মানুষের হাতে যে রেখাটাকে বিলিতি মতে হেডলাইন বা বৃদ্ধির রেখা বলে, ফেলুদার যে সেটা আশ্চর্যরকম লম্বা আর স্পষ্ট, সেটা আমি জানি ৷ ফেলুদাকে জিগ্যেস করলে বলে ও পামিস্ট্রিতে বিশ্বাস করে না, অথচ পামিস্ট্রির বই ওর আছে, আর সে বই ওকে পড়তেও দেখেছি । একবার এটাও দেখেছি - ফেলুদা ওর মার্কামারা একপেশে হাসিটা হেসে লালমোহনবাবুকে ওর বুদ্ধির রেখাটা দেখাচ্ছে ৷ লালমোহনবাবু অবিশ্যি এসব ষোল আনা বিশ্বাস করেন ৷
একবার মুর্শিদাবাদের নবাবের খেয়াল হল, আমাদের নামে হিন্দুদের মত আমাকে নিয়ে মহাভারত রচিত হোক্ । যেমনি ভাবা তেমনি মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের কাছে নির্দেশ পাঠালেন, আপনাদের অর্থাৎ হিন্দুদের অনুকরণে তাঁকে নিয়ে একটি নতুন মহাভারত আপনাদের পণ্ডিতদের দিয়ে লিখে দিতে হবে এক মাসের মধ্যে। সেই রূপ পণ্ডিত অতি শীঘ্র নবাবের দরবারে পাঠান। যিনি রচনা করবেন তাকে প্রচুর আসরফি পুরস্কার দেওয়া হবে।
আমাদের স্কুলের যত ছাত্র তাহাদের মধ্যে এমন কেহই ছিল না, যে পাগলা দাশুকে না চিনে । যে লোক আর কাহাকেও জানে না, সেও সকলের আগে পাগলা দাশুকে চিনিয়া ফেলে ৷ সেবার এক নতুন দারোয়ান আসিল, একেবারে আনৃকােরা পাড়াপেঁয়ে লোক, বিক্ষ্ম প্রথম যখন সে পাগলা দাশুর নাম শুনিল, তখনই আন্দাজে ঠিক করিয়া লইল যে, এই ব্যক্তিই পাগলা দাশু ৷ কারণ মুখের চেহারায়, কথাবার্তায়, চাল-চলনে বোঝা যাইত যে তাহার মাথায় একটু ‘ছিট' আছে ৷ তাহার চোখ দুটি গোল গোল, কান দুটি অনাবশ্যক রকমের বড়, মাথায় এক বস্তা ঝাঁক্ড়া চুল ৷ চেহারাটা দেখিলেই মনে হয়-
রানী নানীর হাতে হীরের চুড়ি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বললেন-হীরের রঙ বড় শাদা, হাত যেন শুধু দেখায় । রক্তের মতো রাঙা আট-আট গাছা মালিকের চুড়ি পাই তাে পরি । রাজা বললেন-আচ্ছা রানী, মানিকের দেশ থেকে মানিকের চুড়ি আনব ৷ রানী রাঙা পা নাচিয়ে নাচিয়ে, পায়ের নুপুর বাজিয়ে বাজিয়ে বললেন-এ নুপুর ভালো বাজে না । আগুনের বরণ নিরেট সোনার দশগাছা মল পাই তাে পরি ৷ রাজা বললেন-সোনার দেশ থেকে তোমার পায়ের সোনার মল আনব ৷ রানী গলার গজমতি হার দেখিয়ে বললেন-দেখ রাজা, এ মুক্তো বড় ছোট, শুনেছি কোন দেশে পায়রার ডিমের মতো মুক্তো আছে, তারি একছড়া হার এনো।
মোল্লা নাসিরুদ্দিন হোজ্জা একজন গল্লবুড়ো । কত হাজার রকমের গল্প যে সে বলেছে তার কোনো শেষ নেই । গল্প বলতে সে ভালােবাসে ৷ গল্প বলে সে মজা পায় ৷ আবার মানুষকে নানা কিছু শিখিয়ে দেয় ৷ তার জন্মভূমি তুরস্ক ৷ তার ঝুলিতে কত শত গল্প যে আছে কেউ তা বলতে পারে না ৷ এখন সে বাংলাদেশে ৷ সে পথশিশু ছেলেমেয়েদের গল্প শোনাতে এসেছে ৷ ঢাকার পথে পথে হেঁটে ক্লান্ত হয়ে রমনা পার্কের গাছের ছায়ায় বসেছে ৷ ভাবছে, ছেলেমেয়েদের সামনে গল্পের ঝুলি খুলে দেবে ৷ সারা কাি কাজ করে ছেলেমেয়েগুলো ঘুমিয়ে পড়ে ৷
ইবু, জয়ন্ত, কাজল, কাসেম ও তারেক -এই পাঁচজন বন্ধুর বিপদে ভরা কাহিনি নিয়ে হল দস্যি কজন। তাদের মধ্যে একজন সায়েন্টিস্ট, একজন কবি, একজন 'খবিশ', একজন 'মাসেল ম্যান' আর একজন এসেছে আমেরিকা থেকে। আমেরিকার তারেক এর সাথে পরিছয় হয়া ছিল একটা বিপদের মত, বন্ধুত্ব হওয়ার পর এক মেয়েকে কিডন্যাপ থেকে বাঁচাতে গিয়ে পরে আরেক বিপদে, সেখান থেকে কোনোভাবে বেঁচে আসলে বাসায় সবার বিপদ নেমে আসে। পরে সুন্দরবন গিয়ে পরে আরেক বিপদে! (কীভাবে আর কেন যায় বই পরে জেনে নিও)। পুরো বইটা এরকম এদ্ভেঞ্চারে ভরা, যারা পড়বে তাদের মনে হবে তারা সরাসরি ওই ঘটনায় হাজির। আমার মতে কিশোর উপন্যাস গুলোর মধ্যে এই বইটাই বেস্ট।
জেনারেল রোকী অনেক চেষ্টা করেও ই-ফোর্স যোদ্ধা সোমোকে হত্যা করতে পারে নি। বন্ধুদের নিয়ে সোমো পৌঁছে গেছে কিজার ল্যাবে। পৃথিবী ধ্বংসের যাবতীয় তোড়জোড় চলছে এখানে। ল্যাবের ভাইরাস মিসাইলের গুদাম তারা বোমা মেরে ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হলেও ধরা পড়ে গেল কিজার হাতে। ডন, রব আর পাহাড়ের জায়গা হলো রোকীর চিড়িয়াখানায়। সোমো বন্দি হলো ড. জরের ভয়ঙ্কর ল্যাবে। সে কি পারবে মুক্ত হয়ে তার মিশন শেষ করতে?
বাবা সরকারী চাকুরে হবার কারণে বিভিন্ন এলাকায় ঘোরার অভিজ্ঞতা হয়েছে জাফর ইকবাল এর। সেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এলাকায় পশু এবং পাখি নিয়ে তার বিভিন্ন অভিজ্ঞতা তিনি বনর্না করেছেন এই বইয়ে। তার বিভিন্ন বইয়ে বিভিন্ন পশু চরিত্র এসেছে, সেগুলোর অভিজ্ঞতা যে তিনি এই সব ঘটনা থেকেই পেয়েছেন, তা বলেই দেয়া যায়। তিনি হুমায়ুন আহমেদ এর মত করে ঘটা করে তার ছেলে বেলার স্মৃতি নিয়ে আসেননি, আসলে হুমায়ুন আহমেদই যা বলার বলে দিয়েছেন, বাকি ভাইবোনদের জন্য তেমন কিছু বাকি রাখেননি!! তার এই বইটি পড়ে আমি অনেক সময় আক্ষেপ করেছি, এই পশুগুলোকে যদি আমি পুষতে পারতাম!!
একদিন বিকালবেলা নন্দিনী, অন্তি আর মাইকেল সাদিবদের বাসায় পেল । গিয়ে দেখে সাদিব জুডো পরে তার বিছানার উপর ইাঁটছে । নন্দিনী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, “সাদিব তুমি জুতো পরে বিছানার উপর হাঁটছ কেন?” সাদিব বলল, “এগুলো নূতন জুতো ৷ এই জুতো পরে মাটিতে হাঁটলে জুতো ময়লা হয়ে যাবে তাই আমি বিছানার উপর হাঁটছি ৷” মাইকেল বলল, “কিন্তু জুতো পরে মাটির উপরেই তো হাঁটতে হয় ৷ সেজন্যেই তো সবইি জুতো পরে ৷” সাদিব বলল, “আমি সেটা জানি । আমি কালকে এই জুতো পরে বাইরে বের হব ৷ শুধু নূতন জুতো না আমি তার সাথে নূতন সার্ট আর নূতন প্যান্টও পরব ৷ কালকে সবকিছু নূতন পরতে হবে ।”
জোনাকি মানে ওখানে গাছ । গাছে আশেপাশেই জোনাকি ঘোরে। আর ঝোপেঝাড়ে ঘোরে জোনাকি। ওখানে অনেক জোনাকি। ওই যে কাছে, আবার একটু দূরে, আবার অনেক দূরে। তার মানে অনেক গাছ। অনেক গাছ একসঙ্গে থাকলে কী বলে? মনে পড়ছে না!
ও এবার অন্যদিকে মাথা ঘোরাল। আবার মাথাটা টনটন করে উঠল। ওদিকেও অনেক গাছে অনেক জোনাকি । গাছের মাথা আকাশে মিশে গেছে, দুটোই এত কালো। আকাশে তারা এক জায়গায় থেমে জ্বলজ্বল করছে, গাছে জোনাকি ঘুরে ঘুরে জ্বলজ্বল করছে।
মানুষ আগে ভাবত যে পাহাড়ে থাকে দেবতা আর দৈত্য ৷ এমন ভাবার কারণ পাহাড়ের অতিকায় আয়তন আর দুর্গম বলে সেখানে না যেতে পারা ৷ তারা ভাবত গোটা পাহাড়টা বুঝি নেমে এসেছে আকাশ থেকে । আজও কোনও কোনও দেশে দেবতার পুজাে দেওয়ার জন্যে মানুষ পাহাড়ে যায় সমস্ত কষ্ট উপেক্ষা করে৷ যেমন জাপানে প্রতি বছর প্রায় দু’লক্ষ মানুষ ফুজিয়ামায় যায় ৷
বিজ্ঞানের উন্নতি ও নানা আবিষ্কারের ফলে আজ আমাদের কত সুবিধাই না হয়েছে। আমরা ট্রেনে চেপে হুস করে অল্প সময়ের মধ্যে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিতে পারছি। আকাশ পথে প্লেনে চেপে হিল্লি-দিল্লি, লন্ডন-প্যারিস ঘুরে বেড়ানোও আজ কত সহজ। আমরা প্রিয়জনের সঙ্গে টেলিফোনে মুহুর্তের মধ্যে সুখ-দুঃখের কথা বলছি, বাড়ির সকলের সঙ্গে আনন্দ-কোলাহল করে রেডিও-টিভি-র প্রোগ্রাম দেখছি। দারুণ গ্ৰীষ্মে ফ্রিজ খুলে আইসক্রিম খেতে খেতে ফ্যানের সুইচটা অন্য করতেই— আঃ, তখন কী আরাম অথবা এয়ার কন্ডিসনড় মেশিনটা চালিয়ে দিতে পারলে তো আর কোনও কথাই নেই। ঘরের মধ্যেই তখন কী দারুণ হিমশীতল পরিবেশ— ভারী মজার ব্যাপার, তাই না ? আবার ঠাণ্ডা লেগে সর্দি-কাশি-জ্বর হয়েছে, ডাক্তারবাবুর কাছে যাওয়া মাত্রই উনি তক্ষুনি ওষুধ লিখে দেবেন। মাত্র কয়েকটা ট্যাবলেট মুখে দিলেই হােল, আর কথাটি নেই, কয়েক দিনের মধ্যেই একেবারে চাঙা হয়ে তুমি মাঠে ফুটবল অথবা ক্রিকেট খেলতে নেমে পড়বে। একবিংশ শতাব্দীর দ্বারপ্রাস্তে এসে আজ আমাদের বিজ্ঞানের এই আবিষ্কারগুলো কত সহজ ও স্বাভাবিক বলে - মনে হয় । কিন্তু সত্যি সত্যি তো আর ব্যাপারটা তত সহজ ছিল না
আর্ট কলেজ থেকে পাস করার পর শিল্পীজীবন শুরু সিনেমার হোর্ডিং, স্নো-পাউডার-ক্রিমের লেবেল ডিজাইন করে।
শুকতারা পত্রিকায় অলংকরণ-শিল্পী হিসেবে কর্মজীবন শুরু গত শতকের পঞ্চাশের দশকে। কমিকস অনুরাগী ক্ষীরোদচন্দ্র মজুমদারের অনুরোধে প্রথমে জন্ম নিল হাঁদা-ভোঁদার কাণ্ডকারখানা। এরপর শুকতারা পত্রিকাতেই এল বঁটুল দি গ্রেট”।
ষাটের দশকের শেষভাগে কিশোর ভারতী পত্রিকার শুরুর সময়ে প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক দীনেশচন্দ্ৰ চট্টোপাধ্যায়ের উৎসাহে এল আরেকজোড়া মূর্তিমান ‘নিন্টে আর ফন্টে’। পরবর্তীকালে কেল্টুদা ও সুপারের আবির্ভাবে নন্টে-ফন্টের ছবিতে-গল্প হয়ে ওঠে। আরও জমজমাট। নন্টে-ফন্টের সেই পথ চলা আজও অবিরাম।
এ ছাড়াও বহু অলংকরণ ও অন্যান্য কমিকস একেছেন ক্লান্তিহীন এই প্রবাদপ্রতিম শিল্পী।
সন্ধ্যেবেলা ছোট্ট খোকা বায়না ধরে তার মায়ের কাছে........ মা, এবার গল্প বলো.....
গল্পের কথা শুনে অমনি আনন্দে ভরে উঠে মায়ের মন । ছোট্ট খোকাকে আরো ...অারো কাছে টেনে নিয়ে সুরু করেন গল্প... রূপ কথার গল্প হাসি রাজারানীর গল্প-
ছোট্ট খোকা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে তার মায়ের মুখের দিকে ... গল্প শুনতে শুনতে তার মন চলে যায় তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে---
সবাই জানেন রবীন্দ্রনাথ তার যৌবনবয়সে শিলাইদহ সাহাজাদপুর পরিসর পূর্ববঙ্গের এমনি সব বিভিন্ন অঞ্চলে দীর্ঘকাল ভ্রমন করেছিলেন। এইমাত্র তিনি যে চিঠিপত্র লিখেছিলেন সেগুলি ‘ছিন্নপত্র’ নামে সংকলিত হয়েছে। জমিদারী দেখাশোনার কাজে অবনীন্দ্রনাথরা খুব কম বারই সাহাজাদপুর। জমিদারী দেখাশোনার কাজে অবনীন্দ্রনাথরা খুব কম বারই সাহাজাদপুর গিয়েছিলেন।
আজ এক বৎসর কাল ধরিয়া অদ্ভূত কাগু হইতেছে । গত বারোটি অমাবস্যার রাত্রে বারোজন লোক অদৃশ্য হইয়াছে ৷ প্রতি দুর্ঘটনার রাত্রেই একটা আশ্চর্য বিষয় লক্ষ করা গিয়াছে ৷ মানসপুর সুন্দরবনের কাছাকাছি হইলেও তাহার ভিতরে এতদিন ব্যাঘের উৎপাত বড় একটা ছিল না ৷ কিন্তু দুর্ঘটনার আগেেই ঘটনান্থলের চারিদিকে ঘন-ঘন ব্যাঘের চিৎকার শোনা যায় ৷ ঠিক অমাবস্যার রাত্রি ছাড়া আর কোনওদিনই এই অদ্ভুত ব্যাঘ্নের সাড়া পাওয়া যায় না । এ-ব্যাঘ্র যে কোথা হইতে আসে এবং কোথায় অদৃশ্য হয় কেহই তা জানে না।
হুমায়ূন আহমেদ এর রচনার চমৎকারিত্ব ধরা পড়েছে তার ছোট গল্পে- সে বড়দের কিংবা ছোটদের যাই হোক। এজন্যেই বড়-ছোট সকলের কাছেই তার রচিত শিশুসাহিত্য সমান জনপ্রিয়।
সূচিপত্র
* তিনি ও সে
* বোকাভূত
* মিরখাইয়ের অটোগ্রাফ
* রুঁরুঁর গল্প
* মোবারক হোসেনের মহাবিপদ
* একটি ভয়ংকর অভিযানের গল্প
* ভূত মন্ত্র
* পানি-রহস্য
* কানী ডাইনী
* রানী কলাবতী
* বোকা দৈত্য
* মিতুর অসুখ
* আলাউদ্দিনের চেরাগ
* বনের রাজা
* হলুদ পরী
* নীল হাতী
* একটি মামদো ভূতের গল্প
* আকাশপরী
* পরীর মেয়ে মেঘবতী
* চেরাগের দৈত্য এবং বাবলু
* গোবর বাবু
* নিউটনের ভুল সূত্র
* নিমধ্যমা
* বড়মামা এবং রাজকুমারী সুবর্ণ রেখা
* লোকটি
* জাদুকর
* এংগা, বেংগা, চেংগা
* রাজার কুমার নিনিত
* কাকারু
হাসি-মজা-ভৌতিক-রহস্য এমন একডজন
নানাস্বাদের ছোটদের গল্প।
প্রতিটি গল্পই টাটকা-তাজা, এর আগে কোনও
বইয়ে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। সঙ্গে ফাউ-- সুস্বাদু
স্মৃতিচারনণ-- আার ছোটবেলা।
‘ছোটদের বারো রকম’ অকালপ্রয়াত প্রিয়
সাহিত্যিক সুচিত্রা ভট্টাচার্যের
লেখা ছোটদের শেষ গল্পগ্রন্থ।
নিষাদের বাবার কথা শেষ হওয়ার আগেই।নিষাদের মা স্পষ্ট গুনলেন- খলবল হাসির শব্দ। একজন না, কয়েকজন হাসছে। তিনি বলছেন, তুমি কি কোনো হাসির শব্দ শুনেছ?
নিষাদের বাবা বললেন, না তো।
আমি কিন্তু স্পষ্ট শুনেছি।
কারা হাসছে? এংগা, বেংগা , চেংগা?
নিষাদের মা বললেন, তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি খুব মজা পাচ্ছ ? মজা পাওয়ার মতো কিছু কি ঘটেছে ?
হ্যাঁ ঘটেছে। শুনতে চাও ?
চাই।
নিষাদের বাবা শোয়া থেকে উঠে বসলেন। মজা পাওয়ার মতো কী ঘটেছে তা মনে হয় বলবেন। তার আগেই নিষাদ ডাকল, মা শুনে যাও।
তাড়াতাড়ি এসো।
তিনি ছেলের পাশে এসে দাঁড়ালেন। নিষাদ বলল, মা দেখো এরা তোমার সব খাবার খেয়ে ফেলেছে। নিষাদের মা দেখলেন, টেবিলের নিচে রাখা থালা শূন্য। তিনি একবার থালার দিকে তাকাচ্ছেন, একবার ছেলের দিকে তাকাচ্ছেন।তাঁর কোনো হিসাবই মিলছে না।
জন্মদিনের শুরুটা হল খুব সুন্দর। ভোরবেলা থেকে সবাই টেলিফোন করছে-হ্যাপি বার্থডে সুমি। শুভ জন্মদিন সুমি। জন্মদিনের শুভেচ্ছা নাও সুমি।
একেবার টেলিফোন আসে আর কী যে ভালো লাগে সুমির! বিকেল থেকেই খালা এবং ফুপুরা আসতে শুরু করলেন। বাড়ি ভর্তি হয়ে গেল মানুষে। কেক কাটা হলো। জন্মদিনের গান গাওয়া গলো। তারপর শুরু হলো জন্মদিনের উপহারের প্যাকেট খোলার পালা।
সুমির বাবা সুন্দর কাগজে মোড়া একটা প্যাকেট দিয়ে বললেন, ‘তোমার হলুদ পরী বাজারে কোথাও খুঁজে পাইনি, তার বদলে নিয়ে এসেছি রিমোট কনট্রোল মোটর কার’।
সুমি বলল, ‘আমি তো সত্যিকারের পরী চেয়েছি।’
‘সত্যিকারের পরী মানে?’
‘যে পরী আকাশে উড়তে পারে। কথা বলতে পারে। গান গাইতে পারে। নাচতে পারে।’