন ঘন্টা ৷ তাতে কিন্তু ফল হল না ৷ সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত ছোট্ট বাবার বই পড়া বন্ধ হল না ৷ নিয়মমতাে তিন ঘন্টা বাবা পড়তে লোকের সামনে।
সভা মানে হলো সব পুশুরা একসঙ্গে হবে। বুদ্ধিমান পুশুরা বক্ততা দিবে আর বোকারা শুনবে আর হাত তালি দিবে। মাঝে মাঝে মাথা নাড়বে....
আজকে টুনটুনি র মেজাজ মোটেও ভালো নাই।কেমন করে ভালো থাকবে অংক পরিক্ষায় আজ সে এত বড় একটো গোল্লা েপেয়েছে...
সাদামাটা জীবনে আশরাফুদ্দিন তার স্ত্রীর বড়ভাইয়ের ওপর নির্ভরশীল। অফিস- বাসায় সবখানে কোণঠাসা। তবে তিনি তার কন্যা কে খুব ভালোবাসেন। একবার মেয়ের সুস্থতার জন্য তার প্রিয় কিন্তু অদ্ভুত তিনটি শখ ছেড়ে দেওয়ার মানত করেন। অনেকে অনেক কথা বলবে জেনেও তার আদুরে কন্যার জন্মদিনের উপহার হিসেবে কাক কিনে আনেন। এরও এক কারণ আছে। এই কাকের কাছ থেকেই তিনি আবিষ্কার করেন কাকদের পরিবার, সংসার, ভালোলাগা, মন্দলাগা, বিপন্নতা আছে। তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে কাক তার অফিসে অর্থ লোপাট করার প্রকৃত অপরাধীকে ধরিয়ে দিতে সাহায্য করে। কিন্তু কি করে? তার বিশেষ মানত তিনটিই বা কি? আশরাফুদ্দিন এই কাকপাখিটির নাম দেন 'কাকারু'। কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনি কেন কাওরানবাজারের জারুল গাছগুলোর পাশে কাকারু!কাকারু!বলে ডাকছেন?
থরথর করে কাঁপছে মামদো ভূত ৷ মানুষের রূপ ধরে গতকালের ট্রেনে কলকাতা থেকে ঢাকায় এসেছে সে ৷ হালকা একটা চাদর আর দুটো জামা এনেছে সাথে ৷ ভেবেছিল এটা দিয়ে শীত তাড়াবে । কিন্তু বাংলাদেশে আজকাল যা শীত পড়ছে একবার ইংল্যান্ডে গিয়ে এরকম বিপদে পড়েছিল ৷ টেমস নদীর পাড়ে হাওয়া খেতে গিয়ে টের পেয়েছে শীত কাকে বলে! এখন সে কথাই মনে পড়েছে । বারো বছর আগে বাংলাদেশি বন্ধুদের আমন্ত্রণে একটা মৈত্রী সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছিল ৷ সে বছর কলকাতা থেকে আরো অনেকেই এসেছিল ৷ সবাই নেচে-গেয়ে বাংলাদেশি ভূতদের মাতিয়ে গিয়েছিল।
সবাই রাক্ষস চিনে, খোক্কসও চিনে। ভোক্কস চিনে না। ধানমন্ডি লেকের পাশে এক ভোক্কস এর দেখা পেয়েছিলাম। সে আগ্রহ করে খবরের কাগজ খাচ্ছিল....
আমাদের ক্লাসে মুনির ছেলেটা একটু অদ্ভুত ধরনের ৷ কারো সঙ্গে কথা বলে না । সব সময় পেছনের বেঞ্চিতে বসে । ক্লাসের সারাটা সময় জানালা দিয়ে বাইরে তাকািয় থাকে । স্যার কিছু জিজ্ঞেস করলে চোখ পিটপিট করতে থাকে ৷ তখন তার মুখ দেখে মনে হয়, সে স্যারের একটি কথাও বুঝতে পারছে না ৷ মুনিরের এই স্বতাব স্কুলের সব স্যাররা জানেনা কাজেই কেউ তাকে কিছু জিজ্ঞেস করেন না ৷ শুধু আমাদের অঙ্ক স্যার মাঝে-মাঝে ক্ষেপে গিয়ে বলেন, ‘কথা বলে না ৷ ঢং ধরেছে।
ইংল্যান্ডের নটিংহাম শহরের কাছেই ছিল বিশাল শেরউড জঙ্গল। সেই জঙ্গলে আস্তানা গেড়েছিল দুর্দান্ত দুঃসাহসী এক মহৎ হৃদয় দস্যু - রবিন হুড ও তার সাত কুড়ি দুর্ধর্ষ অনুচর। অত্যাচারী নর্মান শাসক, প্রজা-নিপীড়ক জমিদার, অসৎ ব্যবসায়ী আর অর্থ-লোলুপ বিশপ-মোহান্তদের অন্তরাত্মা কাঁপিয়ে দিয়েছিল রবিন; কিন্তু আবার লুন্ঠিত অর্থ দীন-দুঃখীদের মধ্যে বিতরণের মাধ্যমে জয় করে নিয়েছিল সাধারণ মানুষের অন্তর। বিপদে সাহায্য চেয়ে কেউ কোনদিন ফিরে আসেনি তার দুয়ার থেকে... ... এমনি সারসংক্ষেপ নিয়ে বাংলায় অনুবাদ করা হয় বিশ্ব সাহিত্যেরই অন্যতম সেরা ফিকশন চরিত্র রবিন হুডের।
এটা টুকুন এর গল্প। কয়দিন পরই টুকুন আট বছরে পা দিবে। টুকুনের বাবা রশিদ সাহেব ব্যাঙ্কে চাকরী করেন। তার ফাঁকে তিনি লেখালেখিও করেন। অনেকদিন থেকে তিনি একটা উপন্যাস শেষ করতে চাচ্ছেন। উপন্যাসের নাম "একি কান্ড"। টুকুনের মা 'মুনা' গৃহিণী। টুকুনের একটা ছোট বোন আছে, নাম মৃদুলা। অসম্ভব শান্তশিষ্ট মেয়ে। কিছুদিন যাবত টুকুন একটা কাকের সাথে কথা বলে। নানান রকম কথা। এবং এ কথা ও সবাইকে বলে বেড়ায়। যে কারনে ওর বাবা মা ওর উপর কিছুটা বিরক্ত। এই বয়সে যদি এরকম বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলতে থাকে তাহলে বড় হয়ে কি করবে? টুকুন অবশ্য কখনও স্বীকার করেনা যে সে বানিয়ে বলছে। টুকুনের বাবা ওকে বলে দিয়েছেন কাক নিয়ে যেনো আর কখনও কোনও কথা না বলে। টুকুনের সবচেয়ে পছন্দের মানুষ ওর ছোটফুপি। সে এবার এম.এস.সি পরীক্ষা দিবে।
মবিন উদ্দিনের বয়স পঞ্চাশ। নেত্রকোনা শহরে "বিউটি বুক সেন্টার" নামে তার একটা বইয়ের দোকান আছে। দোকানের বিক্রি-বাট্টা তেমন ভাল না।কোনও রকম সংসার চালাচ্ছেন এই দিয়ে। স্ত্রী এবং ১৩ বছরের এক অন্ধ মেয়ে নিয়ে তার সংসার। মেয়ের নাম সুপ্তি।সু প্তি দেখতে অসাধারন সুন্দর। সব থেকে সুন্দর ওর চোখদুটি। কেউ ওর চোখদুটি দেখলে বিশ্বাস করতে চাইবেনা যে সে অন্ধ। আরও একজন মানুষ মবিন উদ্দিনের সংসারে ছিল। তার বড় ছেলে টুনু। বছর ছয়েক আগে প্রচন্ড জ্বর উঠে মারা গেল। ও তখন ভার্সিটির হোস্টেলে ছিল। জ্বর বেশি দেখে শিক্ষকরা মিলে ওকে হাসপাতাল নিয়ে যায়। মবিন সাহেব হাসপাতালে গিয়ে দেখেন ছেলে অজ্ঞান। নার্স এসে বলল ওর জ্ঞ্যান ফিরতে দেরি হবে, আপনি বরং এই ফাঁকে চা খেয়ে আসুন। তিনি চা খেয়ে ফিরে এসে আর ছেলেকে পেলেন না। শুনলেন মৃত্যুর আগে টুনুর জ্ঞ্যান ফিরেছিল। সে জিজ্ঞেস করেছিল "বাবা আসেনি?" এর জন্য তিনি গত ছয় বছর ধরে চা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন।
পিপলী বেগম মূলত ছোটদের বই। তবে যেসব বাবা মা বই পড়ে বাচ্চাদের গল্প শোনাতে চান বইটি তারাও পড়তে পারেন। মতিন সাহেবের তিন মেয়ে। তিলু সবার বড়, সে ভিকারুন্নেসায় ক্লাস সেভেনে পড়ে। তার ছোটটা বিলু, সে একই স্কুলে থ্রি তে পড়ে। সবার ছোটটা এখনও কোথাও ভর্তি হয়নি। মতিন সাহেব ডাক্তার মানুষ। বাচ্চাদের সময় দিতে পারেন না।খুব ভোরবেলা বেড়িয়ে যান এবং অনেক রাতে ফেরেন।বাচ্চাদের সাথে দেখাই হয়না।ওরা যখন তাকে ভুলতে বসেছে তখন তিনি দুদিনের ছুটি নিলেন। দ্বিতীয় দিন প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে।উনার স্ত্রী বাসায় নেই, ভাইয়ের বাসায় গিয়ে আটকে গেছেন,রাতে ফিরবেন না।তিন নেয়ে উনাকে ধরল গল্প শোনানোর জন্য। বাঘের গল্প।
পুতুল একটি এগারো বছরের বালক। সে সমাজের এলিট শ্রেণির একটি পরিবারের সন্তান। জন্ম থেকে হার্টের সমস্যার কারনে তার পিতামাতা তাবে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে। পুতুলের পিতামাতা সারাদিন বাড়ির বাইরে কাজে ব্যাস্ত থাকায় পুতুলকে বেশি সময় দিতে পারে না। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে পুতুল বাসা থেকে বের হয়ে হাটতে হাটতে চলে যায় সোহরাওয়ার্দি উদ্যান। সেখা দেখা হয় তার বয়সি ছেলে অন্তুর সাথে। অন্তু এবং তার দুই বছরের ছোটবোন মরিয়ম কমলাপুর রেল স্টেশনে ঘুমায়।
A child should not have to "do someting" to get love. Love for a child must be unconditional and not tied to any "achievement".
মুশির বয়স ছয়। ছয় বছরের বাচ্চার সবসময় হাসিখুশি থাকে। তারা হই চই করে আনন্দ করে । কিন্তুু মুশি সেইরকম না।
মিলি আর টিটন অবাক হয়ে দেখল কটকটি টেলিভশনের ভিতরে ডাকাত দুজনের সাথে মারপিট শুরু করেছে। চিৎকার চেঁচামেচি ধুমধাম শব্দ শুনে কানে তালা লেগে যাবার অবস্থা।
আব্বু আর আম্মু ছুটে এলেন, জিজ্ঞেস করলেন, “কী হয়েছে? কী হয়েছে?”
মিলি বলল, “কটকটি টেলিভশনের ভিতর ঢুকে ডাকাতদের সাথে মারপিট করছে। ডাকাতেরা তাকে আচ্ছা মতোন পেটাচ্ছে।”
আব্বু বললেন, “সর্বনাশ! এখন কী করা যায়?”
টিটন বলল, “চ্যানেল বদলে দিই!”
সে দৌড়ে চ্যানেল বদলে দিতেই সেটা হয়ে গেল ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল। সেই চ্যানেলে তখন দেখাচ্ছিল একটা রয়েল বেঙ্গর টাইগার। সেই বাঘটা কটকটিকে দেখে তার ওপর লাফিয়ে পড়ল, কটকটি তখন চিৎকার করে বলল, “ও বাবা গো! খেয়ে ফেলল গো!”
আনন্দদানের বাহিরে ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পে যে হৃদয়বিদারক মানবিক সংঘাত আমরা দেখি তা সত্যি লজ্জাজনক ৷ তাই দুঃসাহস করেই গল্পটির কিছু বিষয় আলোকপাত করার প্রয়োজন অনুভব করছি । গল্পটির বক্তা মিনির বাবা রামদয়াল ৷ কিন্তু এ বক্তা রবীন্দ্রনাথ নিজেই বলে মনে হওয়া স্বাভাবিক ৷ তবুও এটিকে কেবল তাঁর সৃষ্টি হিসাবে বিবেচনা করে আলোচনার সূত্রপাত করাই ভাল ৷ গল্পের অন্যতম চরিত্র মিনি অল্প বয়সী । স্বাভাবিকভাবে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাবার সময় কাবুলিওয়ালাকে দেখে তার কৌতূহলের সীমা থাকেনা ৷ তাই দেখা মাত্রই রহমতকে ‘কাবুলিওয়ালা, ও কাবুলিওয়ালা’ বলেই ডাকে । সে ডাক অপমানের, তুচ্ছতাচ্ছিল্যের ।
বাড়ির পিছনের ফটকে একটু আগেই দাঁড়িয়ে ছিল কিনা ! দাড়িয়ে ছিল মানে? ফটকে দাঁড়িয়ে থাকবে কেন? হয়
ভিতরে আসবে, না হয় বিদেয় হবে ৷ লোকটা কে, কী চায় জিজ্ঞেস
করেছিল
“আজ্ঞে, ঠিক সাহস হয়নি ৷”
“কেন, লোকটা কি,ষণ্ডণ্ডেন্ডা গোছের?”
“বলা মুশকিল।
“পোশাক আশাক কেমন?”
“আজ্ঞে, পোশাক তেমন খারাপ কিছুও নয়৷ পরনে বোধহয়
একটা পাতলুনের মতো দেখলুম, গায়ে একটা জামাও মনে হয়
ছিল, গলায় একটা মাফলার জড়ানো ছিল কি না ঠিক মনে পড়ছে
না, গায়ে একটা কেটি থাকলেও থাকতে পারে ৷