দু’মাস-ছ’মাসের কথা নয়, পঁচিশ বৎসরের কাহিনী বলিতেছি। বনমালী প্রাচীন হইয়াছেন। কয়েক বৎসর হইতে রােগে ভুগিয়া ভুগিয়া এইবার শয্যা আশ্রয় করিয়া টের পাইয়াছিলেন, আর বােধ হয় উঠিতে হইবে না। তিনি চিরদিনই ভগবৎপরায়ণ ও ধর্মভীরু। মরণে তাহার ভয় ছিল না। শুধু একমাত্র সন্তান বিজয়ার বিবাহ দিয়া যাইবার অবকাশ ঘটিল না মনে করিয়াই কিছু ক্ষুন্ন ছিলেন। সেদিন অপরাহুকালে হঠাৎ বিজয়ার হাতখানি নিজের হাতের মধ্যে লইয়া বলিয়াছিলেন, মা, আমার ছেলে নেই বলে আমি এতটুকু দুঃখ করিনে। তুই আমার সব। এখনাে তাের।
কৈলাস সতীপীঠ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তবে, শ্রদ্ধেয় অভীক সরকার লিখেছেন, “পতিনিন্দা সহ্য করতে না পেরে আত্মহুতি দিলেন সতী। ক্রোধে, শােকে জ্বলে উঠলেন স্বামী মহেশ্বর। সৃষ্টি বুঝি রসাতলে যায়। শেষ পর্যন্ত বিষ্ণুর চাতুরিতে রক্ষা পেল চরাচর। সুদর্শন চক্র সতীর দেহকে একান্ন টুকরােয় কেটে ছড়িয়ে দিল দশ দিকে। যে সব জায়গায় সেই দেহখণ্ডগুলি পড়ল, সেগুলি হল এক-একটি পীঠ। একান্ন পীঠ-এর মধ্যে উনপঞ্চাশটিই ভারতের বর্তমান ভূখণ্ডে, বাইরে মাত্র দু'টি। এক, তিববতে মানস। দ
গীতা হল মহাভারতের প্রক্ষিপ্ত অংশ। এখানে দেখিয়েছি গীতায় বহু স্ববিরােধিতা আছে। মহাভারতের চরিত্রগুলাে নিয়েও আলােচনায় এসেছি। পঞ্চপাণ্ডবদের দুই মাতা কুন্তী এবং মাদ্রী ছিলেন বহুগামী। অবশ্য মহাভারতের পঞ্চপাণ্ডবরাও ছিলেন বহুগামী। পুরাণ যতটা পুরনাে বলে মনে হয়, আদৌ ততটা নয়। পুরাণ রচিত হয়েছিল আড়াইশাে খ্রিস্টাব্দ থেকে এক হাজার খ্রিস্টাব্দের মধ্যে।
বড় রাস্তা থেকে বেশ অনেকটা দুরে আমার বাড়িটা এবং অন্য অনেক বাড়ির চেয়ে আমার বাড়ির আব্রু অনেক বেশি। এছাড়া আমার ভাড়াটেও হবে এই একটিই, আমার নিজের কোনাে পরিবারও নেই। মনে হয় উনি অন্য অনেক বাড়ি দেখে তবে আমার বাড়িটা পছন্দ করেন। আসল কথা উনি আড়াল খুঁজছিলেন, যে-কোনাে ভাড়া দিতে প্রস্তুত ছিলেন।
বিনয়েন্দ্র ছিলেন ইন্দ্রিয়সুখে আচ্ছন্ন মানুষ। জীবনদর্শন সহজ, “মেজাজটাই তাে আসল রাজা,আমি রাজা নয়।” নানাবিধ দুর্লক্ষণ ছিল মেজাজের। দিনরাতের অধিকাংশ সময় ‘জলপথেই থাকতে পছন্দ করতেন। উদ্দাম নারীসঙ্গ স্বভাবগত, নিয়মিত নিশিযাপন বালিকাবালা এবং চঞ্চলা নামে দুই রক্ষিতার সাহচর্যে। প্রমােদবিলাসে মাঝেমধ্যে পাড়ি দিতেন বােম্বাই। রুপােলি পরদার রংবাহারে বরাবরের আকর্ষণ। সংযম এবং শৃঙ্খলা, দুইয়ের সঙ্গেই সম্পর্ক ত্যাগ করেছিলেন কৈশােরেই।
‘ভূত নেই’ আর ‘ভুত আছে’_এই দুই বিশ্বাসের মাঝখানে দাঁড়িয়ে ভূতকে বাঁচিয়ে রেখেছে মানুষ। পৃথিবী জুড়ে ভূতকে নিয়ে ঘটে গেছে নানা কাণ্ডকারখানা। লেখা হয়েছে অসংখ্য বই। তৈরি হয়েছে গা-ছমছমে অজস্র সিনেমা। আঁকা হয়েছে নানান বিখ্যাত ছবি। শিশু-কিশোর পাঠকরা যখন পুরোনো ভূতের গল্প পড়তে পড়তে এক্কেবারে ক্লান্ত, তখন আমরা ঠিক করেছিলাম এবার তাদের উপহার দেব নতুন ভূতের গল্প। সেরকমই ২৫টি গা-ছমছমে ভূতের গল্প নিয়ে এই অভিনব সংকলনগ্রন্থের পরিকল্পনা। নতুন ভূতের গল্প লিখে দিতে প্রতিষ্ঠিত লেখকরা প্রায় সবাই আমাদের জন্য কলম ধরেছেন আর সম্পাদনায় স্বয়ং শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। ভূমিকায় তিনি জানিয়েছেন, ভূত আছে কি নেই_এই সনাতন প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে তিনিও লিখেছেন, কত নেই জিনিস নিয়েই তো গল্প লেখা হয়। আমরাও তাঁর সঙ্গে একমত। তাই ভূত নিয়ে সারা পৃথিবী জুড়ে চলতে থাকুক ধুন্ধুমার সব কাণ্ড। আর সেই ফাঁকে আমাদের সঙ্গে আলাপ হয়ে যাক এইসব নতুন ভূতেদের। চলো, আমরা চটপট পড়ে ফেলি এই ২৫টি নতুন ভূতের গল্প।
রহস্য গল্পের গোলকধাঁধার পাঠক নিজেকে জড়িয়ে ফেলে খুঁজতে থাকেন। রহস্যভেদের জটিল পথ। আর গল্পের রহস্য পাঠককে টেনে নিয়ে যায় রুদ্ধশ্বাস শেষ লাইনের দিকে রহস্য সমাধানের লোভ দেখিয়ে। এই টানটান উত্তেজনাটুকুই রহস্য গল্পের প্রাণভোমরা। যে-রহস্য গল্পের সমাধান-ইঙ্গিত পাঠকের মন নিয়ে লুকোচুরি খেলে, ধরা দিয়ে আবারও অধরার দিকে হাতছানি দিতে-দিতে পাঠক-মনকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আড়ালে থেকে ধরা দেয়, সেই গল্পই জয় করে পাঠকের মন। আমরা পঁচিশটি জমজমাট রহস্য গল্পের এই সংকলনের আয়োজন করেছি, পাঠকরা মাথা খাটিয়ে রহস্যের কিনারা করতে উৎসাহী হবেন, গল্পের রহস্যের সমাধানের সঙ্গে নিজেদের বুদ্ধিদীপ্ত সমাধানকে একলহমায় মিলিয়ে দেবেন অনাযাসে, এই আশায়। সব শেষে পাঠক যদি ভাবতে পারেন ‘আমিই রহস্যভেদী’, তাহলেই আমাদের পরিকল্পনা সার্থক।
সংকট-ই নতুন নতুন তত্ত্বের জন্ম দেয় এবং পুরােনাে তত্ত্বকে নবাগত ধারণার নিরিখে পর্যালােচনাও অব্যাহত রাখে। প্রয়ােগের মধ্য দিয়ে তত্ত্বের ব্যবহারউপযােগিতা যাচাই করে নেয় বৌদ্ধিক সমাজ। এই প্রক্রিয়া অনবরত চলতে থাকে ঠিক সমুদ্রের নিরবচ্ছিন্ন ঢেউয়ের মতাে। যতক্ষণ তত্ত্বকে প্রয়ােগে আর প্রয়ােগকে তত্ত্বে যাচাই করে নিতে পারে মানুষ ততক্ষণ তার জীবনে তাৎপর্য উপলব্ধির গুরুত্ব ফুরিয়ে যায় না কখনও।