মুখের হাসি মনের খুশি
প্রাণের ভালবাসা
এই নিয়ে এই নতুন দেশে।
বেঁধেছি এক বাসা।
নতুন দেশে এলাম আমি
নতুন কারিগর
ইচ্ছেমতী মনের রঙে
বেঁধেছি এই ঘর।
সবুজ সবুজ শাখায় দেখি
নানা ফুলের মেলা
দেখি সকাল সন্ধাবেলা
নানা রঙের খেলা।
যখন খুশি আমি ওদের।
খেলার সাথী হই,
হাওয়ার গলা জড়িয়ে ধরে
হাওয়ার মতাে বই।
আমি নতুন শিল্পী, আমি
আঁকি নতুন ছবি, দৈত্য-দানাে পরীর ডানা।
আঁকতে পারি সবই।
কোথাও নেই কেউ দেখে নি।
‘মুরগি আগে না ডিম আগে এই অর্থহীন তর্কের যেমন শেষ নেই আবার বিচার মানি কিন্তু তালগাছটা আমার এই মনােভাব পুষে রাখলেও বাকযুদ্ধ বন্ধ হবে না। সেই সৃষ্টিলগ্ন থেকেই যে তর্কের গােড়াপত্তন তা এখনাে চলমান। মানুষের মস্তিষ্কপ্রসূত কৌতূহল, নিজের মতের অমিল, অন্যের মত মেনে না নেওয়ার প্রবণতা, জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা বা একগুঁয়েমির কারণে আদি থেকে আজ অব্দি ঘরে-বাইরে তর্ক চলছে, চলবে! কারণ স্বভাবতই মানুষ তর্কপ্রিয়। মানুষ বলতে ভালােবাসে। বাঙালির ক্ষেত্রে এ কথা অবশ্য একটু বেশিই সত্য। এ জন্য একসময় এ দেশে কবিগান, পালাগান বা বাহাস ছিল তুমুল জনপ্রিয়। এখনাে রাস্তার মােড়ে মােড়ে চায়ের দোকানে তর্কের ঝড় ওঠে। মধ্যরাতে টেলিভিশনের পর্দা সরগরম হয়ে ওঠে ‘টক শাে।
জগতের দুই প্রেতাত্মা কোনাে এক অদ্ভুত শবাধার বহন করে নিয়ে চলেছে দিগন্তবিস্তৃত এই হিমেল প্রান্তরের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু তবু তারা মানুষ-ই! আদিগন্ত নিশ্চল জড়তার মধ্যে একমাত্র তারাই সােচ্চার প্রতিবাদ। নির্ভীক দুই অভিযাত্রী বিধাতার সীমাহীন ব্যঙ্গকে উপহাস করে এগিয়ে চলেছে দৃঢ় পায়ে।
অবশ্য ওরা নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বড় একটা বলছিল না। কারণ কথা। বলার অর্থই হল শারীরিক শক্তির অযথা অপচয়। মানসিক ক্লান্তিকে তরান্বিত করা। তাই ওরা স্তব্ধ, নির্বাক। আর তারই সুযােগ নিয়ে চতুর্দিকের এই হিমেল নৈঃশব্দও গভীরভাবে চেপে বসছিল ওদের চেতনার ওপর। এখন ওরা
সম্পূর্ণভাবে বিশ্বপ্রকৃতির ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। এই বােধটাও ধীরে ধীরে। জাগ্রত হচ্ছিল ওদের মধ্যে। নিয়তির হাতে অসহায় ক্রীড়নক মাত্র, কিন্তু তবুও নিজেদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্যে মরণপণ সংগ্রামেরও বিরাম নেই। যৎসামান্য বুদ্ধি আর সামান্য কিছু কৌশলই ওদের একমাত্র হাতিয়ার।
ছোট্র পাখিটা কোনো কাজই করে না। সে কেকবল স্বপ্ন দেখে এটা করবে, ওটা শিখবে। আর কিছু শিখতে গেলেই যত গণ্ডগোল। সে চেয়েছিল অনেক উঁচুতে উড়তে, পানিতে সাঁতার কাটতে কিংবা গান গাইতে। আলসেমীর জন্য কোনোটাই আর শেখা হলো না। শেষ পর্যন্ত তুষার ঝরা এক শীতের মধ্যে বিপদে পড়ে সে। আর তখন পাখিটার পাশে এসে দাঁড়ায় তার বন্ধুরা।
সমগ্র সমূহ
*কাকাবাবু ও সিন্দুক-রহস্য
*কাকাবাবু ও একটি সাদা ঘোড়া
*এবার কাকাবাবুর প্রতিশোধ
*কাকাবাবুর চোখে জল
*কাকাবাবু আর বাঘের গল্প
*আগ্নেয়গিরির পেটের মধ্যে
তিনটি ক্লাসিক কাহিনি একত্রে ভলিউম আকারে প্রকাশিত হলো। বিচ্ছিন্ন একটা দ্বী, সেখানে আছে অত্যন্ত সুরক্ষিত এক গবেষণাগার। অদ্ভুত কিছু লোক ঘুরে বেড়ায় সে-দ্বীপে, যারা আসলে মানুষ কিনা বোঝা যায় না প্রথমে। অদ্ভুত, রহস্যময় ঘটনার সঙ্গে পরিচয় ঘটল লেখকের...‘ডক্টর মরোর দ্বীপ’ এর কাহিনি এভাবেই শুরু হয়েছে। জাহাজ কিংবা স্টিমার নয়, ভেলায় চেপে প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দেওয়ার এক দুঃসাহসিক অভিযাত্রা শুরু হলো। লেখক থর হেয়ারডল , ও সঙ্গে আরও পাঁচজন দুঃসাহসী সঙ্গী । শেষ পর্যন্ত তারা কি এই অভিযানে সফল হতে পেরেছিল...? ‘কনকিটি অভিযান’ পড়লে উত্তর মিলবে সবকিছুর। এখানে ‘রুদ্র প্রয়োগের চিতা’ থেকে সামান্য তুলে দিচ্ছি: ছাগলটার কাছ থেকৈ মাচান মাত্র বিশ ফুট দূরে। কিন্তু গাঢ় অন্ধকারের জন্য ছাগলটার কিছুই আমি দেখতে পাচ্ছিলাম না। চোখ বুজে শব্দ শুনতে পাওয়ার জন্যে মনো নিবেশ করাই এই অবস্থায় শ্রেয়। ছোট্র একটা টর্চ লাইট ফিট করা ছিল রাইফেলের নলে। বলাই বাহুল্য, নলটা ছাগলটার দিকে ফেরানো ছিল। হঠাৎ গাছের গোড়া থেকে কী যেন একটা ছুটে গেল আর সেই সাথে জোরে বেজে উঠল ছাগলের গলার ঘণ্টাটা টর্চের বোতামের উপরই আঙুলটা ছিল। বোতামটা টিপতেই দেখলাম রাইফেলের নিশানা চিতার কাঁধে ঠিকঠাক মত সই হয়ে রয়েছে। ট্রিগার টিপে দিলাম। গুলির শব্দ উপত্যকার মধ্যে ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হয়ে এক সময় মিলিয়ে গেল। ঘরের দরজা খুলে চেঁচিয়ে প্রশ্ন করল পণ্ডিত, আমার কোনো সাহায্যের প্রয়োজন আছে কিনা। জবাব দেবার মত অবসর ছিল না আমার। পণ্ডিত বেশিক্ষণ অপেক্ষা না করে তাড়াহুড়া করে বন্ধ করে দিল তার দরজা....তিনটি ক্লাসিক কাহিনির এই ভলিউমটি যে পাঠকপ্রিয়তা পাবে, কতা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
সমগ্র সমূহ
*আগুন পাখির রহস্য
*কাকাবাবু বনাম চোরাশিকারি
*সন্তু কোথায়, কাকাবাবু কোথায়
*কাকাবাবুর প্রথম অভিযান
*জোজো অদৃশ্য
রূপকথার গল্প বলতে বােঝায় ছােটদের মনভােলানাে কথা ও কাহিনী। কিন্তু সব রূপকথার গল্পই যে মনভােলানাে এমনটি বলা যাবে না। রূপকথার গল্পে রূপকের আড়ালে কঠিন বাস্তব জীবনের সুখ-দুঃখ হাসি-কান্নার ছবি আঁকা থাকে। মায়াবী ভাষার জাদু-পরশে ফুটিয়ে তােলা হয় স্বপ্ন-বাস্তবের এক বিচিত্র জগৎ। রূপকথার গল্প জীবনবিচ্ছিন্ন কোনাে ব্যাপার নয়। সব দেশেই রূপকথার গল্পের সমাদর রয়েছে। একটি জাতি শিল্প-সংস্কৃতিতে কতটা ঋদ্ধ, কতটা উন্নত তার অন্তত একটা প্রমাণ সেই জাতির লােকসাহিত্য। রূপকথা বড় অর্থে লােকসাহিত্যের অংশ। সে কারণে রূপকথার কোনাে প্রথাবদ্ধ ব্যাকরণ নেই। ইংরেজিতে Fairy tale কিংবা Folk tale-এর অন্তরালে নতুন-পুরনাে সব রূপকথার গল্পের অধিষ্ঠান। Folk tale মানে যেমন পরির গল্প নয়, ঠিক তেমনি বাংলার রূপকথার গল্প মানে রানি আর রাক্ষস-খােক্কসের গল্প নয়। রূপকথার গল্প মূলত মানবজীবনেরই গল্প। এগুলােতে রূপকের আড়ালে জীবনের, পশুপাখির চরিত্রের মধ্য দিয়ে চিরন্তন মানব-হৃদয়ের কথাই বলা হয়।
ভূমিদাস-প্রথা অনেকটা দাসপ্রথার মতােই। এরা মনিবের জমিতে কৃষিকাজ করতে বাধ্য থাকে। জমি ছেড়ে অন্য কোথাও যাবার এদের অধিকার থাকে না এবং মনিব এদের ইচ্ছেমতাে অন্য কাজেও লাগাতে পারে। লেখকের দাদিকে তাঁর জন্মভূমি সিসের্তে থেকে জোর করে পােলেয়ার পুরনাে খনিতে পাঠানাে হয়েছিল, কারণ সেখানে মেয়ের সংখ্যা ছিল কম। তার ভাষায় “ওদিকের পথটা ছিল মেয়েদের চোখের জলে ভেজা।” কারণ মেয়েরা তাদের মনিবের ইচ্ছেমতাে যে-কোনাে দাসকে বিয়ে করতে বাধ্য ছিল। লেখকের পিতার আমলে ভূমিদাস-প্রথা লােপ পায়। বাঝােভ তাঁর স্বাধীনচেতা কারিগর পিতার সাথে এই বিশাল বৈচিত্র্যপূর্ণ পার্বত্য এলাকায় ঘুরে বেড়িয়েছেন; জেনেছেন সেখানকার প্রচলিত উপকথা, কিংবদন্তি, ইতিহাস।
চকচকে ধাতুর তৈরি একটা যন্ত্র দেখলাম সময়-পর্যটকের হাতে। টাইমপিসের চেয়ে সামান্য বড় যন্ত্রটা, কিন্তু নিখুঁতভাবে তৈরি। হাতির দাঁত আর কয়েকটা স্বচ্ছ কৃষ্ট্যালের কারুকাজও দেখলাম তার মাঝে। যন্ত্রটার বিচিত্র গঠন দেখে কৌতূহল না জেগে পারে না।
এর পরে যা ঘটল তা সত্যই অবর্ণনীয়। আটকোণা একটি টেবিল এনে রাখা হল আগুনের সামনে। ওপরে মেশিনটাকে বসিয়ে একটা চেয়ার টেনে নিয়ে সামনে বসলেন ভদ্রলোক। মেশিন ছাড়াও টেবিলের ওপর ছিল একটা শেড দেওয়া ল্যাম্প-চিকমিক করছিল মডেলটা তার আলোয়। ঘরের মধ্যে এদিকে—সেদিকে আরও প্রায় ডজনখানেক মোমবাতি থাকায় আলোর অভাব ছিল না মোটেই। আগুনের একেবারে কাছেই বসেছিলাম। আমি। সময়-পর্যটকের পেছনে বসল ফিল্বি। বাঁদিকে বসলেন ডাক্তার আর প্রাদেশিক মেয়র-ডানদিকে মনোবিজ্ঞানী, অলপ বয়েসী ছেলেটা রইল। আমার ঠিক পেছনেই। প্রত্যেকেই চোখ-কান খুলে বেশ সজাগ হয়ে বসে-কাজেই এ রকম পরিস্থিতিতে হাতসাফাই যে একেবারেই অসম্ভব, তা বুঝলাম সবাই।
আমাদের ওপর একবার চোখ বুলিয়ে নিলেন সময়-পর্যটক….
বেহার প্রদেশের ছােটখাট একটি স্টেশন।।
শহরটা স্টেশন থেকে পূবে বেশ খানিকটা দূরে এবং ইতস্তত ছড়ান। আর দক্ষিণ দিকে শহর গড়ে ওঠে নি। জঙ্গল আর ছােট ঘােট পাহাড়। জঙ্গল যেখান থেকে শুরু হয়েছে তারই মাইল খানেক আগে একটা পুরাতন কুঠি বাড়িতে বর্তমান কাহিনীর যবনিকা উত্তোলিত হচ্ছে। কুঠি বাড়িটার আশপাশে অন্তত মাইল খানেকের মধ্যে আর বসতি নেই। শুধু আছে একটা নাতি-প্রশস্ত পথ। তবে জঙ্গল সীমানার বরাবর কিছু দেহাতী গােয়ালা শ্রেণীর লােকের বাস আছে।
কুঠি বাড়িটা শােনা যায় এককালে নাকি কুখ্যাত নীলকুঠি ছিল। ফ্যালকন সাহেবের নীলকুঠি। পরে ঐ সাহেবের মৃত্যুর পর এক ধনী বেহারী ভদ্রলােক ঐ কুঠি বাড়িটা তার আত্মীয়দের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে ক্রয় করে নিয়েছিলেন। ক্ৰয়ই করেছিলেন— বসবাস কেউ করে নি ওখানে। পড়াে বাড়ির মতই কুঠি বাড়িটা বহু বছর ধরে পড়ে ছিল। তার পর বছর আষ্টেক আগে হঠাৎ যুদ্ধ থেমে যাবার পর যুদ্ধ-ফেরতা মেজর রাজেশ্বর চৌধুরী কুঠি বাড়িটা ক্রয় করেন এবং সমস্ত বাড়িটা সংস্কার করে সেখানে এসে বাস করতে শুরু করেন।
ঝন্টু যে, একেবারে সকাল বেলা? আমাদের বাড়ির বাইরের বারান্দায় বসে মুড়ি চিবুতে চিবুতে প্রশ্ন করলাম। ঝন্টু আমার কাঁধে একটা ঝাকি দিয়ে বলল ; সকাল! এই বেলা নটার সময় তাের সকাল হল?
আমি আরও একমুঠো মুড়ি মুখে পুরে দিয়ে বললুম : আমি সে-কথা বলছি নে। বলছিলুম যে তুই তাে কোনােদিন এত সকালে বাড়ি থেকে
বেরুস না। তাের আব্বা না তােকে দশটার আগে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করেছেন?
: আব্বা তাে নেই, অফিসের কাজে সিলেট গেছেন। নইলে কি আর এত সকালে বের হতে পারি?
আরেক নাম বােধিদ্রুম। গৌতম এই গাছের তলায় ধ্যানে বসেই বুদ্ধত্ব লাভ করেন। গাছটি বৌদ্ধ ও হিন্দুদের কাছে খুব পবিত্র। বুদ্ধগয়া থেকে নেয়া একটি অশ্বত্থ গাছ শ্রীলঙ্কায়। দু'হাজার বছর বয়সেও দিব্যি বেঁচে আছে। এই গাছ বটের আত্মীয়। এরও ফুল দেখা যায় না, ফলগুলােও বটের মতােই, তবে লাল নয়, পাকলে বেগুনি। অশ্বথে ঝুরি থাকে না, পাতাগুলাে ছােট পান পাতার মতাে, আগায় একটি লম্বা লেজ। এই গাছ শীতে পাতা। ঝরায়। বসন্তে তামাটে রঙের কচি পাতায় ঢাকা অশ্বথ রােদে ঝলমল করে। এই গাছতলায়
দাড়ালে সামান্য বাতাসেও একটা ঝমঝম্ আওয়াজ শােনা যায়। পাতার লেজের মতাে আগা। ফলকে বাড়ি খায় বলেই এমন শব্দ ওঠে।
নানা কারণে সক্রেটিসের জীবন ও দর্শন সম্বন্ধে নিশ্চিতভাবে কিছু লেখা কঠিন। তাঁর সম্বন্ধে আমরা যে খুব বেশি জানি, এ কথা বলা যায় না। অন্যদিকে কিছুই জানা নেই বলা চলে না। বার্ট্রান্ড রাসেল বলেছেন, সক্রেটিস সম্বন্ধে আমাদের কম জানা আছে, না বেশি জানা আছে সেটা স্থির করাই মুশকিল। সক্রেটিসের জীবন ও মতবাদ বিষয়ে এইরকম জটিলতা কেন তা নিয়ে আমরা পরে আলােচনা করবাে। আপাতত তার সম্বন্ধে যে তথ্যগুলি খানিকটা নির্দ্বিধায় দেওয়া চলে, সেগুলিই তুলে ধরা যাক। তার জন্ম এথেন্সে ৪৬৯ বা ৪৭০ খ্রিস্টপূর্ব সালে। জন্মসূত্রে এথেনীয় সক্রেটিসের পরিবারের অবস্থা বােধহয় তেমন মন্দ ছিল না। তাঁর বাবার নাম সফ্রোনিস্ক। তিনি ছিলেন অ্যালােপেকি গােষ্ঠীর লােক। এটি এথেন্সের দশটি প্রধান গােষ্ঠীর একটি। সক্রেটিসের পরিবার ডেইডালস থেকে নিজেদের বংশক্রম গণনা করতাে। এ থেকে বােঝা যায়, পরিবারটি বনেদি।
পাচার হয়ে যাচ্ছে মানুষ! পৃথিবীর অন্যতম জঘন্য ব্যবসায় মেতেছে এই শতাব্দীর তথাকথিত সভ্য কিছু দেশ। বাংলাদেশ আর বার্মা থেকে গরীব আর অসহায় মানুষদের বিভিন্ন ভাবে ভয় আর লোভ দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মালয়শিয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে। আর তারপরে কাজে না লাগলে যে কোন পণ্যের মত ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে সাগরে অথবা জিম্মী করে আবার নেয়া হচ্ছে মুক্তিপণ। প্রথাগতভাবে এদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক কে ধরাই যাচ্ছে না ফলে নীরবে কাজে নামলো এসবিআই। পৃথিবীর বেশ কিছু দেশের গোপন সংস্থা। তাদের একাধিক এজেন্ট এই এসাইনমেন্ট এ মারা পড়ার পর এবার দায়িত্ব পড়লো বাংলাদেশের দূর্ধর্ষ এজেন্ট সি.কে. জাকির। সব কিছু নিজের মত করে গুছিয়ে আনলেও মাঝপথে আন্দামানের উপকূলে ঘটনা হাতের বাইরে চলে গেলো তাঁর। দলের মধ্যেই কেউ বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তার সাথে। মৃত্যুর আগে অন্তত তার নামটা বের করাই এখন জাকির একমাত্র ইচ্ছা।
একদিন অবাক হয়ে দেখি সােনা আমাদের বাগানে বসে আছে। বিকেলবেলা। আমাদের মফস্বল শহরে মাঘ গিয়ে ফারুন পড়েছে। বিকেলবেলা সূর্যের শেষ আলােয় বড় সুন্দর দেখায় শহরটি। অদূরে নদী, নদীর তীর জুড়ে ধুধু বালিয়াড়ি। বহুদূরে নদীর চরে ফাল্গুন মাসের বিকেলবেলায়ও পাতলা একটা কুয়াশার রেখা পড়ে। একটা দুটো গাঙচিল অনবরত নদীর ওপর চক্কর খায়, জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে চেলামাছ তুলে নেয় ঠোটে। আর আছে নৌকা। কত রকমের যে! মহাজনী (নৗকা, পানসি নৌকা, জেলে নৌকা, কেরায়া নৌকা। অনবরত পুবে যায় নৌকা, পশ্চিমে যায়।
সােনাকে প্রথম দেখি আমি। হাঁটুতে মাথা গুঁজে বসে আছে হাসুহেনা ঝােপটার কাছে। আমি তখন খেলতে যাচ্ছিলাম মাঠে। সােনাকে দেখেই খেলার কথা ভুলে যাই। দৌড়ে বাগানে গিয়ে ঢুকি। তার আগে চেঁচিয়ে সারাবাড়ি মাত করে ফেলি। সােনা এসেছে। সােনা এসেছে। | সােনা আমাদের কাজের ছেলে। আমার বয়সী। দশ-বারাে বছর হবে। খুব ছােটবেলা থেকে আমাদের বাড়িতে আছে সােনা। বাবা ওকে কুড়িয়ে পেয়েছিলেন।
আমার বাবা থানার বড় দারােগা। আগে ছিলেন বরিশালের পিরােজপুর থানায়। সেখানেই একদিন এক ঝােপের ধারে পাঁচ বছরের সােনাকে কুড়িয়ে পান। গায়ে প্রচণ্ড জুল ছিল সােনার। অজ্ঞান হয়ে পড়ে ছিল ঝােপঝাড়ের ধারে। বাবা গিয়েছিলেন ডাকাত ধরতে।