Categories


হ্যান্স এন্ডারসনের সেরা রূপকথা

সারা দেশ কী অপরূপ মনে হচ্ছে! গরমের সময় গমের ক্ষেত হলুদবর্ণ হয়ে আছে, জইক্ষেত সব বুজ; শুকনাে খড়কুটো মাঠের মধ্যে জড় করে রাখা হয়েছে, বকগুলাে লম্বা লম্বা ঠ্যাং নিয়ে ঠুকঠুক করে হেঁটে বেড়াচ্ছে আর কথা বলছে মিশরি ভাষায় মা'র কাছ থেকে তারা এ ভাষাই রপ্ত করেছে কিনা তাই। সামনের মাঠ আর ক্ষেতের একদিক দিয়ে সবুজ বনানীর সারি চলে গেছে দিগন্ত ছুঁয়ে; ওই বনের মধ্যে এক গভীর স্বচ্ছ সরােবর ! সত্যিই, চারদিকে কী অপরূপ শােভা! অনেক পুরনাে একটা বাড়ি, সূর্যালােকে বড় চমৎকার দেখাচ্ছে; বাড়িটার চারদিক ঘিরে খাল চলে গেছে। প্রাচীর থেকে খালের কিনারা পর্যন্ত এক ধরনের বুনাে লতাপাতার গাছ, বার্ডর্ক লতা ভর্তি হয়ে আছে;


গিগাবাইট দৈত্য

এটি ভবিষ্যতের গল্প। এক শতাব্দী পরের গল্প। বিভিন্ন দেশবাসীর মধ্যে সহযােগিতার ধারণাটি উত্তীর্ণ হয়েছে বিভিন্ন গ্রহবাসীর মধ্যে সহযােগিতার পর্যায়ে! ‘গ্লোবালাইজেশন’-এর মতাে এখনকার ধারণা ‘ইউনিভার্সালাইজেশন’! বর্তমানে অফিসে মানুষ-এলিয়েন যেমন একসঙ্গে কাজ করছে; তেমনি ক্লাসরুমে মানুষ-এলিয়েন একসঙ্গে ক্লাস করছে। মানুষ স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে চলে যায় অন্য গ্রহে; আবার ভিনগ্রহ থেকে উচ্চশিক্ষার জন্য পৃথিবীতে আসে এলিয়েনরা। লেটুস মামার সঙ্গে যে দুজন এলিয়েন পড়ে, তারা মূলত জমজ ভাই। মামার আসল নাম ‘লেটুস' না; ক্লাসে লেট করে আসতে আসতে এই সুন্দর নামটি তিনি পেয়েছেন!


শিশু ও শিশু

রূপকথার মতাে

গল্প শােনাে খােকা-খুকী রূপকথারই মতাে
সুখে ভরা গল্পে আমার আছে অনেক ক্ষত। 
এক যে ছিল সবুজ দেশ সােনাফলা মাটি
সেথায় ছিল কোটি কোটি সরল প্রাণের ঘাঁটি।
কিন্তু শােননা সেথায় করত দৈত্য-দানব বাস
রাজ্যের যত নিয়ম-নীতি ওরাই করত পাস।
সরলমনা মানুষগুলাে মানত ওদের শাসন।
কিন্তু ওরা মানুষদেরকে করত শুধু শােষণ ।

 


ডবল ফেলুদা

খবরটা জানা গেল খবরের কাগজ মারফৎ। ছােট করে লেখা খবর—অপ্সরা থিয়েটারের অভিনেতা নিখোঁজ। মহীতােষ রায় নাকি সন্ধ্যাবেলা থিয়েটার না থাকলে লেকের ধারে বেড়াতে যেতেন। গত পরশু, অর্থাৎ সােমবার, তিনি যথারীতি বেড়াতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেন নি। বাড়ির চাকর থানায় গিয়ে খবর দেয়। পুলিশ এই নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে।

ফেলুদা বিরক্ত হয়ে বলল, ‘লােকটাকে পই পই করে বলেছিলাম সাবধানে থাকতে, তার লেকে বেড়াতে যাবার কি দরকার ছিল ? যাই হােক, আমার কাছে যখন এসেছিলেন ভদ্রলোেক, তখন একবার ওঁর বাড়িতে যাওয়া দরকার। ঠিকানাটা মনে আছে ?

 


ডেল কার্ণেগী রচনাসমগ্র

আপনি বা আমি এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছি দুই অসীমের সন্ধিক্ষণে-যে বিশাল অতীত চিরকাল রয়ে গেছে আর যে আগামী ভবিষ্যৎ চিরকাল থাকবে। আমরা এ দুই কালের কোনটাতেই সম্ভবত থাকতে পারি না-না, এক মুহূর্তও না। এরকমভাবে থাকতে গেলে আমাদের শরীর আর মন শেষ হয়ে যাবে। তাই যা থাকা সম্ভব তাই থাকি আসুন-এখন থেকে ঘুমােনাের সময় পর্যন্ত। রবার্ট লুই স্টিভেনসন বলেছেন, যত কঠিন ভারই হােক মানুষ রাত অবধি তার বােঝা বইতে পারে। যে-কোনাে লােকই যত কঠিন হােক তার কাজ করতে পারে একদিনের জন্য। যে কোন মানুষ আনন্দে, ধৈর্য নিয়ে, সুন্দরভাবে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। আর জীবনের অর্থই তাই।'

 


অ্যালিয়ান

ঝট করে উঠে বসে চিৎকার করতে যাচ্ছিল রায়ান। গলাটা হাঁ-ও করল, কিন্তু কোনো শব্দ বের হলো না সেখান দিয়ে। আ আ একটু শব্দ হয়ে থেমে গেল তা। বুকের ভেতরটা ফেটে যেতে চাচ্ছে তার। হাত-পাও তেমন নাড়াতে পারছে না। চোখ দুটোও কেমন স্থির হয়ে আছে। কেবল বোবার মতো তাকিয়ে রইল সে সামনের দিকে। মানুষের মতো অদ্ভুত মূর্তিটা দু পা এগিয়ে এলো রায়ানের দিকে। একটা হাত বাড়িয়ে দিল তার দিকে। রায়ান খেয়াল করল-তারই মতো উচ্চতা ওই অদ্ভুত মূর্তিটার, কিন্তু হাতটা অসম্ভব লম্বা, মানুষের থাকে পাঁচটা আঙ্গুল, ওটার রয়েছে তিনটা। হ্যালুশিনেশনের মতো হাত বাড়িয়ে দিল রায়ানও। অদ্ভুত মানুষটা হ্যান্ডশেক করার ভঙ্গিতে হাত চেপে ধরল তার। সঙ্গে সঙ্গে চোখ দুটো আগের চেয়ে বড় বড় হয়ে গেল রায়ানের। সামনের মূর্তিটা এখন ঠিক মূর্তি নেই, বদলে গেছে, হুবহু তার মতো হয়ে গেছে! রায়ানের সামনে আরেকটা রায়ান দাঁড়িয়ে আছে। হাতটা আরো একটু চেপে ধরে নতুন রায়ান পুরান রায়ানকে বলল, ‘তুমি কেমন আছো, রায়ান?’


এলিনা

মানে স্যার, সবাই প্রথমে হাইড্রোকেফালাস ভাবলেও পরীক্ষা করে দেখা গেছে, মস্তিষ্কে পানি জমেনি। ভেন্ট্রিকলগুলাে ঠিকঠাকই আছে। মাথার সিটি স্ক্যান পুরােপুরি নরমাল । কিন্তু এদের ব্রেন ম্যাটার বেশি ভারী। ফ্রম দ্য ভেরি বিগিনিং। জন্মের আগে থেকেই। অতি ভারী ব্রেনকে জায়গা দিতে গিয়ে মাথার খুলিটা আপনা থেকেই বড় হয়ে গেছে। গত দেড় বছরে বিভিন্ন হাসপাতালে জন্ম নিয়েছে এ রকম আটটা শিশু। সবাই অবজারভেশনে আছে। মাথা বড় ছাড়া আর কোনাে সমস্যা নেই, স্যার। ইন্দ্রিয় সব স্বাভাবিক। মাইলস্টোনস অব ডেভেলপমেন্ট এবং গ্রোথও নরমাল।


অদৃশ্য মানব

মিসেস হল বসার ঘরে এসে শরীর গরম করবার চুলাে ধরায়। চুললাটা তখনাে ধরানাে হয়নি। কেউ এলে মিসেস হল চুলাে জ্বালায়। এরপর লােকটার জন্য খাবার বানাতে যায়। এই শীতের সময় এখানে তেমন কেউ আসে না ঘর ভাড়া নিতে। ইপিং নামের এই জায়গায় এই হােটেলটা শীতের সময় তেমন খরিদ্দার পায় না। মহিলা তাড়াতাড়ি ব্যস্ত হয়ে পড়ে এই অতিথির সেবাযত্নে। রান্নার পাতিলে তাড়াতাড়ি মাংস চাপায়। বলে কাজের মেয়ে মিলিকে এই লােকটার ঘর খুব ভালাে করে গুছিয়ে দাও। এরপর একটা টেবিল এনে লােকটার সামনে রাখে। যদিও চুলােটা গনগন করে জ্বলছে, এমন সময় লােকজন তার কোট হ্যাট খুলে ফেলে কিন্তু লােকটা কোনাে কিছু খােলে না।

 


ইতি তোমার মা(কিশোর উপন্যাস)

ছোটদের জন্যও যাঁরা কলম ধরেছেন, তাঁদের মধ্যে সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের নাম নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য । আরও উল্লেখ্য এই কারণে যে, কিশোর-রচনায় তিনি শুধু ঘটাননি, একই সঙ্গে ছোটদের . পরিবর্তনের কথাও ভেবেছেন । নিছক হাসিঠাট্টার উপাদান ছোটদের ক্ষেত্রে তাঁর উপজীব্য নয় । অল্প বয়স থেকেই ছোটরা যাতে বড় হবার, মানুষ হবার প্রেরণা পায়-তাঁর লেখার মধ্যে সেই দিকটার দিকেই নজর বেশি । আগুনে না পোড়ালে যেমন সোনা হয় না, তেমনি দুঃখ-কষ্টভরা বাস্তব জগতের অভিজ্ঞতা ছাড়াও মানুষ খাঁটি মানুষে পরিণত হতে পারে না । কিশোর-উপন্যাসে এই সত্যটিকেই যেন তুলে ধরেন সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। যেমন, এই ‘ইতি তোমার মা” । বিচিত্র ঘাত-প্ৰতিঘাতের মধ্য দিয়ে এক প্রতিকূলতাকে কীভাবে জয় করতে শিখল, তারই এক গভীর, মর্মস্পশী কাহিনী এই উপন্যাস । সত্য, ধর্ম ও পৌরুষের চূড়ান্ত জয়ের এক অপ্রতিম আলেখ্য ।


ছোটদের কুরআনের কাহিনী

শয়তানের কথা বিশ্বাস করে বিবি হাওয়া নিজে এই ফল খেলেন এবং হযরত আদম (আঃ)-কেও খাওয়ালেন। তা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের শরীর হতে বেহেশতের পােশাক অপসৃত হলাে। আল্লাহর নিষেধ অমান্য করায় তিনি তাদের উপর খুবই অসন্তুষ্ট হলেন এবং তাদেরকে বেহেশত হতে পৃথিবীতে নিক্ষেপ করলেন। হযরত আদম (আঃ) সিংহল দ্বীপে এবং বিবি হাওয়া জেদ্দায় পড়লেন। তাঁরা দু’জনে তাদের ভুল বুঝতে পারেন এবং করুণাময় আল্লাহ তাআলার কাছে তিনশত বৎসর ধরে আকুলভাবে কান্নাকাটি করে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। হযরত আদম (আঃ) আকাশের দিকে তাকিয়ে মােনাজাত করার সময় দেখলে আরশে লেখা আছে 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ' অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত উপাস্য নাই এবং মুহাম্মদ প্রেরিত রাসূল। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তা পাঠ করলেন। তার মহিমায় দয়ালু আল্লাহ তা'আলা তাঁর প্রার্থনা কবুল করলেন। তখন জিবরাঈল (আঃ) তাঁর নিকট এসে বললেন, “হে আদম! হজ্জ

 


মহাবিশ্বের স্থান ও কালের ধারণা

মহাবিশ্বের উৎপত্তি, বিকাশ ও বিবর্তনের সাথে স্থান ও কালের সম্পর্ক কেমন? জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা হাজার হাজার বছর ধরে এর সমাধান খুঁজে বেড়াচ্ছেন। আজো চলছে এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা। স্থিতিকালের পরম মান, গতি ,বল, বস্তুপিণ্ডের ত্বরণ, মহাকর্ষীয় শক্তি ও বিধি, মহাকর্ষণ নীতি, আলোকের গতিশক্তি, আলোকের দ্রুতি, বেতার তরঙ্গ, সময়ের মাপ, সময়ের দুরত্ব, আলোকের রশ্মি, আলোক যাতায়াত, ঘটনা, অতীত আলোক শঙ্কু, ভবিষ্যৎ আলোক শঙ্কু,বৃহৎ বিস্ফোরণ, বৃহৎ সংকোচন, ব্যাপক অপেক্ষবাদ এবং মহাবিশ্বের প্রসারণ প্রভৃতি বিষয়ে বিজ্ঞানীরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করছেন। তারা মহাবিশ্বের অবস্থানগত দিক ও কালের ধারণা এঁকেছেন গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ দিয়ে। তবে অধিকাংশ বিজ্ঞানীরা আজ এক মত হয়েছেন যে, আমাদের এই মহাবিশ্ব সব সময়ই বর্তমান নয়। বরং একটি নিদির্ষ্ট সময়ে এর উৎপত্তি হয়েছে, আর তা ঘটেছে মাত্র কয়েক মিনিটে। যাকে তারা বলেছেন ‘বিগব্যাং’। এখানেই শেষ নয়, এই মহাবিশ্বের একদিন অবশ্যই সমাপ্তি ঘটবে। অর্থ্যাৎ ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। চলে যাবে ব্ল্যাকহোলে। আর এই মহাবিশ্বের পরিণতি আমাদের আনন্দের নয়, দুঃখের। বিজ্ঞানীরা এমনটিই ভাবছেন। তাছাড়া স্থানের ধারণায় আমরা জাহনতে পারছি যে, এই মহাবিশ্ব প্রতি মুহূর্ত কোটি কোটি মাইল প্রসারিত হচ্ছে। এ তথ্যের আবিষ্কার বিংশ শতাব্দীর বৌদ্ধিক বিপ্লবগুলোর মধ্যে অন্যতম । বিজ্ঞানীরা আরো বলছেন যে, এই প্রসারণ যদি যথেষ্ট শ্লথ গতিতে হয়ং তাহলে শেষ পর্যন্ত মহাকর্ষীয় বল প্রসারণ বন্ধ করবে এবং তারপর শুরু হবে সংকোচন। কিন্তু কএ প্রসারণ যদি একটি বিশেষ ক্রান্তিক হারের চেয়ে বেশি হয় তাহলে মাহকর্ষীয় বল এমন শক্তিশালী হবে না যে প্রসারণ বন্ধ করতে পারে এবং মহাবিশ্ব চিরকাল প্রসারণশীলই থাকবে। তবে বিজ্ঞানীদের নানান ভাবনা আর যুক্তি তর্কের শেষ নেই। সিদ্ধান্ত থেকে বার বার সরে আসাও তাই একটি স্বাভাবিক বিষয় এবং নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহাবিশ্বের স্থান ও কালের ধারণার বিভিন্ন দিকই এ বইয়ে সন্নিবেশ করা হয়েছে। এতে সময় ও স্থান বিষয়ে বিভিন্ন জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতামত ও তার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দেওয়া হয়েছে।